সুজিৎ নন্দী: ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ঢাকা শহরের স্কুলগুলোতে বিশেষ করে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের সামনে শত শত গাড়ি। একজন শিক্ষার্থীর জন্য একটি গাড়ি ব্যবহার করা হয়। পরিবেশ রক্ষায় ও যানজট কমাতে স্কুল বাস চালু করতে হবে। এর ফলে প্রাইভেট গাড়ির ব্যবহার কমে যাবে।
তিনি বলেন, স্কুল বাস সার্ভিস চালু হলে পরিবেশ দূষণ কমবে, যানজট কমবে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক বন্ধনও সুদৃঢ় হবে। আমি ইতোমধ্যে কয়েকটি স্কুলের শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি তারা এই বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। শিক্ষার্থীরা সবাই মিলে স্কুল বাসে যাওয়া আসা করলে তারা আনন্দে পাবে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুসম্পর্ক সৃষ্টি হবে।
মেয়র বলেন, অভিভাবকরা বাচ্চাদের নিরাপত্তার বিষয়ে চিন্তা করেন। আমরা বাচ্চাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছি। স্কুল বাসগুলোতে সিসি ক্যামেরাসহ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে বাচ্চাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। আমরা জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে পরিবেশ বান্ধব বৈদ্যুতিক স্কুল বাস চালু করার জন্যও কাজ শুরু করেছি।
সোমবার বনানীর শেরাটন হোটেলে বাংলাদেশ-জার্মান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিজিসিসিআই) আয়োজিত শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র আরও বলেন, ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং উপকূলীয় এলাকায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে প্রতিদিন অসংখ্য লোক ঢাকায় চলে আসে। এর মধ্যে অনেকেই আশ্রয় নিচ্ছে বিভিন্ন বস্তিতে। দোকান নিয়ে বসছে ফুটপাতে। নগরবাসী পরিবেশগত বিরূপ প্রভাব অনুভব করছে। শহরের সকলেই সম্ভাব্যভাবে জলবায়ু প্রভাবের সম্মুখীন।
শহরের প্রাণ ফিরিয়ে আনতে অনেক ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, লাউতলা খালের ওপর অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ট্রাক স্ট্যান্ড ও মার্কেট উচ্ছেদ করে খালটিকে পুনরুদ্ধার করে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা লাউতলা খালের পাড়ে দুই হাজার গাছ রোপণের কাজ আরম্ভ করেছি। সেখানে দৃষ্টিনন্দন পার্ক ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ করবো। লাউতলা খাল সংলগ্ন উদ্ধারকৃত জমিতে একটি খেলার মাঠও নির্মাণ করা হবে।
বৃক্ষরোপণে গুরুত্বারোপ করে মেয়র বলেন, বৃক্ষরোপণ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জন্ম নিবন্ধন করতে আসা নাগরিকদের একটি করে গাছ প্রদান করা হচ্ছে। আমরা নগরবাসীকে ছাদ বাগান করার জন্য এবং বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য উৎসাহিত করছি। আমরা ২৪টি পার্ক ও মাঠের উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করেছি।
তিনি বলেন, পুরো পৃথিবী আজ তিন সি দ্বারা আক্রান্ত। তিন সি হলো কোভিড, ক্লাইমেট চেইঞ্জ ও কনফ্লিক্ট। সবাইকে এই তিনটি সি'র বিষয়ে সচেতন হতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ঢাকা শহর আজ ক্ষতিগ্রস্ত। সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে।
মেয়র বলেন, আমরা প্লাস্টিক ব্যবহারের কারণে পরিবেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছি। যারা পানীয় উৎপাদন করছেন এবং প্লাটিকের বোতলে বাজারজাত করছেন, তাদের সরবরাহকৃত বোতল রিসাইক্লিংয়ের দায়িত্ব নেওয়ার সময় এসেছে। তাদের চিন্তা করতে হবে কীভাবে এটা সংগ্রহ ও পুনরায় ব্যবহার করতে পারি।
তিনি ক্রেতাদের বলেন, বোতল ফেরত দিলে টাকা ফেরত পাবেন। ঢাকা শহরকে বাঁচাতে হলে যারা পানীয় বিক্রি করবেন এবং কিনবেন সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :