শিরোনাম

প্রকাশিত : ৩০ জুলাই, ২০২৪, ০৮:০৪ রাত
আপডেট : ২০ অক্টোবর, ২০২৪, ১১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তীব্র পানি সংকটে রাজধানীর অনেক এলাকা: চাহিদার বেশি সরবরাহের দাবি ওয়াসার  

সালেহ ইমরান: [২] ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা আর দ্রুত নগরায়নের কারণে রাজধানী ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ অব্যাহতভাবে বাড়ছে। ফলে ক্রমাগত নেমে যাচ্ছে পানির স্তর। এতে করে পানির সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে প্রায় দুই কোটি ৪০ লাখ জনসংখ্যার মেগাসিটিতে। বিশেষ করে গরমের মৌসুমে এই সংকট খুব ভয়াবহ হয়ে ওঠে। পানির সংকটে থাকা এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে মোহাম্মদপুর, আদাবর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মালিবাগ ও গুলবাগ। বাংলানিউজ 

[৩] সংকটপ্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের ওয়াসার পাম্পহাউস অথবা কোনো গভীর নলকূপ থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে পানি সংগ্রহ করতে হয়। ওয়াসার এটিএম বুথেও পানি সংগ্রহের লইন ক্রমাগত দীর্ঘ হচ্ছে। অনেক এলাকার বাসিন্দাদের প্রতিদিনের ন্যূনতম চাহিদার পানিটুকু সংগ্রহ করতে সারাদিন পার হয়ে যায়। 

[৪] মোহাম্মদপুরের কায়কোবাদ হাউজিং সোসাইটিতে গিয়ে দেখা যায়, পানি সংগ্রহের জন্য মহিলা ও কিশোরীরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। এখানকার একটি বাড়ির গভীর নলকূপ থেকে পানি সংগ্রহ করেন ২০-২৫ বাড়ির মানুষ। এখানে কথা হয় ১২ বছর বয়সী শিশু মিতুর সঙ্গে। সে জানায়, বড় বড় দুটি জারে করে পানি বয়ে নিতে তার খুব কষ্ট হয়। অনেক সময় ৫-৬ ঘন্টাও লাইনে দাঁড়িয়ে  থেকেও পানি সংগ্রহ করা যায় না। যায়যায়দিন 

[৫] ঢাকার ২৯০টি এটিএম বুথ থেকে পানি সংগ্রহ করেন হাজার হাজার মানুষ।‘ট্যাপ-টু-ড্রিঙ্ক ওয়াটার’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকায় পানির এই এটিএম বুথগুলো স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এখানেও পানি কিনতে হয় বলে এটাকে বাড়তি বোঝা মনে করেন দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। 

[৬] ঢাকা ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম শহীদ উদ্দিন বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের গরমে পানি ব্যবহারের মাত্রা অনেক বেড়েছে। বিগত বছরগুলোয় গরমের সময় প্রতিদিন ২৫ থেকে ২৬ কোটি লিটার পানির প্রয়োজন হলেও এবার গরম  বেশি পড়ায় মাঝে মাঝে ২৮ কোটি লিটারের মতো পানি লাগছে। ওয়াসা প্রতিদিন সাড়ে ২৭ কোটি লিটারের মতো পানি সরবরাহ করছে। এটা প্রতিদিনের গড় চাহিদার চেয়ে বেশি। তবে দিন দিন পানির স্তর যেভাবে নিচে নামছে তাতে ওয়াসার সর্বোচ্চ সক্ষমতা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে বলে তিনি স্বীকার করেন। প্রতিদিনের সংবাদ 

[৭] ওয়াসার কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা নগরীর পানির চাহিদা এখনো ওয়াসার সক্ষমতাকে ছাড়িয়ে না গেলেও কিছু কিছু এলাকায় মানুষের চাপ অনেক বেশি থাকায় সরবরাহ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আর গরমের কারণে পানি ওঠানোর পাম্পগুলোও গরম হয়ে যাচ্ছে। তখন কার্যক্ষমতা ধরে রাখতে প্রায়াই অনেক পাম্প বন্ধ রাখতে হয়। রাইজিংবিডি 

[৮] নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওয়াসার একাধিক কর্মকর্তা জানান, ঢাকা নগরীতে প্রতিবছর চার লাখ করে জনসংখ্যা বাড়ছে। এতে করে খুব শিগগিরই পানির চাহিদা ওয়াসার বর্তমান সক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যাবে। চলমান পানির উৎসগুলো থেকে এ সক্ষমতা আর বাড়ানো সম্ভব নয়। এজন্য নতুন করে আরো কূপ খনন করতে হবে। কিন্তু জায়গার অভাবে  সে কাজও ব্যাহত হচ্ছে। 

[৯] অবকাঠামো ও পরিবেশগত পরিষেবা প্রতিষ্ঠান ইসলভ ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ জামান বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়ার ধরণ আরো অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এতে পানির উৎসগুলোর ওপর আরো চাপ পড়বে। ২০১৪ সালে চূড়ান্ত হওয়া ‘ওয়াটার সাপ্লাই মাস্টারপ্ল্যান ফর ঢাকা সিটি’ প্রকল্পে  প্রাক্কলন করা হয়  যে, ২০৩৫ সালে ঢাকা নগরীতে প্রতিদিনের পানির চাহিদা দাঁড়াবে ৫৪০ কোটি লিটার। তখন দিনে ৬০০ কোটি লিটার সরবরাহ সক্ষমতার প্রয়োজন পড়বে। কিন্তু অপরিকল্পিত নগরায়ন ও নদীদূষণ এ প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যাহত করছে।বাংলাভিশন 

[১০] পরিবেশবাদী কর্মী শরীফ জামিল বলেন, ঢাকাকে বাঁচাতে হলে ভূগর্ভস্থ পানির বদলে ভূপৃষ্ঠের পানির দিকে নজর দিতে হবে। শীতলক্ষা থেকে পানি আসছে। মেঘনা নদী থেকেও পানি আনার চেষ্টা চালাতে হবে। এছাড়া ঢাকার মৃত খালগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। তাহলে নগরীর জলাবদ্ধতা যেমন কাটবে, তেমনি ভূগর্ভস্থ পানির মজুদও বাড়বে।সময়ের আলো 

[১১] পানিসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ড.আইনুন নিশাত বলেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে আমরা নদীগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারি। এর মাধ্যমেই পানি সমস্যার সমাধান সম্ভব। কিন্তু সেটা তো ভবিষ্যতের কাজ, এজন্য দীর্ঘ সময় দরকার। এখন সাময়িক সময়ের জন্য কিছু পরিকল্পনা নিতে হবে। বর্তমানে ওয়াসার কয়েকটি পানি শোধনাগার প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে- সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। ঢাকা ট্রিবিউন। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান

একে 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়