সোহাগ হাসান, সিরাজগঞ্জ: [২] যমুনাসহ অভ্যন্তরীর্ণ নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ কমেনি এখনো। জেলার ৫টি উপজেলার ১৮ হাজার পরিবারের মোট ৮৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন। এতে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষা ছাড়াও গবাদি পশুপাখি রাখার স্থান ও গো-খাদ্য, স্যানিটেশনসহ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
[৩] সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. হারুন-অর-রশিদ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) ও আইসিটি রোজিনা আক্তার বলেন, পাঁচ উপজেলার ৭৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ৬২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা মিলে ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
[৪] এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য, ভিটামিন ট্যাবলেট, পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট ও নিরাপদ পানি বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে প্রশাসন ও দুর্যোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
[৫] মঙ্গলবার (৯জুলাই) দেখা যায়, সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী,পূর্ব মোহনপুর, ছাতিয়ানতলী, কাওয়াকোলাসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে বন্যাকবলিতদের দুর্ভোগের
চরমে। চরাঞ্চলের অনেকেই পানিবন্দি হয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। বন্যার পানি উঠে তাঁত কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে রয়েছেন অনেক শ্রমিক। বন্যার পানি ঢুকে পানি রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। অনেকেই বাড়ি ছেড়ে আশপাশের গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকেই বাড়ির মধ্যে হাঁটু পানিতেই বসবাস করছেন।
[৬] সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার জানান, যমুনার পানি কমতে শুরু করেছে। আগামী তিন-চারদিন পানি কমবে। এরপর আবারও পানি বাড়তে পারে। এতে ভারী বন্যার সম্ভাবনা নেই। এছাড়াও ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোতে ভাঙন রোধে কাজ করা হচ্ছে।
[৭] জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর বলেন, জেলার ৬ হাজার ৪৯৭ হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। এসব জমির পাট, তিল, কলা ও মরিচ এখন পানির নিচে রয়েছে।
[৮] জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের ১৮ হাজার ৩৮৫টি পরিবারের ৮৩ হাজার ১৫২ জন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের জন্য ৯৫ মেট্রিক টন চাল, পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিনিধি/একে
আপনার মতামত লিখুন :