মাসুদ আলম : রাজধানীর খিলগাঁও এবং সবুজবাগ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে রিকশা ও অটো রিকশা চোর চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চোর চক্রের প্রধান কামাল হোসেন কমল (৩৫), সহযোগী মো. রাশেদ (২৮), আলম হাওলাদার (৩৬), মো. কাজল (৩৬), মো. ফজলু (৩০), মো. সাজু (২৫)। তাদের কাছ থেকে ১৪টি চোরাই অটোরিকশা, ১৮টি অটোরিকশার চার্জার, ব্যাটারি ও ৬টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। রোববার রাতে খিলগাঁও ও সবুজবাগ থানা এলাকায় বিভিন্ন গ্যারেজে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। চক্রটি গত ৭ বছরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচ শতাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশা চুরি ও ছিনতাই করে ।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, চক্রের প্রধান কমল ১৫ বছর আগে কাজের সন্ধানে ঢাকায় এসে রিকশা চালানো শুরু করেন। একদিন তার রিকশা চুরি হয়ে যায়। তারপর রিকশার মালিক তার কাছ থেকে চুরি যাওয়া রিকশার মূল্য আদায় করেন। ঋণ করে চুরি যাওয়া রিকশার মূল্য মালিককে পরিশোধ করে কমল। ওই ঋণের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে চুরি যাওয়া রিকশা খুঁজতে থাকে। সেখান থেকেই অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়েন। এরপর নিজেই রিকশা চুরিকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।
তিনি আরও বলেন, ১২ বছর যাবৎ রিকশা চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছে কমল। প্রথমে কমল নিজেই একা রিকশা চুরি করতো। নতুন রিকশায় উঠে চালককে বিষাক্ত কোমল পানীয় দিয়ে অজ্ঞান করে রিকশা নিয়ে পালিয়ে যেতো। আবার কখনও রিকশা চালক কোমল পানীয় খেতে রাজি না হলে তার নাকের কাছে চেতনানাশক ভেজানো রুমাল দিয়ে অজ্ঞান করে রিকশা চুরি করতো। এরপর সে রিকশা চুরির জন্য একটি চক্র গড়ে তোলে। চোরাই ও ছিনতাই করা বিভিন্ন রংয়ের ব্যাটারিচালিত রিকশা মজুদ ও রং পরিবর্তন করে বিক্রয় করে আসছে চক্রটি।
মহিউদ্দিন আরও বলেন, কমল রিকশার চালককে বলতো- সামনের রাস্তায় একটি বাসা থেকে আমার কিছু মাল তুলবো। এরপর নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দেওয়ার প্রস্তাব দিতো তারা এবং রিকশা চালকের কাছ থেকে তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করতো। বেশি ভাড়া পাওয়ার লোভে রিকশা চালক তাদের কথায় রাজি হতো। তারপর সুবিধামতো একটি বাসার সামনে রিকশা থামিয়ে চালককে বলতো আপনাকে বাসার ভেতরে ঢুকে মালামাল নিয়ে আসতে হবে। রিকশার চালক বাসার ভেতরে প্রবেশ করতেই চক্রের অপর সদস্য রিকশা পালিয়ে যেতো। রিকশার মালিককে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করতো। মুক্তিপণের টাকা বিকাশের মাধ্যমে আদায় করা হতো। এরপর একটি অজ্ঞাত স্থানে রিকশা রেখে মালিককে রিকশা নিয়ে যেতে বলতো তারা।
তিনি আরও বলেন, চুরির পর রিকশার রং পরিবর্তনের পর খোলা বাজারে বিক্রি করে দিত চক্রটি। কখনও রিকশার মোটর পার্টস খুলে আলাদা আলাদাভাবে বিক্রয় করতো তারা। চোরাই রিকশা ৫-১২ হাজার টাকায় বিক্রি হতো।
এমএল/এইচএ
আপনার মতামত লিখুন :