শিরোনাম

প্রকাশিত : ৩১ জুলাই, ২০২৪, ০৮:৪৯ রাত
আপডেট : ০৩ অক্টোবর, ২০২৪, ০৯:২৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘উন্নত ঢাকা’ গড়তে আমরা সক্ষম, দুর্নীতি কমেছে এবং আয় বেড়েছে

ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৬ হাজার ৭৬০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

সুজিৎ নন্দী: [২] দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস জানান, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৯৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা। অন্যান্য আয় ধরা হয়েছে ১০৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সরকারি থোক ও বিশেষ বরাদ্দ ৭০ কোটি এবং মোট সরকারি ও বৈদেশিক উৎস থেকে আয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। আর ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোট পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

[৩] মেয়র জানান, সেখানে অন্যান্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ কোটি ২ লাখ টাকা। এছাড়া করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন ব্যয় ১ হাজার ৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা, সরকারি ও বৈদেশিক সহায়ক উন্নয়ন ব্যয় ৪ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা, মোট উন্নয়ন ব্যয় ৫ হাজার ৩৬৮ কোট ৩১ লাখ টাকা এবং সমাপনী স্থিতি ধরা হয়েছে ৮২৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

[৪] ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস আরো বলেন, সামষ্টিকভাবে উল্লেখযোগ্য হারে হয়রানি কমেছে এবং সুশাসন নিশ্চিত হয়েছে। ফলশ্রুতিতে ঢাকাবাসীর আস্থা বেড়েছে এবং কর পরিশোধ করার আগ্রহও বেড়েছে। ব্যয়ের ক্ষেত্রে পূর্বেকার যে কোনও সময়ের চাইতে জবাবদিহিতা বেড়েছে এবং অপচয় রোধ হয়েছে। আমার সাথে যারা জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন, তারা তাদের উদ্যম, উদ্যোগ, নিষ্ঠা, একাগ্রতা ও নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেদেরকে জনকল্যাণে নিয়োজিত রেখেছেন এবং কর্মকর্তারা নিজেদের দক্ষতা ও কর্মনিষ্ঠ নেতৃত্ব গুণে অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকি করে চলেছেন। ফলে, আমরা নতুন এই মাইলফলক রচনা করতে সক্ষম হয়েছি।

[৫.১] মেয়র বলেন, দায়িত্বভার গ্রহণের পর ইতোমধ্যে আমার মেয়াদকাল ৪ বছর ২ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে।  আপনারা নিশ্চয় অবগত আছেন, বৈশ্বিক করোনা মহামারির সংকটকালে আমি দায়িত্বভার গ্রহণ করি। তথাপি নির্বাচনের প্রাক্কালে ঢাকাবাসীকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন কর্মস্পৃহা ও কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আমরা বিস্তৃত কর্মযজ্ঞ শুরু করি। 

[৫.১] বুধবার নগর ভবনে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে উন্নত ঢাকার উন্নয়ন অগ্রযাত্রার বাজেট ঘোষণাকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস একথা বলেন। 

[৬] তিনি জানান, বিগত অর্থবছরে যেসব খাত হতে আমরা সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আয় করেছি তারমধ্যে গৃহ কর অন্যতম। গত অর্থবছরে এ খাত হতে ৪০০.৩৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে, যা, কর্পোরেশনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। গৃহ কর বাবদ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৪৭.২৩ কোটি, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩২৪.৪০ কোটি, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৫৪.৮৫ কোটি এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৮২ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। সুতরাং, ২০২২-২৩ অর্থবছরের সাপেক্ষে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে এই খাতে আদায় বেড়েছে ৫৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরের সাপেক্ষে বিগত অর্থবছরে দ্বিগুণের বেশি গৃহ কর আদায় করা হয়েছে। শতাংশের বিচারে প্রবৃদ্ধির এই হার প্রায় ২২০ শতাংশ।

[৭] মেয়র এ সময় বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম আধুনিকায়নে বিগত অর্থবছরে আমরা ১০ টন সক্ষমতার নতুন ২৫টি ডাম্প ট্রাক, ৩ টন সক্ষমতার নতুন ১৫টি ডাম্প ট্রাক এবং নতুন ১০টি পে-লোডার ক্রয় করেছি। ফলে, বর্জ্য অপসারণ ও স্থানান্তরে ঢাকা দক্ষিণ সিটির সক্ষমতা আগের চাইতে অনেকাংশেই বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রাথমিক বর্জ্য সংগ্রহকারী ও পুরাতন ৫টি অঞ্চলে চিকিৎসা বর্জ্য সংগ্রহকারী নিবন্ধন করা হয়েছে। নতুন ৫টি অঞ্চলে চিকিৎসা বর্জ্য সংগ্রহকারী নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সর্বোপরি সূচি অনুযায়ী নিয়মিতভাবে বিভিন্ন সড়ক, অলিগলি ঝাড়ু দেওয়া ও রাতের মধ্যে অন্তর্র্বতীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র হতে মাতুয়াইল কেন্দ্রীয় ভাগাড়ে বর্জ্য স্থানান্তর নিশ্চিত করা হয়েছে।

[৮] তিনি বলেন, এক সময় ঢাকা শহরের অলিগলি হতে শুরু করে মূল সড়ক পর্যন্ত সর্বত্রই যত্রতত্র উপচে পড়া বর্জ্যে সয়লাব ছিল। কিন্তু বিগত ৪ বছরে আমরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে আমূল পরিবর্তন সাধন করেছি। আপনারা জানেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম আধুনিকায়নে অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর (এসটিএস) কেন্দ্র অন্যতম একটি অনুষঙ্গ। কিন্তু ২০২০ সালের পূর্ববর্তী ৫০ বছরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকায় মাত্র ২৪টি অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছিল। বিগত ৪ বছরে আমরা নতুন ৪১টি অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণ করেছি। বাকি ওয়ার্ডগুলোতেও অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

[৯.১] মেয়র জানান, কোরবানি উপলক্ষে অস্থায়ী ও স্থায়ী পশুর হাটের ইজারা হতে গত অর্থবছরে আয় হয়েছে ২৬.৩৯ কোটি টাকা, যা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ২৩.৬০ কোটি, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৩.১৭ কোটি, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৯.৮৪ কোটি এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮.১০ কোটি টাকা। অতএব, ৪ বছরের ব্যবধানে এ খাতে প্রায় ৪৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

[৯.২] টয়লেট, পার্কিং, কাঁচাবাজার, ভাগাড় ইত্যাদি ইজারা হতে গত অর্থবছরে ২৫.৩২ কোটি টাকা আয় হয়েছে। এ খাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৮.৫৫ কোটি, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৫.১৯ কোটি, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১১.২৩ কোটি এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে মাত্র ৪.৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। সামষ্টিকভাবে ৪ বছরের ব্যবধানে এ খাতে আয় বেড়েছে সাড়ে ৫’শ শতাংশের চাইতেও বেশি।

[১০] ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস জানান, বাজার সালামী খাতে গত অর্থবছরে আমরা ১৪৫.৩৯ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে সমর্থ হয়েছি। এ খাতে ২০২২-২৩, ২০২১-২২, ২০২০-২১ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে যথাক্রমে আদায়ের পরিমাণ ছিল ১৩৯.৯৮ কোটি, ১০৯.৪৭ কোটি, ৩৮.২৮ কোটি ও ২৯.৭০ কোটি টাকা। ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরের সাপেক্ষে বিগত অর্থবছরে এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৫ গুণ।

[১১] অনুষ্ঠানে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী

এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়