নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বাহাদুরশাহ পার্ক সঠিক ভাবে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ইজারা দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। সেই সাথে মাঝখানে একটি ফুড ব্যান্ডকে ক্যাফেটেরিয়া তৈরির অনুমতিও দেয়া হয়েছে। তবে ফুড ব্যান্ড এর ক্যাফেটেরিয়া তৈরি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার( ২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে এলাকাবাসী ক্যাফে তৈরির কাজ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এরপর একদল এসে ক্যাফে'র মূল অবকাঠামোটি ভেঙে দিয়ে যায়। ইজারাদারা বলছেন, আমরা কাজ শুরু করেছি। কাজটি সম্পূর্ণ হলে লাইটিং করা হবে। পার্কটি জাকজমক হবে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে। পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা হবে। এলাকাবাসী বলেন, আজ ক্যাফে হচ্ছে। কাল দোকান বসবে। পার্ক নোংরা হবে। আমরা ক্যাফে তৈরির কাজ বন্ধ করে দ্রুত এসব সরঞ্জাম সরিয়ে নেয়ার দাবি জানাই।
আমরা পুলিশকে জানিয়েছি প্রয়োজনে আমরা আদালতে যাব। হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী এই পার্ককে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে হবে।
কলতা বাজারের স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তফা মিয়া বলেন, আমার ডায়াবেটিস। ৪০ বছর হলো এই পার্কে হাঁটাহাঁটি করি। এই পার্ক ছাড়া আশেপাশে আর কোন ফাঁকা জায়গা নাই। আমরা কোনভাবেই এই পার্কে ক্যাফে বা দোকান তুলতে দেবোনা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এর প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ রাসেল সাবরিন বলেন, আমরা আমাদের সব গুলো পার্ক সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য ইজারার আওতায় নিয়ে আসতেছি। যাতে করে পার্ক গুলো ভালো ভাবে পরিচালনা করা যায়।
তারই ধারাবাহিকতায় বাহাদুর শাহ পার্ক ইজারা দেয়া হয়েছে। পার্কের মাঝখানে একটি ফুট ব্যান্ড থাকবে। যারা খাবার বিক্রি করবে এবং পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করবে। এতে করে পার্কটি সঠিকভাবে পরিচালনা করা যাবে।
জানা যায়, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে পার্কটি আধুনিকায়ন করে নাগরিকদের জন্য উম্মুক্ত করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
ঐতিহ্যবাহী এই পার্কে পথচারীদের জন্য হাঁটার পথ, গণশৌচাগার, বেঞ্চ, সবুজ উদ্যান, অ্যাম্ফিথিয়েটার গ্যালারি, পার্কিং নির্মাণ করা হয়।
নাগরিকরা ২৪ ঘণ্টাই পার্কটি ব্যবহার করতে পারবেন। এজন্য ঝলমলে আলোর ব্যবস্থা করা হয়। বৃষ্টির পানি অপসারণে পার্কের চারপাশে চার ফুট গভীর ড্রেন করা হয়।
মেঝেতে বিছানো হয় নুড়িপাথর। ৮৫ দশমিক ৩ কাঠা আয়তনের এই পার্ক সংস্কারে ডিএসসিসির ব্যয় হয় ৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
পুরান ঢাকায় উম্মুক্ত স্থান না থাকায় ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মানুষ এই পার্কে সকাল-বিকাল হাঁটাহাঁটি করেন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষের বয়স ৫০ এর উপরে।
এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ, মহানগর মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা এই পার্কে এসে গ্রুপ স্টাডি ও বন্ধুবান্ধবের সাথে সময় কাটান। মিতু
আপনার মতামত লিখুন :