শাহীন খন্দকার: [২] দেশের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ধ্বংসপ্রাপ্ত মিরপুর ১০ ও কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশন দুটি ঠিক করে চালু করতে অন্তত এক বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে তার আগ পর্যন্ত দুটি স্টেশনে ট্রেনের বিরতি ও যাত্রী সুবিধা বন্ধ থাকবে বলেও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। তবে মেট্টোরেল যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছে নজীরবিহীন।
[৩] গত ১৮ জুলাই শিক্ষার্থীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির মধ্যে মেট্রো লাইনের নিচে মিরপুর ১০ গোলচত্বরে ফুটওভার ব্রিজে পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। সেই আগুনের মধ্য দিয়েই একটি ট্রেন ছুটে যায়। পরে চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
[৪] গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর মিরপুর ১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে হামলা হয়। ভাঙচুর করা হয় সিসি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরা,এলইডি মনিটর, টিকিট কাটার মেশিনসহ বিভিন্ন জায়গায়। লুট করা হয় মূল্যবান অনেক জিনিস। কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নির্ণয় কমিটি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।
[৫] ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর ১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন চালু হতে কমপক্ষের এক বছর সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। সহিংসতার ঘটনায় মিরপুর ও কাফরুল থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। তবে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর মামলা করা হবে বলেও জানিয়েছে, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষ।
[৬] মেট্রোরেলের ক্ষতি নিরূপণে অতিরিক্ত সচিব মো. জাকারিয়াকে প্রধান করে ইতিমধ্যে ৮ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল)এর কোম্পানি সচিব তরফদার মাহমুদুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
[৭] তিনি আরও জানিয়েছেন,সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হবে মেট্রোরেলে অগ্নিসংযোগসহ ভাঙচুরকারীদের। এ ঘটনায় কঠিন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে প্রশাসন। ঐ কমিটির অপর এক সদস্য জানিয়েছেন, এ দুই মেট্রোস্টেশন পুনঃনির্মাণে প্রায় ৬ মাস থেকে এক বছর লেগে যাবে। সব যন্ত্রপাতি বসানোর পাশাপাশি কারিগরি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। মিরপুর ১০ স্টেশনের পুরো ই-সিস্টেম ধ্বংস হয়ে গেছে। এ সিস্টেম পুনরায় চালু করতে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা লাগতে পারে।
[৮] তিনি জানান, কাজীপাড়া স্টেশনের ৫০ শতাংশের বেশি ই-সিস্টেম নষ্ট হয়ে গেছে। এ সিস্টেম পুনরায় স্থাপন করতে প্রায় ১০০ কোটি টাকা লাগবে। আর কম্পিউটার, ডিভাইস, পাঞ্চ মেশিন, ভেন্ডিং মেশিনমহ আরও যে সব যন্ত্রাংশের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা ঠিক করতে প্রায় দুইশো কোটি টাকা লেগে যেতে পারে।
[৯] সবমিলিয়ে মেট্রোরেলের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৫০০ কোটি টাকার বেশি। এ বিষয়ে ডিএমটিসিএলের কোম্পানি সচিব আব্দুর রউফ বলেন,এ দুই স্টেশনে শুধু ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নয়। আরও ক্ষতি হয়েছে। যাত্রী পরিবহনে যে আয় হতো, তা কমছে। মিরপুর ১০ স্টেশন সবচেয়ে যাত্রীবহুল স্টেশন।
[১০] মেট্রোরেলের কমলাপুর স্টেশন বর্ধিতকরণসহ পুরো প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ২০২৫ সালের জুন মাসে। তাহলে এ প্রকল্পের সময়সীমা বাড়ছে কি না,এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুরো প্রকল্পের মেয়াদ যেন না বাড়ে, সে লক্ষ্যেই কাজ করছি। আশা করছি আগামী বছরের জুনের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করা হবে। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :