ঢাকার খিলগাঁও তালতলা এলাকায় আপন কফি হাউসের সামনে এক তরুণীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। গত ১১ই এপ্রিল মারধরের ওই ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় সোমবার দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- আপন কফি হাউসের ব্যবস্থাপক আল আমিন ও কর্মচারী শুভ সূত্রধর। ওই ঘটনার প্রায় দেড় মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে ওই তরুণীকে লাঠি দিয়ে যাকে পেটাতে দেখা গেছে সে শুভ।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওই তরুণী সেদিন কফি হাউসের প্রবেশপথের সামনে যান। তখন ওই দোকানের দুজন কর্মচারী ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে। এরপর কোনো কিছু না বলে তরুণীকে মারধর শুরু করে একজন। পরে তরুণী দৌড়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে অনেকেই ঘটনার সমালোচনা করেছেন এবং জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন।
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান আকন্দ বলেন, ১১ই এপ্রিল আপন কফি হাউসে এক তরুণী ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে কফি হাউসটির ব্যবস্থাপক আলামিন তাকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায়। তখন তরুণী খোঁড়াতে খোঁড়াতে সেখান থেকে চলে যান। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তরুণীকে মারধর করার ভিডিও নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে আপন কফি হাউসে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থাপক আলামিন ও কর্মচারী শুভ সূত্রধরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভিডিওতে ওই তরুণীকে লাঠি দিয়ে যাকে পেটাতে দেখা গেছে সে শুভ। ভুক্তভোগী তরুণীর খোঁজ মেলেনি। আমরা ওই তরুণীকে বিভিন্ন মাধ্যমে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।
ওসি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত দুইজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই তরুণীর আচরণে বিরক্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তারা জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে মেয়েটির মানসিক সমস্যা আছে। সেদিন গিয়ে বিরক্ত করছিল। তাকে ঢুকতে না করা হচ্ছিল, তারপরেও সে জোর করে ঢুকতে চাচ্ছিল। এজন্য এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তারা।
এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দেয় রামপুরা থানা পুলিশ। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আপন কফি হাউসে গত ১১ই এপ্রিল বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে অজ্ঞাতনামা এক তরুণীর সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ আচরণসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেয়া হয়। বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য আসামিরা তরুণীকে লাঠি দিয়ে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। আপন কফি হাউসের ম্যানেজার আল আমিন ও কর্মচারী শুভ সূত্রধরের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিবুল হাসান এ আদেশ দেন। এর আগে আসামিদের আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও রামপুরা থানার উপ-পরিদর্শক মো. মহসিন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড নামঞ্জুর এবং জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক আসামিদের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। উৎস: মানবজমিন।