শিরোনাম
◈ ইজতেমার তারিখ পরিবর্তন হয়নি, সরকার চায় উভয়পক্ষ আলোচনা করে সমাধানের পথে আসুক।: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে  মিশরে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা ◈ ইজতেমা মাঠ ছাড়বেন সাদপন্থীরা, মাঠের দায়িত্ব নেবে সরকার ◈ বিমানযাত্রী বেশে বাড়ছে মাদক পরিবহন, সাড়ে ৩ হাজার ইয়াবাসহ আটক ১ ◈ ইজতেমা ময়দানে সংঘর্ষ: উত্তরা ও তুরাগ এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ◈ তাবলীগ জামাতের ২ গ্রুপের দ্বন্দ্বের আসল কারণ ‍নিয়ে যা জানাগেল.. ◈ ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবর খালাস, পরেশ বড়ুয়ার যাবজ্জীবন ◈ পাকিস্তান থেকে দ্বিগুণ কনটেইনার নিয়ে আবারও বাংলাদেশ আসছে সেই জাহাজ ◈ বৃহস্পতিবার যেসব এলাকায় গ্যাস থাকবে না ◈ টঙ্গীতে মহাসড়ক অবরোধ করে জুবায়েরপন্থীদের বিক্ষোভ

প্রকাশিত : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৯:৪৩ সকাল
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইজতেমা মাঠে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৩, সেনা মোতায়েন (ভিডিও)

ইজতেমা মাঠে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৩, সেনা মোতায়েন (ভিডিও)

মোঃরফিকুল ইসলাম মিঠু (ইজতেমা মাঠ থেকে): ইজতেমা ময়দানে তাবলীগ জামায়াতের এক পক্ষের শীর্ষ মুরুব্বী মাওলানা সাদ ও তাদের অনুসারীদের জোর ইজতেমাকে ঘিরে গত কয়েকদিনের অব্যাহত বিরোধের জেরে ৩ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহত হয়েছেন প্রায় শতাধিক। সকাল ৮টায় পুরো ময়দান সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

তাবলিগ জামাতের যোবায়েরপন্থিদের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান ও মাওলানা সাদপন্থিদের মিডিয়া সমন্বয়ক আবু সায়েম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে নিহতরা হলেন—কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের বাচ্চু মিয়া (৭০) ও ঢাকার দক্ষিণ খানের বেড়াইদ এলাকার বেলাল (৬০)। আরেকজনের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

ওসি হাবিব বলেন, রাতে ইজতেমা ময়দানে মারামারির ঘটনায় দুইজনের মৃত্যু খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। একজন হাসপাতালে, আরেকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ কাজ করছে।

আহতরা হলেন—আ. রউফ (৫৫), মজিবুর রহমান (৫৮), আ. হান্নান (৬০), জহুরুল ইসলাম (৩৮), আরিফ (৩৪), ফয়সাল (২৮), তরিকুল (৪২), সাহেদ (৪৪), উকিল মিয়া (৫৮), পান্ত (৫৫) টঙ্গী, খোরশেদ আলম (৫০) বেলাল (৩৪), আনোয়ার (৫০), আবু বক্কর (৫৯), আরিফুল ইসলাম (৫০), আনোয়ার (২৬), আনোয়ার (৭৬), ফোরকান আহমেদ (৩৫), আ. রউফ (৫৫) মজিবুর রহমান (৫৮), আ. হান্নান (৬০), জহুরুল ইসলাম (৩৮), আরিফ (৩৪),  ফয়সাল (২৮), তরিকুল (৪২), সাহেদ (৪৪)।

পুলিশ জানায়, বেশ কিছুদিন ধরেই তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদ অনুসারীদের জোড় ইজতেমাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা গত ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা জোড় ইজতেমা পালন করেন। এরপর ২০ ডিসেম্বর থেকে মাওলানা সাদ অনুসারীরা জোড় ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিলে তাদেরকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নেন জুবায়ের অনুসারীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সাদ অনুসারীদের ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ ঠেকাতে ময়দানের চারপাশে ও বিভিন্ন সড়কের মোড়ে লাঠি হাতে পাহারা বসায় জুবায়ের অনুসারীরা।

অন্যদিকে, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সাদ অনুসারীরা ইজতেমা ময়দানের উদ্দেশে বাস-ট্রাকে করে মাঠে আসতে থাকে। মধ্যরাতে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সাদ অনুসারীদের গাড়ি আটকে দেন জুবায়েরপন্থিরা। একপর্যায়ে রাত আড়াইটার দিকে মাওলানা সাদ অনুসারীরা ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করলে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় গ্রুপের দুইজন নিহত ও অন্তত অর্ধশত মুসল্লি আহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে সাদপন্থিরা তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর থেকে কামারপাড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করতে থাকেন। এ সময় মাঠের ভেতর থেকে যোবায়েরপন্থিরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। জবাবে সাদপন্থিরাও পাল্টা হামলা চালান। একপর্যায়ে সাদপন্থিরা মাঠে প্রবেশ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে তিনজন নিহত ও শতাধিক মুসল্লি আহত হন।

সাদপন্থিদের প্রভাবশালী মুরুব্বি মুয়াজ বিন নূর এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, আমরা এখন ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণে আছি। যোবায়েরপন্থিদের আক্রমণে আমাদের তিন ভাই শহীদ হয়েছেন। ময়দানে অনেক যোবায়েরপন্থি চাকু ও ছোড়াসহ আটক হয়েছেন বলে দাবি করেন মুয়াজ বিন নূর।

ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষে হতাহতদের টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সিনিয়র ব্রাদার হাফিজুল ইসলাম এ পর্যন্ত তিনজন নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছেন। আহতরা হাসপাতালে আসছে।

টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের অ্যাম্বুলান্স চালক আশরাফুল ইসলাম জানান, ঢাকায় নেওয়ার পথে বেলাল নামে একজন মারা গেছেন। তার বাড়ি ঢাকার বেড়াইদ।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়