এম এম লিংকন: রাজধানীর খিলক্ষেতে রাস্তায় বসানো হয়েছে বাজার ও দোকানপাট। ফলে ৬০ ফুটের রাস্তা হয়েছে ১২ ফুট। সেই সঙ্গে ব্যাটারিচালিত অটো ও সিএনজির স্ট্যান্ড করায় যান চলাচলের পথ আরো সংকুচিত হয়ে গেছে। সড়কটিতে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে। এলাকাবাসীর ভোগান্তি চরমে।
খিলক্ষেত কুর্মিটোল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী পলাশ বলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। ফুটপাতে দোকান ও অটোরিকশার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। স্কুলের সামনের সড়কটিতে সবসময় যানজট লেগে থাকে।
সরেজমিন দেখা যায়, রেললাইনের দুই পাশ ও প্রধান সড়কের দুই পাশের ফুটপাতে অবৈধ বাজার বসেছে। মান্নান প্লাজা থেকে খাঁপাড়া পর্যন্ত এই বাজার। স্থায়ী-অস্থায়ী সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক দোকান আছে। দোকানভেদে দৈনিক ১৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা চাঁদা উঠে। সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতেও টাকা তোলা হয়। প্রতিমাসে প্রায় ৪০ লাখ টাকার বেশি চাঁদা উঠছে।
এছাড়া ওই এলাকায় অবৈধ ২ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটো রিকশা থেকে দৈনিক ৭০ টাকা ও ৫০ টাকা করে মাসে প্রায় ৩০ লাখ টাকা চাঁদা উঠে। এভাবেই চলছে গত ১৪ বছর। অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে অধিকাংশ রিকশা ও অটো রিকশা চার্জ দেওয়া হয়। দোকানগুলোয় অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েও টাকা তোলা হয়।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চাঁদাবাজির অভিযোগ খিলক্ষেত থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসলাম উদ্দিন, তার সহযোগী মনির মোল্লা ও সিরাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
খিলক্ষেত থানা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক এবং থানা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আসলাম ও তার অনুসারিরা অবৈধ দোকানপাট ও অটো রিকশা থেকে চাঁদা তোলেন। চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় আমার ওপর ও বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
খিলক্ষেত থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কেরামত আলী দেওয়ান বলেন, কারা চাঁদাবাজি করে এলাকার সবাই যানে। চাঁদাবাজি বন্ধের চেষ্টা করেছি,কিন্তু পারিনি। এবার নিজে থেকে থানা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছি।
এ বিষয়ে খিলক্ষেত থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসলাম উদ্দিন বলেন, আমি চাঁদাবজির সঙ্গে জড়িত নই। স্থানীয় ময়না ও শফিকুল চাঁদা তোলেন।
জানতে চাইলে খিলক্ষেত থানার ওসি কাজী সাহান বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে প্রভাবশালী চাঁদাবাজদের কাছে এলাকার মানুষ, এমনকি পুলিশও অসহায়। বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আবার সেসব দোকান বসানো হয়।
সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব
আপনার মতামত লিখুন :