ইমন মাহমুদ, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ): [২] কিশোরগঞ্জের ভৈরবে স্ত্রীকে দিয়ে ব্লেকমেইল করে ঘুষ নেয়ার অপরাধে অষ্টগ্রাম থানার এএসআই আব্দুল্লাহ আল মোসাব্বিরকে জেলা পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।
[৩] আজ শনিবার (১৩ জুলাই) কিশোরগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন ক্রাইম) মো. আল আমিন হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এএসআই মোসাব্বির জেলার অষ্টগ্রাম থানায় কর্মরত রয়েছেন। এর আগে তিনি দেড় বছর ভৈরব থানায় কর্মরত ছিলেন। সেই সুবাধে উপজেলার শ্রীনগর ডিউটি করতে গেলে চাঁদনী আক্তার নামে এক নারীর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। পরে তাকে বিয়ে করতেও বাধ্য হয়। সেই সুবাধে সে প্রায়ই ভৈরবের বিভিন্ন ক্রাইম পয়েন্টে এসে ডিবির পরিচয় নিয়ে অপকর্ম করে চলে যায়। এমনই এক ঘটনা ঘটে সাইপ্রাস প্রবাসী বাচ্চু তালুকদারের সাথে। তিনি উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা।
[৪.১] অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৩০ মে বিকেলে প্রবাসী বাচ্চু তালুকদারের দুই বন্ধু সালাহ উদ্দিন ও শফিক মিয়া এএসআই মোসাব্বিরের যোগসাজশে বিকাল ৩টায় পৌর শহরের চন্ডিবের কামাল সরকারের বাড়ির পাশে শফিক মিয়ার আইসক্রিম ফ্যাক্টরীতে নিয়ে যায়। নেয়ার পর এএসআই মোসাব্বির ডিবি পরিচয়ে তার সহকর্মীর মাধ্যমে প্রবাসী বাচ্চু তালুকদারকে হাতকড়া পড়ান। এ সময় তারা তাকে মাদক সেবী হিসেবে দাবী করেন এবং তাদের সাথে থাকা এএসআই মোসাব্বিরের ২য় স্ত্রী চাঁদনী বেগমকে তার প্রেমিকা হিসেবে দাবী করেন।
[৪.২] এ ঘটনায় রফাদফা করতে প্রবাসী বাচ্চু তালুকদারের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। ঘটনাস্থল থেকে বাচ্চু তালুকদার বের হয়ে ভৈরব থানার এসআই সাইদুর রহমানকে মৌখিক অভিযোগ দেন। পরে ওই এএসআই মোসাব্বিরের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা ফেরত নিয়ে দেন। বাকী ৪৫ হাজার টাকা চাইলে এএসআই মোসাব্বির প্রবাসী বাচ্চু তালুকদারকে ভয়ভীতি দেখান।
[৫] এ ঘটনায় ৯ জুলাই বাচ্চু তালুকদার কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বরাবর এএসআই মোসাব্বির ও তার দুই বন্ধু শফিক এবং সালাহ উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
[৬] এ বিষয়ে অভিযোগকারী ব্যক্তি বাচ্চু তালুকদার বলেন, সাইপ্রাস থেকে আমি অনেক টাকা নষ্ট করে দেশে এসেছি । ইদানিং ৪০ লক্ষ টাকার একটি সম্পত্তি বিক্রি করেছি। এই টাকার লোভে আমার দুই বন্ধু এএসআই মোসাব্বির ও দ্বিতীয় স্ত্রী চাঁদনী বেগমের মাধ্যমে আমাকে বেকমেইলিং করেছে। আমার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে ২৫ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে। বাকী টাকা চাইলে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেয়। যার প্রেক্ষিতে আমি অভিযোগ করেছি।
[৭] এ ঘটনার বিষয়ে জানতে সাংবাদিকরা অভিযুক্ত এএসআই মোসাব্বিরকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেনি। এমনকি তাকে ক্ষুদে বার্তা দিলে তিনি কোন উত্তর দেননি।
[৮] তবে এ বিষয়ে ভৈরব থানার এসআই সাইদুর রহমান সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার বিষয়টি আমি জানতে পেরে এএসআই মোসাব্বিরের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা ফেরত নিয়ে দিয়েছি।
[৯] কিশোরগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন ক্রাইম) মো. আল আমিন হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই অষ্টগ্রাম থানা থেকে এএসআই মোসাব্বিরকে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। সম্পাদনা: এ আর শাকিল
প্রতিনিধি/এআরএস
আপনার মতামত লিখুন :