সুজিৎ নন্দী: ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, আমাদের শহরাঞ্চল আশপাশের গ্রামাঞ্চলের চেয়ে বেশি উত্তপ্ত। তাপপ্রবাহ একটি নীরব ঘাতক। জলবায়ু পরিবর্তনের এই বিরূপ প্রভাবে বেশি ক্ষতির মুখে আছে আমাদের নারী ও শিশুরা। আর ঢাকা শহরের প্রচণ্ড উত্তাপ মোকাবিলায় আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, তাপপ্রবাহের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এশিয়ার প্রথম শহর হিসেবে ডিএনসিসিতে চিফ হিট অফিসার পদে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে যারা ছাদবাগান করবে, তারা হোল্ডিং ট্যাক্সে ১০ শতাংশ ছাড় পাবে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম আরো বলেন, সম্প্রতি ঢাকায় এক দিন গত ৫৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তাপ ছিল। এটি নিয়ে এখনই সজাগ না হলে বার্ষিক তাপমাত্রা বাড়তেই থাকবে। ঢাকা শহরকে ঠান্ডা রাখার ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যেমন প্রতিদিন হাজারো লোক ঢাকায় আসছেন। এর ৭০ শতাংশই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে।
উত্তর সিটির মেয়র বলেন, গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। আমি ঘোষণা দিতে চাই, আগামী দুই বছরের মধ্যে আমি ঢাকা শহরে দুই লাখ গাছ লাগাব। এ ক্ষেত্রে আমি কমিউনিটি, পাড়া-মহল্লা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষকদের সবার সাহায্য চাই।
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে উত্তর সিটি করপোরেশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের যৌথ আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আতিকুল ইসলাম একথা বলেন।
ঢাকায় তীব্র তাপপ্রবাহের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডিএনসিসির সঙ্গে অ্যাড্রিয়েন আর্শট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেজিলিয়েন্স সেন্টারের (আর্শট-রকফেলার) মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। সেই চুক্তির কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেছেন, ঢাকার তাপমাত্রা কমাতে ডিএনসিসি ও আর্শট-রকফেলার যৌথভাবে কাজ করবে।
ঢাকা ও চট্টগ্রামে নগরায়ণের প্রভাবে তাপমাত্রা পরিস্থিতি বিষয়ে গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের ছাত্রী আনিকা তাবাসসুম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার ম্যাট ক্যানেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন জিল্লুর রহমান, শক্তি ফাউন্ডেশনের জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের পরিচালক সোহানী হক, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা ও চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন বক্তব্য দেন।
অ্যাড্রিয়েন আর্শট-রকফেলার ফাউন্ডেশনের পরিচালক ক্যাথি বাঘম্যান ম্যাকলিওড বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহ সারা বিশ্বের শহরগুলোতে একটি প্রেশার কুকারের মতো কাজ করছে। ঢাকার উত্তরে জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় এখানে ঝুঁকিও বেশি।
এ সময় আলোচকরা বলেন, দুই সপ্তাহ আগে ঢাকার তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে। ১১ দিন ধরে দাবদাহ চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে উত্তর সিটি করপোরেশন এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার উদ্যোগ নিয়েছে।
এসএন/এসএ
আপনার মতামত লিখুন :