সোলায়মান মোহাম্মদ, শ্রীপুর (গাজীপুর): [২] গাজীপুরের শ্রীপুরে নৌকা ভ্রমণ শেষে ফেরার পথে নৌকায় ডাকাতদের হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছেন কাওরাইদের কয়েকজন ব্যবসায়ী। এ সময় তাদের হামলায় পোল্ট্রি ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান (৩০) ক্ষিরু নদীতে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়। 

[৩] সোমবার (০১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টায় শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের বটতলা (ক্ষিরু নদী) এলাকা থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

[৪] রবিবার (৩০ জুন) আনুমানিক রাত ৮টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের বটতলা এলাকায় ক্ষিরু নদীতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নুরুজ্জামান (৩০) উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাব গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে।

[৫] পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হামলাকারী ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন কাওরাইদ ইউনিয়নের বেলদিয়া গ্রামের তমিজ উদ্দিনের ছেলে মাজাহার (২৮), পশ্চিম সোনাব গ্রামের জামাল উদ্দিন ওরফে মনু মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৭), কাওরাইদ এলাকার ইব্রাহীম (৩৩), মৃত রশিদ ডাক্তারের ছেলে দিপু (৪০), কাওরাইদ (পশ্চিমপাড়া) এলাকার খোকন মিয়ার ছেলে আকরাম হোসেন (২৫), রফিজ উদ্দিনের ছেলে সবুজ (২৮), কাওরাইদ (বটতলা) এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে সাব্বির (২৩) এবং কাওরাইদ (মৃধাপাড়া) এলাকার নাজিম উদ্দিনসহ (২৮) অজ্ঞাত তাদের ৭-৮ জন। 

[৬] স্থানীয়রা জানান, তাদের নামে পূর্বে থানায় একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে। এলাকায় তাদেরকে ডাকাত হিসেবেই চিনে।

[৭] নৌকা ভ্রমনে থাকা সুমন জানান, রবিবার (৩০ জুন) সকাল ১০ টায় কাওরাইদের বলদীঘাট এলাকার (ক্ষিরু নদী) থেকে ৩০-৩৫ জন ব্যবসায়ী ট্রলারযোগে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ভ্রমণে তাদের সাথে চার জন নৃত্য শিল্পীও ছিল। সুমন এবং তার এক বন্ধু দুপুরে ১ টার দিকে ত্রিমোহনী থেকে তাদের সাথে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে নৌকায় উঠে। দিনভর তারা ময়মনসিংহ জেলার পাগলা, গফরগাঁও ও নরসিংদী জেলার ঘোড়াশাল এলাকায় শীতলক্ষ্যা ও ব্রহ্মপুত্র নদীতে ভ্রমন শেষে রাত ৮টার দিকে কাওরাইদ ইউনিয়নের বটতলা (ক্ষিরু নদী) এলাকায় পৌঁছলে ১০-১৫ জন ডাকাত লোহার রড, কাঠের ব্যাট, হকিস্টিক ও লাঠি সোঠা নিয়ে ট্রলারে হামলা করে তাদেরকে এলোপাথারী মারধর শুরু করে। 

[৮] হামলার পর তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। তাদের হামলা ও মারধরে ২০-২৫ জন নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রাণে রক্ষা পায়। এসময় তাদের আমন্ত্রিত নৃত্য শিল্পীরাও যে যার মতো পালিয়ে যেতে পারে। নৃত্য শিল্পীদেরকে হামলাকারীরা মারধর করছে কিনা তা তিনি বলতে পারেননি। হামলাকারীদের ভয়ে ট্রলার যাত্রী নুরুজ্জামান নদীতে ঝাঁপ দিলেও সে উঠতে না পেরে নিখোঁজ হয়।

[৯] নিহতের ছোট ভাই আব্দুল হামিদ বলেন, রবিবার সকাল ৮টার দিকে নৌকা ভ্রমণে যাওয়ার কথা বলে বাড়ী থেকে বের হয় ভাই (নূরুজ্জামান)। রাতে অনেকে বাড়ী ফিরে আসলেও আমার ভাই না আসায় জানতে পারি তাদের ট্রলারে ডাকাতেরা হামলা করেছে। সারা রাত খোঁজাখুজি করেও ভাইয়ের সন্ধান পাইনি। সকালে ক্ষিরু নদীর বটতলা এলাকায় হাঁটু বের হয়ে থাকতে দেখি। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করি। খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।

[১০] শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা জানান, নিহত নুরুজ্জামানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সম্পাদনা: এ আর শাকিল

প্রতিনিধি/এআরএস