মো.বশির উদ্দিন, ডেমরা (ঢাকা): আসন্ন বাজেটে শিক্ষা খাতে মোট জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ, ঈদের আগে পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বেতন বৃদ্ধি, পদোন্নতিসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে ১০ দফা দাবি জানিয়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষকরা। দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে ঈদুল আজহার পর সারা দেশে একযোগে আন্দোলন করার হুমকি দিয়েছেন তারা।
শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাসে বাংলাদেশ মাদ্রাসা জেনারেল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমজিটিএ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ মাদরাসা জেনারেল টির্চাস এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ বলেন, আগামী বাজেটে শিক্ষা খাতে মোট জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে। ডিজিটাল দেশ প্রতিষ্ঠা করতে হলে শিক্ষা খাতে বাজেট বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। ইউনেস্কোর পরামর্শ অনুযায়ী, শিক্ষা খাতে মোট জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দ দিতে বলা হয়েছে। সেখানে গত বাজেটে মাত্র ৩ শতাংশ ছিল। মাদ্রাসা-কারিগরিতে মোট ৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও সেটি ১৫ হাজারে উন্নীত করতে হবে।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসা-কারিগরি শিক্ষকরা তাদের বেতন-ভাতাসহ সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমাদের মাসিক বেতন-ভাতা পেতেও পরবর্তী মাসের ২০ তারিখ পার হয়ে যাচ্ছে। এসব নিয়ে আমরা বারবার আন্দোলন করলেও আমলে নেওয়া হচ্ছে না। শিক্ষক-কর্মচারীদের অধিকার আদায়ে আমরা ১০ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে ঈদের পর সংবাদ সম্মেলন করে সারা দেশে একযোগে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেওয়া হবে।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১. শিক্ষা খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ, ২. আসন্ন ঈদুল আজহার আগেই শিক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদান, ৩. মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বেতন বৃদ্ধি বা মহার্ঘ ভাতা প্রদান, ৪. আলিম, ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসায় প্রভাষকদের, ১৬ বছর পূর্ণ হলে প্রভাষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রদান, ৫. সরকারি চাকরিজীবীদের মতো শিক্ষকদের মেডিকেল ও বাড়িভাড়া প্রদান, ৬. বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি প্রথা চালু,৭. সহকারী শিক্ষকদের ৮ম গ্রেড প্রদান, ৮. ইএফটি-এর মাধ্যমে বেতন প্রদান, ৯. প্রশাসনিক পদে জেনারেল শিক্ষকদের নিয়োগ প্রদান,১০. মাদ্রাসাসহ সব শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করা।
লিখিত বক্তব্যে মো. হারুন অর রশিদ বলেন, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। যেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খাতে ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল, সেখানে কারিগরি ও মাদ্রাসায় দুটি বিভাগে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। যার কারণে মাদ্রাসায় শিক্ষায় তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ বাস্তবায়ন ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। এটি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানান তারা।
সংগঠনর মহাসচিব মো. শান্ত ইসলামের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের স্থায়ী কমিটির সদস্য সুলতান মাহমুদ,ফখরুল ইসলাম, কে এম শামিম, মেহেদী হাসান সরকার, ফিরোজ আলম, মো. এলিন তালুকদার, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী, কামরুনাহার, কবি সুরুজ্জামন, আব্দুস সাত্তার, শাহআলম, যুগ্ম সম্পাদক মেহেদি হাসান, জসিম উদ্দীন, সালহ উদ্দীন আহম্মদ, মনিরুজ্জান, আজাহার আলী মুক্তা কামরুজ্জামন প্রমূখ।
প্রতিনিধি/একে
আপনার মতামত লিখুন :