শিরোনাম
◈ প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব হলেন তিথি ও নাইম ◈ ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইবে বাংলাদেশ: জানালেন আইন উপদেষ্টা ◈ জাহাঙ্গীরনগরে ‘গণপিটুনিতে’ সাবেক ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু ঘিরে রহস্য ◈ তমা মির্জার সঙ্গে সম্পর্ক ফাটলের গুঞ্জন, যা বললেন রাফি (ভিডিও) ◈ ‘মারছে, ভাত খাওয়াইছে, এরপর আবার মারছে, ভাত খাওয়াইছে : তোফাজ্জলের মামাতো বোন (ভিডিও) ◈ ঢাবিতে পিটিয়ে যুবক হত্যার ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থী আটক ◈ শামীম ওসমানের পুরোনো ভিডিওটি ভাইরাল : ‘ফিরব কি না জানি না’ ◈ জাদেজা-অশ্বিনের জুটিতে টেস্টের নিয়ন্ত্রণ হারালো বাংলাদেশ ◈ দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, ঘুরতে দেখা গেছে পার্কে : ফিনান্সিয়াল টাইমসের রিপোর্ট ◈ ফের নেতাকর্মীদের জন্য আওয়ামী লীগের জরুরি নির্দেশনা

প্রকাশিত : ১১ অক্টোবর, ২০২২, ০২:১২ দুপুর
আপডেট : ১১ অক্টোবর, ২০২২, ০৪:৩৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অর্থ মন্ত্রণালয় চায় আউটসোর্সিং, রেলওয়ের না

রেলওয়ের স্বাভাবিক সেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা করছেন ডিজি 

আনিস তপন: জনবল সংকটে এমনিতেই কাক্সিক্ষত সেবা দিতে পারছে না বাংলাদেশ রেলওয়ে। তার উপর অর্থ বিভাগের সাম্প্রতিক এক নির্দেশনায় এ অক্ষমতা আরও প্রকট হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। রেলওয়ের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন এ তথ্য।

জানা গেছে, বর্তমানে রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগে মোট মঞ্জুরীকৃত পদ ৪৭ হাজার ৬৩৭টি। এর মধ্যে কর্মরত আছেন ২৪ হাজার ৯৩৩ জন। জনবলের ঘাটতি রয়েছে শতকরা ৪৮ ভাগ। অর্থাৎ অর্ধেক জনবল নিয়ে নিরাপদ, জনপ্রিয়, সাশ্রয়ী এই রেল সেবা দিতে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে রেলকে। 
জনবলের সংকট থাকায় এবং দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেয়া সম্ভব না হওয়ায় জনপ্রিয় এই সেবাকে স্বাভাবিক রাখতে জরুরী ভিত্তিতে বর্তমানে ৪ হাজার ২৯৬জন অনিয়মিত শ্রমিককে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

অস্থায়ী এসব শ্রমিকের মাধ্যমে রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগের আওতাধীন কারখানার উৎপাদন, রোলিংস্টক মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, স্টেশন ও ট্রেন পরিচালনা, মালামাল সংগ্রহ ও বিতরণ, বৈদ্যুতিক স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা, লেভেল ক্রসিং গেট পরিচালনা, রেলপথ রক্ষণাবেক্ষণ, সিগন্যাল মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি অর্থ বিভাগের এক নির্দেশনায় অস্থায়ীভিত্তিতে এসব শ্রমিক নিয়োগ না দিয়ে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে রেলওয়েকে শ্রমিক নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। অভিযোগ, কিছু অসাধু ঠিকাদারের প্ররোচনায় অর্থ বিভাগ এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে রেলওয়ের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, এতে সংশ্লিষ্ট কতিপয় কর্মকর্তার পকেট ভারি হবে। কারণ আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ দিতে দরপত্র আহ্বান করতে হবে। আর এতে প্রভাবশালী কিছু ঠিকাদার অসাধু কর্মকর্তাদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নিবে। তাছাড়া আউটসোর্সিং প্রক্রিয়া সময়সপেক্ষ বিষয় এবং এই প্রক্রিয়ায় রেলওয়ের বিশেষায়িত কাজে দক্ষ জনবল পাওয়ার সম্ভাবনা কম হবে।

চলতি বছর মে পর্যন্ত রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত অনয়িমিত ৪ হাজার ২৯৬ জন শ্রমিকের মজুরী বাবদ ব্যয় হয়েছে ৬০ কোটি টাকা। অথচ আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে একই সেবা লাভের জন্য ব্যয় করতে হবে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। 

এদিকে চলতি অর্থবছর (২০২২-২৩) আনুমানিক ছয় হাজার জন অনিয়মিত শ্রমিক নিয়োগের আবশ্যিকতা থাকায় মজুরী বাবদ বাজেটে ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দের আবেদন জানিয়ে অর্থ বিভাগে টিঠি পাঠিয়েছে রেলওয়ে। তাতে বলা হয়েছে, অনিয়মিত শ্রমিক মজুরী খাত বন্ধ হলে রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগের উৎপাদন, মেরামক, রক্ষণাবেক্ষণ এবং অপারেশনাল কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। পাশাপাশি স্বাভাবিক ট্রেন চলাচল ও যাত্রীসেবা বিঘ্নিত হবে।

প্রচলিত বিধি মোতাবেক অনিয়মিত শ্রমিককে কোন স্থায়ী পদে নিয়োগ বা আত্মীকরণের সুযোগ নেই। এরপরও অনিয়মিত এসব শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে রেলে দীর্ঘ দিন ধরে মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও ট্রেন পরিচালন কার্যক্রম সম্পাদন করা হচ্ছে। বিশেষায়িত ও কারিগরি বিভাগ হিসেবে রেলের বিদ্যমান অনিয়মিত শ্রমিকের পরিবর্তে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে সেবা গ্রহণ করা হলে সুষ্ঠু ও নিরাপদ ট্রেন পরিচালনা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি সরকারি স্বার্থ বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।

তাছাড়া আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ার সেবা গ্রহণ নীতিমালা, ২০১৮ এর ধারা (৩) অনযায়ী, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, গোপনীয়তা ও সরকারী স্বার্থ বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা থাকে কিংবা আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে দক্ষ বা বিশেষায়িত সেবা বিঘ্নিত হওয়ার ঝুঁকি অতিমাত্রায় বিদ্যমান এরূপ সেবাসমূহ অর্থ বিভাগের অনুমতি নিয়ে আউটসোর্সিং নীতিমালার আওতা বহির্ভূত রাখা যাবে।

এ প্রসঙ্গে রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার এই প্রতিবেদককে বলেন, রেল সেবা একটি সার্বক্ষণিক চলমান কার্যক্রম। এটি কখনও বন্ধ থাকে না। অর্থ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে শ্রমিক নিয়োগে সময় ও ব্যয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাবে। ট্রেন পরিচালনা অসম্ভব হয়ে পড়বে। 

তিনি বলেন, রেলের বিভিন্ন দপ্তরে অনিয়মিত এসব শ্রমিকরা দীর্ঘ দিন কাজ করায় মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালন কাজে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছেন। ট্রেন পরিচালনার নিরাপত্তা বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়েছেন। তাদের দ্রুত নিয়োজনের মাধ্যমে কাজে নিয়োগ করা যায়। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়