শাহীন খন্দকার : ঈদের বাকি আর মাত্র তিনদিন। প্রতি বছরের মত এবারও রাজধানীতে বসেছে অস্থায়ী পশু খাদ্যের দোকান। গরুর হাটসহ বিভিন্ন অভিজাত এলাকা কিংবা পাড়া মহল্লার অলিগলির ফুটপাত জুড়ে পশুর খাবার ও কোরবানীর সামগ্রীর মৌসুমী ব্যবসা এখন তুঙ্গে।
এর মধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসছে গোখাদ্য। সেই সঙ্গে আসছে মাংস কাটার জন্য কাঠের গুলোই ও বাঁশের চাটাই। রাস্তায় বের হলেই চোঁখে কাঁচা ও শুকনো খড়, ভুষি, কাঁঠালপাতাসহ বিভিন্ন গোখাদ্য।
রাজধানীর মোহম্মদপুর খিলজী রোড ও কৃষিবাজার মার্কেটের আশেপাশে চলছে এমন মৌসুমি রমরমা ব্যবসা। বিক্রেতারা জানান, আমরা প্রতিবছর ১০ থেকে ১২ জন মিলে এই ধরণের মৌসুমি ব্যবসা করি। কারওয়ান বাজার থেকে ভূসি, কাঠের পাটাতন ও উত্তরবঙ্গ থেকে কাঁচা ও শুকনো খড় আনি। তিনি জানান, ভূসি কেজি প্রতি ৭০ টাকা, কাঁচা ঘাস আঁটি প্রতি ৫০ থেকে ৮০, শুকনো ঘাস ও কাঁঠাল পাতা আঁটি ২০ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি করি। চাটাই প্রতি পিস ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা, বাঁশের টুকরি ৮০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি করছি। বিক্রিও ভালো হচ্ছে।
এ ব্যবসা সাধারণত ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে আসা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত শ্রমিকরা করে থাকেন। গরুর জন্য কাঁচা ঘাস কিনতে আসা ফরিদ মিঞা জানান, একটি গরু ও একটি ছাগল কোরবানি দিচ্ছি। গরুকে ভূসি আর শুকনো ঘাস ও ছাগলের জন্য কাঁচা ঘাস নিয়ে যাচ্ছি। গতকালও নিয়েছিলাম আজ নিচ্ছি এভাবেই কারবানির আগের দিন পর্যন্ত দিতে হবে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেহারী ক্যাম্প এলাকায় বৃহত পরিসরে গড়ে উঠছে কাঠের গুলোই অর্থাৎ পাটাতন ব্যবসা। কথা হয় রফিক পাঠানের সঙ্গে।
তিনি জানান তিনি একজন ১৯৭১ সালে মুক্তি যুদ্ধে আটকে পড়া পাকিস্তানি। মুলত তিনি একজন সাইকেল মেকানিক্স, হলেও প্রতি বছর কোরবানির ঈদে কাঠের গুলোই সংগ্রহ করেন রামপুরা, মীরপুরের বিভিন্ন কাঠের সো-মিল থেকে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যেমন কেনা তেমনি তার বিক্রি। তিনি বলেন নিম্ন ৮০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করছেন। তবে ঈদের রাতে যার কাছে যেমন নিতে পারেন, তেমনি নিয়ে থাকেন বলেন রফিক পাঠান জানান। মোহম্মদপুর অ্যাগোরার সামনে গো-খাদ্য বিক্রেতা জামাল শেখ বাড়ী গোপালগঞ্জে। তিনি মোহম্মদপুরসহ রাজধানীর ৫০ টি পয়েন্টে তার নেতৃত্বে ১০০ জন গোখাদ্য বিক্রি করছেন।
প্রশ্নের জবাবে জামাল শেখ বলেন, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি, ভাঙা, শরিয়তপুর, ফরিদপুর, মধুখালি এবং রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে খাদ্য সংগ্রহ করেছেন। জামাল শেখ জানান ভুসি জাতীয় খাবার তিনি কারওয়ান বাজার থেকে সংগ্রহ করেন, আর ধানের খড়, ঘাষ জাতীয় খাবারের বড় চালান আসছে বৃহত্তর গোপালগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে।
তিনি বলেন,এক কেজি গমের ভুসি বিক্রি করছেন ৭০-৮০ টাকা, ধানের ভুসি ৩০-৪০ টাকা কেজিতে, ধানের খর ছোট ছোট দু মুঠো ৪০-৫০ টাকা, ঘাসের আটি বিক্রি করছেন ৩০-৫০ টাকায়। কাঠাল পাতার আটি বিক্রি করছেন ১৫-২০ টাকা করে।
আপনার মতামত লিখুন :