শিরোনাম
◈ সিএমএইচে চিকিৎসাধীন মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটি লাইফ সাপোর্টে ◈ রাজধানীসহ সারাদেশে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে র‌্যাব ◈ কাফির বাড়ি পোড়ানোয় দুই পরিকল্পনাকারী গ্রেপ্তার, জানা গেল তাদের পরিচয় ◈ কেম্যান আইল্যান্ডস ও পাঁচ দেশে শেখ হাসিনার সম্পদের সন্ধান মিলেছে ◈ আইপিএল থেকে সরে দাঁড়িয়ে নিষেধাজ্ঞার মুখে ইংল্যান্ডের হ্যারি ব্রুক ◈ ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ী, তাই আমি তাকে বলি: আসুন, আমাদের সঙ্গে চুক্তি করুন, গার্ডিয়ানকে ড. ইউনূস ◈ রোজার ঈদে এবার পাওয়া যাবে না নতুন টাকা ◈ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়েজক হয়েও পুরস্কার বিতরণীর মঞ্চে পাকিস্তানের প্রতিনিধি ছিলো না ◈ খেলোয়াড়দের বছরে বেতনবাবদ পিএসজির ব্যয় ৮ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা  ◈ অপরাধে জড়াচ্ছে সমন্বয়করা, ভুয়া সমন্বয়ক পরিচয়ে অপরাধ করছে অনেকে

প্রকাশিত : ২৬ জুলাই, ২০২৪, ০৬:০৮ বিকাল
আপডেট : ০৮ মার্চ, ২০২৫, ০৯:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছেলেকে ধরে তুলতে গিয়ে বুকের রক্ত হিম হয়ে যায় আবুল হাসানের

ফরিদপুর প্রতিনিধি: কোটা আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর একটি ভবনের ৮ তলার বারান্দায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শিশু আহাদের আত্মার শান্তি কামনায় তার গ্রামের বাড়ী ফরিদপুরের ভাঙ্গার বিভিন্ন মসজিদ ও এতিমখানায় দোয়া করা হয়েছে। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই) বাদ জুম্মা ভাঙ্গার স্থানীয় পুখুরিয়া মুন্সিবাড়ী মাদ্রসা ও এতিমখানা, ব্রাম্মনকান্দা মাদ্রসা ও এতিমখানা, হরুপদিয়া মাদ্রসা ও এতিমখানা এবং পুখুরিয়া রেল স্টেশন জামে মসজিদ ও পুখুরিয়া গ্রামের ৮টি মসজিদে নিস্পাপ শিশু আহাদের জন্য জান্নাত প্রার্থনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়েছে।’

এর আগে গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেল চারটার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকার একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। 

১১ তলা বাড়িটির আটতলায় থাকেন আবুল হাসান, তাঁর স্ত্রী সুমি আক্তার, বড় ছেলে দিহান মাতুব্বর (১১) ও ছোট ছেলে আহাদ (৪)। আয়কর বিভাগের উচ্চমান সহকারী আবুল হাসানের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া গ্রামে। 

নিহত আহাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত শুক্রবার বিকেলে নিজ বাসার বারান্দায় এক পাশে বাবা, আরেক পাশে মা, মাঝে দাঁড়িয়ে ছিল ছোট্ট আবদুল আহাদ। বাসার বারান্দায় দাঁড়ানো তিন জোড়া চোখ নিচের দিকে তাকিয়ে। বাসার নিচে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ চলছে। আচমকা মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে আহাদ।

বাবা ভেবেছিলেন ছেলে মাথা ঘুরে পড়ে গেছে। ছেলেকে ধরে তুলতে গিয়ে বুকের রক্ত হিম হয়ে যায় আবুল হাসানের। ছেলেটার চোখ, মুখ, মাথা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। গুলিটা ডান চোখে বিদ্ধ হয়ে মাথার ভেতরেই আটকে গেছে।

রক্তাক্ত ছেলেকে কোলে নিয়ে দ্রুত নিচে নেমে আসেন হাসান। অস্ত্রধারীরা এগিয়ে এসে তাঁকে বাধা দেয়। পরে ছেলের রক্তাক্ত অবস্থা দেখে সরে দাঁড়ায়। আহাদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। 

কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা বলেন, গুলি মাথার মধ্যে আছে। কিন্তু কোন অবস্থানে আছে, তা বোঝার জন্য সিটিস্ক্যান করতে হবে। কিন্তু সিটিস্ক্যান করতে নেওয়া হলে আইসিইউর যন্ত্রপাতি খুলে ফেলতে হবে। এতে শিশুটির মৃত্যুও হতে পারে। তবে সিটিস্ক্যান করাও জরুরি।

আবুল হাসান বলেন, একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শিকার হয়ে আমার ছেলে চলে গেল। এ নিয়ে আমি আর কী বলব! চেয়েছিলাম, পোস্টমর্টেম না করতে। অতটুকু শরীর যাতে আর কাটাছেঁড়া করা না হয়। কিন্তু আমাদের সে চেষ্টাও সফল হয়নি।

নিহত শিশু আহাদের চাচা মোখলেসুর রহমান জানান, গুলিবিদ্ধ হবার পরের দিন শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আহাদকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে রোববার বেলা তিনটার দিকে আহাদের মরদেহটি তাঁরা বুঝে পান। তারপর অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গ্রামের বাড়ি ভাঙ্গার পুখুরিয়া গ্রামে চলে যান। বাদ মাগরিব পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আহাদকে।

বাড়িতে আগে পারিবারিক কবরস্থান ছিল না। আহাদকে দাফনের মধ্য দিয়েই কবরস্থানটির যাত্রা শুরু হলো, আবেগভরা কণ্ঠে কথাগুলো বললেন মোখলেসুর রহমান।

প্রতিনিধি/একে

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়