শিরোনাম
◈ কুষ্টিয়ায় পদ্মার ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের টাওয়ার নদীতে বিলীন ◈ ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, কোন আইনের বলে ভারতে থাকবেন শেখ হাসিনা? ◈ (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার ◈ স্থিতিশীল ডলারের দর, ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ◈ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘গ্যারান্টিতে’ নগদ টাকার সংকট কাটছে যে ৫ ব্যাংকের ◈ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চলছে, জাবিতে কোন কমিটিই নেই : ছাত্রদল ◈ গণপিটুনিতে মৃত্যু: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখপ্রকাশ, বৈষম্যবিরোধীদের নিন্দা, ফেসবুকে নানা সমালোচনা ◈ ভারতের গোলা যাচ্ছে ইউক্রেনে, ক্ষুব্ধ রাশিয়া ◈ সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সুনামগঞ্জে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার গ্রেফতার ◈ মব জাস্টিস শুধু সহিংসতা ও অন্যায় সৃষ্টি করে: সমন্বয়ক হাসনাত

প্রকাশিত : ৩০ জুন, ২০২২, ০৭:৩৩ বিকাল
আপডেট : ৩০ জুন, ২০২২, ০৭:৩৩ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পদ্মা সেতুতে মটরসাইকেল দুর্ঘটনার নেপথ্যে

মিনহাজুল আবেদীন: পদ্মা সেতু সাধারণদের জন্য খুলে দেয়ার রাতেই প্রাণঘাতী মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাটি কীভাবে হয়েছে, অবশেষে তা প্রকাশ পেলো।

ঘটনার দিন থেকে ধারণা করা হচ্ছিলো, মাত্রাতিরিক্ত গতিতে চালাতে গিয়ে ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে দুর্ঘটনার সময়কার একটি ভিডিও পাওয়া গেছে, তাতে এটি স্পষ্ট যে ট্রাকে বাইকের ধাক্কা লাগেনি। সেতুতে পড়ে থাকা 
 ৩ জনের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

আর সেই তিনজনের সেতুতে পড়ে থাকার কারণ একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাস, যেটিকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি। এই মাইক্রোটি একটি বাইককে ধাক্কা দিলে তার আরোহীরা সেতুতে পড়ে যান। এই পড়ে থাকা আরোহীদের পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই প্রাণঘাতী পরের দুর্ঘটনাটি ঘটে।

সেই রাতে বাইক দুর্ঘটনায় আলমগীর হোসেন ও মো. ফজলু নামে দুই যুবকের মৃত্যুর পর সেতুতে বাইক নিষিদ্ধ করা হয়। অবশ্য এই সিদ্ধান্তের কারণ সেই একটিই নয়। দিনভর সেতু পাড়ি দিতে বাইকারদের মরিয়া চেষ্টার মধ্যে বিশৃঙ্খলার কারণে সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়।

দুই ভিডিওতে যা দেখা গেছে:

সেই রাতে দুর্ঘটনায় পড়া বাইকটি চালাচ্ছিলেন ফজলু আর পেছনে বসে মোবাইল ফোনে ভিডিও করছিলেন আলমগীর। আলমগীরের ধারণ করা ভিডিওটি পরদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওতে ফজলুর মোটরসাইকেলের বেপরোয়া গতি দৃশ্যমান হলেও তাদের মোটরসাইকেলটি হঠাৎই কেনো পড়ে গেলো এর কোনো ধারণা পাওয়া যায় না।

অন্য একটি ভিডিওতে দুর্ঘটনার মূল কারণ স্পষ্ট হয়েছে। এটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বেপরোয়া গতি ওই দুর্ঘটনা ঘটায়নি। এর মূল কারণ ছিল কয়েক সেকেন্ড আগে ঘটা অন্য একটি দুর্ঘটনা।

এই ভিডিওটি ধারণ করেন ফজলুদের মোটরসাইকেলের সামনে থাকা অন্য একটি মোটরসাইকেল আরোহী যুবক। তিনিও সেতুতে ঘুরতে গিয়ে মুহূর্তগুলো ধারণ করছিলেন মোবাইল ফোনে।

প্রায় ১ মিনিটের এই ভিডিওতে দেখা যায়, দুর্ঘটনার প্রায় ৩০ সেকেন্ড আগে ভিডিও ধারণকারীর মোটরসাইকেলটি উচ্চগতিতে ওভারটেক করে সামনে চলে যায়। এর কয়েক সেকেন্ড পরই সেতুর বাম দিকে দাঁড়িয়ে থাকা একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাস হঠাৎ ডান দিকে চলতে শুরু করে এবং ঠিক সামনে থাকা মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর সড়কের মাঝে পড়ে যায়।

ওই মোটরসাইকেলে থাকা তিন আরোহীও সড়কের পড়ে যান। ঠিক সেই মুহূর্তে ফজলুর মোটরসাইকেলের সামনে এসে পড়েন মাইক্রোবাসের ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে থাকা তিন বাইক আরোহী।

ফজলু তাদের চাপা না দিতে ডান দিকে পাশ কেটে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পুরোপুরি ডানে চাপতে পারেননি ফজলু। কারণ ডান পাশ ধরে একটি পিকআপও চলছিল। রাস্তায় পড়ে থাকা তিনজনকে পাশ কাটলেও একজনের পায়ের জুতা ফজলুর মোটরসাইকেলের নিচে চলে আসায় নিয়ন্ত্রণ হারান তিনি।

তখন ফজলুর মোটরসাইকেল আঘাত করে রাস্তার মাঝে পড়ে থাকা মাইক্রোবাসের ধাক্কা খাওয়া মোটরসাইকেলটিকে। এর পরই ছিটকে পড়ে প্রাণ হারান ফজলু ও আলমগীর। ঘটনার পর পরই মাইক্রোবাসটিকে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে দেখা যায়।

ঘটনার দিন পদ্মা সেতু পাড়ি দেয়ার মুহূর্ত ফজলুর পেছনে বসে আলমগীর ভিডিও ধারণ করেছিলেন, যা পরের দিন সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমেও প্রচার হয়। আলমগীরের ধারণ করা ভিডিওটিতেও একটি মোটরসাইকেলকে সাদা মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দিতে দেখা যায়।

সেদিন দুর্ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছিলো জানতে চাইলে নিহত ফজলুর মামাতো ভাই আলী হোসেন বলেন, ‘আমি ঢাকা মেডিক্যালে গিয়ে ফজলুর চার বন্ধুর মুখে শুনেছি পিকআপকে ওভারটেক করতে গিয়ে ওই পিকআপের সঙ্গে ফজলুর মোটরসাইকেল ধাক্কা খেয়ে এই ঘটনা ঘটে।’

ঘটনার সম্পর্কে আলী হোসেনের মতোই বর্ণনা দেন নিহত আলমগীরের ভাই রমজান। তিনি বলেন, ‘আলমগীরের বাকি চার বন্ধু পেছনে অন্য দুই মোটরসাইকেলে ছিলো। তারা ঘটনা নিজ চোখে দেখেনি। দুর্ঘটনার পর ফজলু ও আলমগীরকে তারা উদ্ধার করতে গিয়ে আশপাশের মানুষদের বর্ণনা থেকে জানতে পারে যে ফজলুর মোটরসাইকেল পিকআপের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে যায়।

পদ্মা সেতু উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, কোনো ভিডিও সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। পরে প্রতিবেদক তার হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিওটি পাঠালে তা দেখে তিনি বলেন, ‘আমাদের তো এ বিষয়ে কেউ কোনো তথ্য দেয়নি। এমনকি দুই পরিবারের কেউই আমাদের এ সম্পর্কে কিছু বলেননি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ওই সাদা মাইক্রোবাসটি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে দেখবো।’ নিউজ বাংলা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়