শিরোনাম
◈ বাংলা ব্লকেডের সমর্থনে ইবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ ◈ কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটা আদালতের বিষয়  ◈ কোটা আদালতের এখতিয়ার, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে সরকার: ওবায়দুল কাদের ◈ আজ সারাদেশে কোটা বাতিলের দাবিতে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ◈ রথযাত্রা ও কোটা বাতিলের আন্দোলন: সময় নিয়ে বের হতে বললো পুলিশ ◈ ‘পানি বণ্টন চুক্তিতে দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে’ ◈ চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার চীন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী  ◈ রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় ট্রেনে কাটা পরে এক ব্যক্তির মৃত্যু ◈ স্বাগতিক জার্মানিকে হারিয়ে সেমিফাইনালে স্পেন ◈ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য এই অনুষ্ঠান: শেখ হাসিনা

প্রকাশিত : ০২ জুলাই, ২০২৪, ০৬:০৪ বিকাল
আপডেট : ০২ জুলাই, ২০২৪, ০৬:০৪ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কী কারণে হালদায় এতো মা মাছ মারা যাচ্ছে, অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি

শাহাদাত হোসেন, রাউজান: দেশের জাতীয় সম্পদ হালদা নদীতে যে হারে মা মাছ মারা যাচ্ছে, তা রক্ষা করা না গেলেই নদীতে মা মাছের প্রজনন কমে যাবে। আগেই হালদা নদীতে উৎসবমুখর পরিবেশে ডিম সংগ্রহ করতো নদীর পাড়ের বাসিন্দারা। চলতি বছরে হালদায় কমেছে ডিম সংগ্রহের পরিমাণ। 

জানা যায়, ২০১৬ সালের পর এ বছর হালদা নদীতে সবচেয়ে কম ডিম দিয়েছে মা মাছ। তবে নমুনা ডিমের চেয়ে একটু পরিমাণে বেশি ছিল। এভাবে হালদায় মা মাছের প্রজনন কমতে থাকলেই দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। 

দেশের অর্থনীতিতে হালদা নদীর যে অবদান রয়েছে, প্রতি বছর এই নদী থেকে যে পরিমাণ নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়, তা থেকে উৎপাদিত রেণু ও পোনা বিক্রি  করা হয়। জাতীয় অর্থনীতিতে হালদা নদী বছরে শত কোটি টাকার অবদান রাখে।

হালদা পাড়ের বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, হালদা নদীতে একসময়ে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতে মৎস্যজীবীরা। হালদা থেকে শিকার করা মাছ বিক্রয় করে জেলে পরিবার সংসার চালাত। ওই সময়ে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুমে প্রচুর পরিমাণ ডিম সংগ্রহ করতো ডিম সংগ্রহকারীরা। হালদা নদীর সাথে সংযুক্ত খালের মুখে সুইচ গেইট নির্মাণ, হালদার কয়েকটি বাঁক কেটে ফেলায় হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার পরিমাণ কমেছে, মরছে মা মাছ। 

গত রোববার (৩০ জুন) বেলা ১১টায় নদীর রাউজান অংশের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের আজিমের ঘাট এলাকায় থেকে প্রায় ১৯ কেজি ৩০০ গ্রামের মরা কাতলা উদ্ধার করে এলাকার লোকজন। এক সপ্তাহে হালদায় একটি ডলফিন ও পাঁচটি মা মাছ মরে ভেসে ওঠে। তবে গত এক সপ্তাহে হালদায় একের পর এক মা মাছ ও ডলফিন মারা যাওয়ার ঘটনা নিয়ে গঠন করা হয়েছে দু'টি তদন্ত কমিটি। একটি কমিটি মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে। অপরটি পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কমিটি দুইটি গঠন করা হয়েছে। জেলা মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে করা কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন প্রদান করতে বলা হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, হালদায় একের পর এক মা মাছ ও ডলফিন কী কারণে মারা যাচ্ছে, সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।  হালদা নদীকে দূষন মুক্ত রাখার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আরও কারণ থাকতে পারে। বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে কি না, ব্যাকটেরিয়াল কোনো ডিজিজের কারণে শ্বাসকষ্টে মাছের মৃত্যু হচ্ছে কি না কিংবা বয়সের কারণে সেগুলো মারা যাচ্ছে কিনা এসব বিষয় কমিটি অনুসন্ধান করে দেখবে। 

গঠিত পরিবেশ অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সিনিয়র রিসার্চ কর্মকর্তা মো. আশরাফ উদ্দিন, হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান ও অগ্যজাই মারমা গতকাল সোমবার হালদা নদীর বিভিন্ন সংযোগ খালের উৎসস্থল ও খাল পরিদর্শন করেন। তারা কুয়াইশ খাল, খন্দকিয়া খাল, কৃষ্ণখালী, কাটাখালী ও বুড়িশ্চরে অবস্থিত খালগুলো পরিদর্শন করে খালের পানির নমুনা সংগ্রহ করেন। 

এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটিতে থাকা পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের রিসার্চ অফিসার আশরাফ উদ্দিন বলেন, তদন্ত সম্পন্ন হয়নি, ১৫ তারিখ পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ বা তার পরের সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন হলে বলা যাবে কী কারনে মা মাছ মৃত্যু হয়েছে। 

হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, নদী দূষণের বর্তমান পরিবেশ থেকে স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনার জন্য হালদার শাখাখালে যেসকল কলকারখানার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে সেসব কারখানার বিরুদ্ধে চিহ্নিতপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দিতে হবে, না হলে হালদার জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে।

প্রতিনিধি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়