শিরোনাম
◈ প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ওবায়দুল কাদের ◈ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে ২ জনের মৃত্যু ◈ যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাস বিরোধী দল বাংলাদেশে কাজ করছে ◈ গাজায় গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘জড়িত থাকার অকাট্য’প্রমাণ রয়েছে: সাবেক ১২ কর্মকর্তা ◈ ঘুষের মামলায় আদালতে রায় পরিবর্তনের আবেদন ট্রাম্পের ◈ ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়নে এডিবির সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ◈ টেকনাফ সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে রোহিঙ্গা যুবক নিহত ◈ খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ: ডা. জাহিদ ◈ এইচএসসির দ্বিতীয় দিনে আট বোর্ডে অনুপস্থিত ১০ হাজার ৪৪০ পরীক্ষার্থী ◈ টানা ভারী বর্ষণে সাজেকে আটকা ৭ শতাধিক পর্যটক

প্রকাশিত : ০১ জুলাই, ২০২৪, ০২:৪৩ দুপুর
আপডেট : ০১ জুলাই, ২০২৪, ০২:৪৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঠাঁই হয়নি শ্মশ্মানে, ২ শিশুকে বস্তায় ভরে ভাসিয়ে দেওয়া হলো নদীতে

কিবরিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ: [২] কথায় বলে, মানব ধর্মই মহাধর্ম। কিন্তু এ যেন অমানবিকতার শেষ পর্যায়। শেষকৃত্যের জন্য একটু মাটি জুটলো না পানিতে ডুবে মারা যাওয়া দুই শিশুর। গ্রাম্য মাতব্বরদের বাধায় শ্মশ্মানে সমাধি দিতে না পেরে বস্তায় ভরে ভাসিয়ে দেওয়া হলো নদীতে।

[৩] ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামে।

[৪] গত শনিবার ফুটবল খেলা শেষে পুকুরে গোসল করতে নেমে মারা যায় ওই গ্রামের দুই শিশু প্রলয় দাস (৭) ও সূর্য দাস (৬)। সনাতন ধর্মের রীতি অনুযায়ী মরদেহ দাহ করা হয়। তবে শিশুদের বেলায় সমাধি দেওয়ার রীতি রয়েছে।

[৫] রোববার (৩০ জুন) দুপুরে শিশু প্রলয় দাসের মরদেহ শ্মশ্মানে সমাধি দেয় তার পরিবার। বিষয়টি গ্রামের মাতব্বররা জানার পর শিশুটির বাবা গোবিন্দ দাসকে ডেকে এনে শ্মশ্মানে মরদেহ না রাখার নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে সমাধি দেওয়া মরদেহ তুলে পানিতে ফেলে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সন্তানের মরদেহ শ্মশ্মানে রাখতে বাবার শত অনুরোধ আর পায়ে ধরে কান্নাও মন গলাতে পারেনি মাতব্বরদের।

[৬] এক পর্যায়ে গ্রাম্য মাতব্বরদের চাপের মুখে সন্তানের মরদেহ সমাধি থেকে তুলতে বাধ্য হন হতভাগা বাবা। পরে বস্তাবন্দি করে ফেলে দেওয়া হয় কালনী নদীতে। প্রলয়ের এমন পরিণতি দেখে অপর শিশু সূর্য দাসের পরিবারও তার মরদেহ বস্তাবন্দি করে নদীতে ফেলে দেয়।

[৭] শিশু প্রলয় দাসের বাবা গোবিন্দ দাস বলেন, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আমি আমার ছেলেকে পাহাড়পুর মহাশশ্মানের দেয়াল সংলগ্ন মাটিতে সমাধি দেই। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিপেশ দাস ও কোষাধ্যক্ষ অসিত সরকারসহ পঞ্চায়েতের লোকেরা আমাকে ডেকে মরদেহ তুলে নদীতে ভাসিয়ে দিতে বলেন। আমি মরদেহ না তোলার জন্য তাদের হাতে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করলেও তারা আমার কথা শুনেননি। অবশেষে পঞ্চায়েত কমিটির চাপে বাধ্য হয়ে সন্ধ্যায় আমি ছেলের মরদেহ তুলে নদীতে ভাসিয়ে দেই।

[৮] অপর শিশুর বাবা রুবেল দাস বলেন, শশ্মানে গোবিন্দ দাসের ছেলের মরদেহ সমাধিতে বাঁধার বিষয়টি জানার পর বাধ্য হয়ে আমার ছেলে সূর্যের মরদেহ বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দিয়েছি।

[৯] গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিপেশ সরকার বলেন, এটি আমার একার সিদ্ধান্ত না। গ্রাম কমিটির সবার সিদ্ধান্ত ছিল।

[১০] পঞ্চায়েতের কোষাধ্যক্ষ অসিত সরকার বলেন, গ্রামের কমিটির সিদ্ধান্ত হলো শশ্মানের পরিবেশ পরিষ্কার রাখার জন্য পাশে কোনো সমাধি করা যাবে না। এই সিদ্ধান্ত এলাকার সবার জন্য সমান।

[১১] বদলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুসেনজিৎ চৌধুরীর বলেন, বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। ঘটনাটি অমানবিক। শ্মশ্মানতো মানুষের সৎকারের জন্যই। এখানে সমাধিত করা হলে শ্মশ্মানের পরিচ্ছন্নতার বিষয় কেন আসবে?

[১২] আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ডালিম আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি। অভিযোগ পেলে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়