ধর্ষণের ঘটনার পর জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহিদ জসীম উদ্দিনের মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ৯টায় রাজধানীর শেখেরটেক ৬ নম্বর রোডের বি/৭০ নম্বর বাড়িতে ওই ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম- লামিয়া আক্তার (১৭)।
প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে মায়ের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার জন্য যাওয়ার কথা ছিলো। শনিবার মার্কেটে গিয়ে কিছু কাপড় কিনেছে। রাত ৮টায় নিহতের মা ছোট মেয়েকে বাসার পাশেই মাদরাসায় দিয়ে আসতে যায়। এ সুযোগেই রাত ৯টার দিকে রুমের ভেতর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে আসে।
নিহতের মামা জানান, আমি দোকানে বসা ছিলাম। হঠাৎ করে আমার গ্রামের বাড়ি থেকে ফোন করে বলে আমার ভাগ্নি মারা গেছে। আমি দৌড়ে হাসপাতালে এসে দেখি আমার ভাগ্নি মরদেহ হাসপাতালে পড়ে আছে। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আমার বোন স্বামী হারা হলো। এখন মেয়েকে হারিয়েছে। আমার ভাগ্নির ধর্ষকরা জামিনে এসে গেছে। এখন আমার ভাগ্নি চলে গেছে। আমরা কার কাছে বিচার চাইবো। কে বিচার করবে আমাদের।
প্রতিবেশী এক নারী জানান, সন্ধ্যার পর মা-মেয়ে মিলে কাপড় কিনে এসেছে। আগামীকাল বিকেলে লঞ্চে করে বাড়িতে যাবে। শনিবার রাতে ছোট মেয়েকে নিয়ে মাদরাসায় যাওয়ার পর বড় মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। হয়তো কেউ তাকে ফোনে এমন কোন হুমকি ধমকি দিছে। যার কারণে সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। আমরা এ হত্যার বিচার কার কাছে আর চাইবো।
এ বিষয়ে আদাবর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম জাকারিয়া জানান, এ ঘটনায় আমরা হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। তাদের সঙ্গে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গ, গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় পিরোজপুর উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে শহিদ জসীম উদ্দীনের মেয়ে তার বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ি পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে যাচ্ছিলেন। পথে নলদোয়ানী থেকে অভিযুক্তরা পিছু নেয়। হঠাৎ পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে পার্শ্ববর্তী জলিল মুন্সির বাগানে নিয়ে যায় সাকিব ও সিফাত। একপর্যায়ে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এমনকি তার নগ্ন ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় দুর্বৃত্তরা।