এম আর আমিন, চট্টগ্রাম: কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সিংহভাগই হয় বন্দর দিয়ে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি কমানো, বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা, শহর যানজটমুক্ত রাখাসহ পর্যটনশিল্প বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নগরীর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং আউটার রিং রোডের যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে সাড়ে ৬শ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্বমানের ইন্টারসেকশন নির্মাণ করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রকল্পটি একনেকের অনুমোদন পেয়েছে। সিডিএ, সিটি কর্পোরেশন, বিভাগের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা বৈঠক করে উক্ত ইন্টারসেকশনের ডিজাইন চূড়ান্ত করেছেন। একই প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম ইপিজেডকেও আউটার রিং রোডের সাথে যুক্ত করা হচ্ছে।
শহরের যানজট নিরসনসহ বেশ কিছু অবকাঠামো উন্নয়নে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ‘চিটাগাং সিটি আউটার রিং রোড’ প্রকল্প হাতে নেয়। ২০১১ সালে নেয়া প্রকল্পটি ইতিমধ্যে ১২ বছর পার করলেও শেষ হয়নি কাজ। এরই মধ্যে সাত দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের, ব্যয় বাড়ানো হয়েছে তিনবার।
নতুন করে চতুর্থ দফায় ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। গত ৬ জুন একনেক সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে নতুন করে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে ৬৪৮ কোটি টাকা। ফলে প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৩ হাজার ৩২২ কোটি টাকায়।
যদিও প্রকল্পটির শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল মাত্র ৮৫৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। চতুর্থ দফায় ব্যয় বাড়ানোর পর প্রকল্পের মেয়াদ হবে আগামী ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।
প্রকল্পে নতুন করে যুক্ত হয়েছে টানেলের মুখে জংশন স্থাপন। টানেলের মুখে যেখানে আউটার রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও বহদ্দারহাট-পতেঙ্গা সড়ক মিলিত হয়েছে সেখানেই হবে জংশন। ওয়ান ওয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য থাকবে দুটি ফ্লাইওভার ও দুটি আন্ডারপাস (মাটির নিচ দিয়ে চলাচলের পথ)। জংশনের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১০ কোটি টাকা।
তাছাড়া পুরো রিং রোড এলাকা এখন আলোকায়নের আওতায় না থাকলেও তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সংশোধনীতে। এলইডি লাইটিং ব্যবস্থা নিশ্চত করা হবে সড়কে। আউটার রিং রোড থেকে ইপিজেডে সরাসরি চলাচলের জন্য স্থাপন করা হবে দুটি ফ্লাইওভার। ইপিজেডে চলাচল করা প্রায় ১২ হাজার গাড়ি সরাসরি আউটারি রিং রোড হয়ে ঢাকার দিকে রওনা হতে পারবে সহজে। ইপিজেড সংযোগের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১২১ কোটি টাকা।
সিডিএর চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামস বলেন, টানেল ইন্টারসেকশন, জমি অধিগ্রহণ, আলোকায়ন ও ইপিজেড কানেকশনের জন্য নতুন করে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত ১৫.২ কিলোমিটারের চার লেনের আউটার রিং রোড, টানেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শতভাগ সুফল পেতে অত্যাধুনিক এই ইন্টারসেকশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও বলেন, টানেল ইন্টারসেকশন, জমি অধিগ্রহণ, আলোকায়ন ও ইপিজেড কানেকশনের জন্য নতুন কাজ যুক্ত হয়েছে। এজন্য ব্যয় বেড়েছে। মোট ৬৪৮ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধির অনুমোদন হয়েছে। ইপিজেডের নিয়মিত যে ১২ হাজার গাড়ি চলাচল করে সেগুলো সরাসরি রিং রোড হয়ে ঢাকায় চলে যেতে পারবে। ওয়ান ওয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থা কনফার্ম করবো। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
প্রতিনিধি/একে
আপনার মতামত লিখুন :