শিরোনাম
◈ জাতীয় পরিচয়পত্রের অসুন্দর ছবিটি ঘরে বসেই বদলাবেন যেভাবে ◈ বাংলাদেশ হয়ে সেভেন সিস্টার্সে যাওয়ার রেল প্রকল্প স্থগিত করলো ভারত ◈ ‘৫ বছরে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে খরচ ২৩০০ কোটি, তা ৭০০ কোটিতে নামানো সম্ভব’ ◈ নারী সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ কোরআন-হাদিসের লঙ্ঘন, বললেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ◈ রামপালের চেয়ে ৬০% কম: মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৮.৪৫ টাকা ◈ সোনার খোঁজে নেপাল যা‌চ্ছে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস দল ◈ সংসদীয় সংস্কারে রাষ্ট্রপতির স্বাধীন সিদ্ধান্তের পক্ষে বিএনপি, ২২ এপ্রিল তৃতীয় দফা বৈঠক ◈ ডিসেম্বরে নির্বাচন আদায়ে সোচ্চার বিএনপি, সর্বদলীয় জনমত গঠনে জোর, চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ ◈ সিলেটে বাংলা‌দেশ অলআউট ১৯১ রা‌নে, দিন শে‌ষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ বিনা উই‌কে‌টে ৬৭ ◈ সংসদ সদস্যদের দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দেওয়ার সুযোগ চায় বিএনপি: চারটি বিষয়ে ব্যতিক্রম প্রস্তাব

প্রকাশিত : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৭:৩৯ বিকাল
আপডেট : ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাইদা বাস চলাচল বন্ধ ও মালিকের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

মোঃরফিকুল ইসলাম মিঠু উত্তরা ঢাকা: রাজধানীর উত্তরায় রাইদা বাস চাপায় গৃহকর্মী গেনেদা খাতুন (৫৪) এর মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকা শহরে রাইদা পরিবহনের সকল বাস চলাচল বন্ধ ও গৃহকর্মীকে রাস্তায় পিষে মারায় জড়িত বাস চালক, হেলপার ও রাইদা বাস মালিকের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্বজনরা। 

আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল সাড়ে দশটায় সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরা হাউস বিল্ডিং পয়েন্টে মানববন্ধনটিতে অংশ নেয় নিহত গেনেদা খাতুনের আত্মীয়-স্বজনসহ প্রায় দুই শতাধিক বাসিন্দা। 

এতে বক্তারা রাইদা পরিবহনের বাস চালকদের বেপরোয়া গতিতে বাস চালানোর অভিযোগ তুলে বলেন, রাইদা বাস চাপায় ঢাকাতে এ পর্যন্ত ২০ জনের বেশি যাত্রী-পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া উত্তরা থেকে যাত্রীবাড়ি রুটে রাইদা পরিবহন চালকদের ওভারটেকিং ও বেপরোয়া গতিতে চলাচল করায় চরম ঝুঁকিতে এই রুটের সাধারণ যাত্রীরা। আর তাই নিহত গেনেদা খাতুনকে বাস চাপায় মারার পেছনে জড়িত বাস চালক-হেলপার ও মালিকের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন বক্তরা। 

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখা উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি মো. ফিরোজ জামান বলেন, রাস্তায় রাইদা পরিবহন উত্তরবাসীর জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা ১১ নম্বর সেক্টরের থানা গেটের সামনে মেইন রোডের উপর কাউন্টার বসিয়ে দিনরাত যানজটের সৃষ্টি করছে। শুধু তাই নয়, খালপাড় থেকে হাউসবিল্ডিংয়ের পুরো রোডই তারা দখল করে নিয়েছে।

তিনি বলেন, রাইদা পরিবহনের চাপাতে গেনেদা খাতুনের নির্মম মৃত্যু হয়েছে। আমরা চাই উত্তরার মতো আবাসিক এলাকায় যেন কোন বাস স্ট্যান্ড না থাকে । এতে আমাদের বসবাসের পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। 

মানববন্ধনে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক আনোয়ার হোসাইন বলেন, রাইদা বাসের বেপরোয়া গতিতে উত্তরায় যে নারী মারা গেছে তা খুবই বিভৎস ছিল। আমরা ঘটনাস্থল সেদিনই পরিদর্শন করেছি। অবশ্যই এর সঠিক বিচার হওয়া উচিত।

এ সময় হাউস বিল্ডিং এলাকায় একাধিক রাইদা বাস আটকে মানববন্ধন করেন নিহত গেনেদা খাতুনের পরিবারের স্বজনেরা।

মানববন্ধনে উত্তরা জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য মাহিম তালুকদার বলেন, উত্তরায় প্রতিনিয়তই সড়ক দূর্ঘটনা ঘটছে। সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধে আমরা ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানাই। গৃহকর্মী গেদেজা খাতুনসহ সকল প্রাণহানির বিচার করতে হবে।

বক্তব্য নিহত গেনেদা খাতুনের স্বামী আব্দুল গণি বলেন, আমার স্ত্রী সকাল বেলা কাজে যাইতেছিল। চৌরাস্তার মোড়ে রাইদা পরিবহনের দুই বাস এসে আমার স্ত্রীর জীবন কাইড়া নিছে।

তিনি বলেন, এই ঘটনার সাথে রাইদা পরিবহনের বাস মালিকও জড়িত। বাস মালিকরাই তো ওগোর মতো আনারি ড্রাইভারগোর কাছে বাস তুইল্যা দিছে। আমি ওই দুই বাস ড্রাইভার-হেলপার আর বাস মালিকগোর ফাঁসি চাই। 

এ সময় আব্দুল গণি স্ত্রীর মৃত্যুতে আকুতি করে বলেন, সরকার যেন এই খুনি রাইদা বাস বন্ধ কইর‌্যা দেয়। নইলে ওরা আরো মানুষ মারব। আমার মাইয়াগো মতো যেন আর কোন মাইয়া ওগো মা না হারায়।

বক্তব্যে নিহত গেনেদা খাতুনের অপর এক স্বজন বলেন, তিনি আমার বাসায় ১২ বছর ধরে বুয়ার কাজে যুক্ত ছিল। অসুস্থ স্বামী ও এক মেয়ে ছাড়া তার আর কোন ছেলে না থাকায় আমরা তাকে বেতনের বাইরেও সহযোগিতা করতাম। ঘাতক রাইদা পরিবহনের চালকেরা মুরব্বি লোকটাকে রাস্তা মেরে ফেলছে, আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। এসময় বক্তারা রাইদা বাস বন্ধ ও গেনেদা খাতুনের মৃত্যুতে জড়িত বাস চালক-হেলপারসহ রাইদা পরিবহনের মালিক কর্তৃপক্ষকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

উল্লেখ্য যে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) সকাল ৯টার দিকে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টর চৌরাস্তা এলাকায় রাইদা পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে গৃহকর্মী গেনেদা খাতুনের মৃত্যু হয়। তিনি রাস্তা পার হওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু, যাত্রী আগে নেয়ার প্রতিযোগিতায় বেপরোয়া গতিতে রাইদা পরিবহনের দুটি বাসের প্রথমটি (ঢাকা মেট্রো-ব-১২-৩৪১৭) গেনেদা খাতুনকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি রাস্তায় পড়ে গেলে পেছনে থাকা অপর রাইদা বাসের (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-১৫২২) চাকা গেনেদা খাতুনের মাথা পিষ্ট করে। ফলে মাথার খুলি ভেঙ্গে মগজ বেরিয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান গেনেদা বেগম। 

এ ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে ঘাতক রাইদা বাস পরিবহনের কয়েকজনকে আসামী করে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেছেন নিহতের স্বামী মো. আব্দুল গনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়