সালেহ্ বিপ্লব: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘এক্রিলিক পলিমার’ একটি ন্যানোপ্রযুক্তি, যা রাস্তার নির্মাণ খরচ কমপক্ষে ৩০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। অবকাঠামোর স্থায়িত্বের কারণে এই রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণেও খরচ হবে খুব কম।
তারা বলেছেন, এই প্রযুক্তি বাংলাদেশের হাতের নাগালে চলে এসেছে এবং এটি কমখরচে এবং দ্রুততম সময়ে বাঁধ নির্মাণেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি অত্যন্ত সস্তা, টেকসই এবং সহজ রাস্তা নির্মাণ পদ্ধতি এবং এক্রিলিক পলিমার মিশ্রণের জন্য বাংলাদেশের মাটি অত্যন্ত উপযুক্ত।
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। প্রতিবেশী ভারত ও ভুটানও সড়ক নির্মাণে এই প্রযুক্তির ব্যবহার করা শুরু করেছে।
প্রকৌশলীরা বলেছেন, নির্মাণে কোন ইট ও পাথরের প্রয়োজন হবে না। যার মানে এই নতুন প্রযুক্তি বাংলাদেশের ইট পোড়ানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে বাংলাদেশের বায়ুর মান উন্নত করবে।
সড়ক ও জনপথের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. ফজলে রব্বে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসকে বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের লক্ষ্যকে সামনে রেখে রাস্তা নির্মাণের জন্য এটি একটি বিস্ময়কর প্রযুক্তি হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে। ন্যানোপ্রযুক্তির পণ্য এক্রিলিক পলিমারের মাধ্যমে মাসে ১০০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব।
তিনি বলেন, এক্রিলিক পলিমার একটি পানিরোধী পণ্য যা নষ্ট হওয়ার হার খুবই কম। এর মাধ্যমে নির্মিত রাস্তার ভার বহন ক্ষমতাও হবে অনেক বেশি। এটি আমাদের রাস্তাগুলোর স্থায়ীত্ব অন্তত ৫০ বছর বাড়িয়ে দেবে। রক্ষণাবেক্ষণ খরচও ন্যূনতম পর্যায়ে নেমে আসবে।
তিনি বলেন, নতুন প্রযুক্তির অধীনে বালি এবং মাটির সাথে এক্রিলিক পলিমারের একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া রাস্তার ভিত্তি তৈরি করবে এবং এই পদ্ধতিতে উপাদানগুলির বন্ধন খুব দ্রুত হয়ে যায়।
এক্রিলিক পলিমার ব্যবহার দেশে সড়ক নির্মাণের জন্য আমদানি করা পাথরের চাহিদা ব্যাপকভাবে হ্রাস করবে এবং এই পদ্ধতির অধীনে রাস্তা নির্মাণে ব্যবহৃত উপকরণ প্রায় ৭০ শতাংশ এই দেশে পাওয়া যায়।
তিনি আরো বলেন, রাস্তার উপরিভাগের স্তর তৈরিতে ব্যাপকভাবে পাওয়া প্লাাস্টিকের পানির বোতল, পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বিটুমিনের মিশ্রণে যা ১৬০ থেকে ১৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় মেশানো হয়। এটি বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে।
ফজলে রব্বে জানান, বিষয়টি নিয়ে তার নেতৃত্বে ২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ন্যানোপ্রযুক্তির কার্যকারিতা ও সম্ভাব্যতা নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা হয়েছে।
সড়ক ও জনপথের প্রধান প্রকৌশলী একেএম মনির হোসেন পাঠান আমাদের সময় ডটকমকে বলেছেন, আমরা গবেষণার ফলাফল দাপ্তরিক ভাবে গ্রহণ করেছি এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছি পুনঃপরীক্ষার মাধ্যমে আমরা এক্রোলিক পলিমারের কার্যকারিতা যাচাই করবো। এরপর আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের সঙ্গে সভার আয়োজন করবো এবং সকলের মতামতের ভিত্তিতে আমরা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাস্তা নির্মাণে যাব।
আপনার মতামত লিখুন :