সুজন কৈরী: [২] দেশব্যাপী গণহত্যা, ধরপাকড় ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজধানীর ধানমণ্ডি আবাহনী মাঠের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে শিল্পীসমাজ।
[৩] ‘গণহত্যা ও নিপীড়নবিরোধী শিল্পীসমাজ’ নামক সংগঠনের আয়োজিত সমাবেশে যোগ দেন দৃশ্যশিল্পী, আলোকচিত্রশিল্পী, পারফরম্যান্সশিল্পী, সংগীতশিল্পী, কবি-লেখক-গবেষক-স্থপতি ও শিল্পসংগঠকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ। কর্মসূচি শেষে তারা একটি মিছিল বের করে। একই স্থান থেকে শুরু করে মিছিলটি শংকরে গিয়ে শেষ হয়।
[৪] সমাবেশ থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতার বিরুদ্ধে গণগ্রেপ্তার ও গণমামলা বন্ধ করে অবিলম্বে আটক ছাত্র-জনতাকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
[৫] সমাবেশে পরিবেশিত হয় পারফরমেন্স আর্ট, যেখানে তুলে ধরা হয় হত্যা, গুমসহ নানা অনাচারের চিত্র। প্রতিবাদী ছবি আঁকেন শিল্পীরা। গান-কবিতায়ও প্রতিবাদ জানান শিল্পীরা। তুলে ধরেন তাদের দাবি।
[৬] সমাবেশ থেকে তিনটি দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো- আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতার বিরুদ্ধে গণগ্রেপ্তার ও গণমামলা বন্ধ করে অবিলম্বে আটককৃত ছাত্র-জনতাকে মুক্তি দেওয়া। কারফিউ তুলে নিয়ে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকার দলীয় গুণ্ডাবাহিনী মুক্ত করা। কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনের নামে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য তদন্ত ও বিচার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ।
[৭] এদিকে শুক্রবার উদীচী সমাবেশ করেছে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংঘাত-সহিংতায় হত্যাকাণ্ডের দায় সরকার এড়াতে পারে না বলে মনে করে উদীচী। জাতিসংঘের প্রতিনিধিকে সম্পৃক্ত করে এসব ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন উদীচী নেতারা।
[৮] জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক সমাবেশস্থলের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে একটি প্রতীকী কফিন রাখা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান। সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।
[৯] অমিত রঞ্জন দে বলেন, শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনকে দমন করতে গিয়ে নজিরবিহীন দমন-পীড়ন, নির্বিচারে ছাত্র-জনতার উপর গুলিবর্ষণ করেছে রাষ্ট্র। এসব হত্যাকাণ্ডের দায় কোনভাবেই সরকার এড়াতে পারে না। সাধারণ মানুষ যখনই কোনো ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিয়োজিত হয়, যখনই গণতন্ত্রের কথা বলা হয়, যখনই বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলে তখনই তাদেরকে রাজাকার ট্যাগ দিয়ে দেওয়া হয়।
[১০] সমাবেশে ‘বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা/ আজ জেগেছে সেই জনতা’, ‘মানব না এই বন্ধনে/ মানব না এই শৃঙ্খলে’, ‘কারার ওই লৌহ কপাট’সহ আরো কয়েকটি গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পী শাওন ও মীর সাখাওয়াত এবং লাকী আক্তার। আবৃত্তি করেন সৈয়দা রত্না, মনীষা মজুমদার, শাহিদা ফাল্গুনী ও সানাম খান। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :