শিরোনাম

প্রকাশিত : ০২ জুন, ২০২২, ১২:২৩ রাত
আপডেট : ০২ জুন, ২০২২, ১০:৪৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

১২ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ‘মিতালী এক্সপ্রেস’

ছবি: সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক: ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ১২ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় পৌঁছেছে মিতালী এক্সপ্রেস। বুধবার (১ জুন) রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে এই আন্তর্জাতিক ট্রেনটি পৌঁছায়। ১২ জনের মধ্যে ৪ জন বাংলাদেশি এবং ৮ জন ভারতীয় নাগরিক।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনের ইমিগ্রেশন পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর মো. আনিছুর রহমান।

এদিকে ট্রেনটি পৌঁছার নির্দিষ্ট সময় ছিল রাত সাড়ে ১০টা। ট্রেনটি ২৫ মিনিট বিলম্বে স্টেশনে পৌঁছায়।

মিতালী এক্সপ্রেসের যাত্রী গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার ভ্রাতৃত্ববোধের নিদর্শন হচ্ছে এই মিতালী এক্সপ্রেস। আমরা ইন্ডিয়া থেকে উঠে এখানে এসেছি। আজকে অনেক কম প্যাসেঞ্জার নিয়ে এসেছে। আমরা দাবি রেখেছিলাম চিলাহাটিতে এবং হলদিবাড়িতে স্টপেজ রাখার। চিলাহাটি ও হলদিবাড়িতে ম্যাক্সিমাম প্যাসেঞ্জার আছেন। এটা দুই দেশের সরকারের ব্যাপার। আমাদের কাছে এই জার্নি খুব ভালো লেগেছে। শুধু মাঝে একটু ডিলে করেছে, এই। তাছাড়া দারুণ।

মিতালী এক্সপ্রেসের সহকারী লোকো মাস্টার ইউসুফ আলী বলেন, এটা আমাদের দেশের মানুষের একটা চাওয়া ছিল উত্তরবঙ্গ দিয়ে ভারতে প্রবেশের। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে দুই দেশের রেলমন্ত্রী এই সুযোগ করে দিয়েছে। মিতালী এক্সপ্রেসের প্রথম দিনের যাত্রায় আমার কাজের সুযোগ হয়েছে এটি আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আজকে আনুষ্ঠানিকতার কারণে একটু দেরি হয়েছে।

এর আগে, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ও ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বুধবার নয়াদিল্লি থেকে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে ট্রেনটির ভার্চুয়ালি ‘ফ্ল্যাগ অফ’ করেন। এর মধ্য দিয়ে ঢাকা ও নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে নতুন একটি আন্তঃদেশীয় ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেসের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়।

ওই সময় বৈঠকে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, আজকের দিনটি উভয় দেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। বৈঠকে তিনি ভারতীয় রেলমন্ত্রীকে লাইন অফ ক্রেডিটের (এল‌ওসি) বিল প্রদান সহজীকরণ, বাংলাদেশ রেলওয়েতে পণ্য ও যাত্রীবাহী ট্রেনের সুবিধার জন্য ২০টি লোকোমোটিভ সরবরাহের অনুরোধ জানান। এছাড়াও মিতালী এক্সপ্রেস সপ্তাহে দুই দিনের পরিবর্তে পাঁচদিন চালানোর অনুরোধ করেন। দেশের কোচ, ইঞ্জিন চালানোর ক্ষেত্রে কম্পিউটার ভিত্তিক ভারতীয় সেন্টার অব রেলওয়ে ইনফরমেশন সিস্টেমের ( সিআরআইএস) সহায়তাও চান তিনি। তখন ভারতের রেলমন্ত্রী এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের মধ্যে ৫১৩ কিলোমিটার যেতে ট্রেনটির সময় লাগবে ৯ ঘণ্টা। এটি একটি ডিজেল ইঞ্জিন দ্বারা পরিচালিত হবে এবং এতে চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কেবিন কোচ ও চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কার থাকবে।

এর আগে, ভারতের উত্তর রেলওয়ের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা (সিপিআরও) গণমাধ্যমকে জানান, ‘মিতালি এক্সপ্রেস’ উত্তর পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে যায় এবং বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পৌঁছাবে। এটি ভারতের দিকের শেষ স্টেশন হলদিবাড়িতে এবং বাংলাদেশের দিকে প্রথম স্টেশন চিলাহাটিতে চালক পরিবর্তনের জন্য ১০ মিনিটের বিরতি দেবে। এছাড়া এটির আর কোনো বিরতি নেই।

সিপিআরও জানান, ট্রেনটি ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সপ্তাহের রবি ও বুধবার এবং ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার চলাচল করবে।

এই যাত্রার জন্য নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন এবং কলকাতা রেলওয়ে স্টেশনের বিদেশি যাত্রী সংরক্ষণ ব্যবস্থা কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে।

এদিকে অন্য দুটি ইন্দো-বাংলাদেশ যাত্রীবাহী ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং বন্ধন এক্সপ্রেস যাদের কার্যক্রম করোনা বিধিনিষেধের কারণে ব্যাহত হয়েছিল। রোববার তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।

২০০৮ সালে যাত্রা শুরু করা মৈত্রী এক্সপ্রেস ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত ভাগ করার পর থেকে দুটি দেশের মধ্যে চালানো প্রথম ট্রেন। বন্ধন এক্সপ্রেস সেই বছরের পরের দিকে যাত্রা শুরু করে।

করোনার কারণে দীর্ঘ ২৬ মাস বন্ধ থাকার পর গত ২৯ মে থেকে দুই দেশের মধ্যে আবার মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল শুরু হয়। 

সূত্র: ঢাকা পোস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়