শিরোনাম
◈ বাংলাদেশেও চাপে পড়তে পারেন আদানি ◈  বিএনপির জোরালো অবস্থান দ্বিকক্ষ সংসদের পক্ষে ◈ সৌদি আরবে গত এক সপ্তাহে অভিযানে প্রায় ২০ হাজার প্রবাসী গ্রেপ্তার ◈ আদালত চত্বরে শাজাহান খান ও সোবহানকে ফুলের মালা পরিয়ে দিয়ে মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন কর্মীরা ◈ সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার সময় বাড়ল ◈ শুরু হয়েছে আইপিএল নিলাম: প্রথম খেলোয়াড়ের দাম উঠল ১৮ কোটি ◈ নতুন নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান করলো জাতীয় নাগরিক কমিটি ◈ অন্য কোনো দেশে আশ্রয় না পেলে কী করতে যাচ্ছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী? ◈ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম যা বললেন ব্যাটারিচালিত রিকশা ইস্যুতে ◈ সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা এই জাতিকে একটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন উপহার দেব: সিইসি

প্রকাশিত : ১৬ জুলাই, ২০২১, ০৩:২৮ রাত
আপডেট : ১৬ জুলাই, ২০২১, ০৩:২৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রউফুল আলম: সামাজিক অবক্ষয় শুরু হয় যেখান থেকে

রউফুল আলম: গ্রামের স্কুল থেকে হাইস্কুল পাস করলাম। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে গিয়ে ভর্তি হলাম। ভিক্টোরিয়া কলেজে গিয়ে দেখলাম স্পষ্টত দুইটা জাতজিলা স্কুলের স্টুডেন্ট বনাম গ্রামের স্টুডেন্ট। আমি ইচ্ছে করেই জাত শব্দটা ব্যবহার করেছি। কারণ এই জাত ভেদ, কোনো অংশেই অন্য জাত ভেদের চেয়ে কম ছিলো না। কলেজে পড়ার সময় সাইবার বুলিং ছিলো না। কারণ ইন্টারনেট তখনো সবার হাতে হাতে, ঘরে ঘরে পৌঁছেনি। কিন্তু ছিলো প্রকাশ্য বুলি। সাইবার বুলিং আপনি এড়িয়ে যেতে পারবেন। চাইলে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকতে পারবেন। একাউন্ট ডি-অ্যাক্টিভেইট করতে পারবেন। কিন্তু স্কুল-কলেজে না গিয়ে থাকতে পারবেন?

সাইবার বুলির চেয়ে প্রকাশ্য বুলি ছিলো অনেক বেশি ভয়ংকর এবং গ্রাম থেকে শহরে গিয়েই প্রথম সেই বুলির সাথে পরিচয় হয়! বুলির অনেক ধরণ ছিলো। তবে ছাত্রীদের তুলনায়, ছাত্রদের মধ্যেই বিষয়টা বেশি ছিলো। সে সময় বুলিটা অনেকটা গ্রহণযোগ্য হয়ে গিয়েছিলো। আপনি শিকার হলে, বিচার চাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যতো অসহনীয়ই হোক না কেন, হজম করতে হতো। পালিয়ে বেড়াতে হতো।

গ্রামের ছাত্রদের অনেক বেশি বুলির শিকার হতে হতো। এর একটাই কারণ, ওরা গ্রাম থেকে পড়াশোনা করে এসেছে। জিলা স্কুলের কিছু স্টুডেন্ট ছিলো, যারা এই বুলিং করতো। বিষয়টা একটা সংস্কৃতিতে পরিণত হয়ে গিয়েছিলো। তখনও সমাজে এগুলো নিয়ে কেউ কেয়ার করতো বলে মনে হয় না। কিন্তু যারা শিকার ছিলো, তারা মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যেতো। জিলা স্কুলের স্টুডেন্টরা, গ্রাম থেকে আসা স্টুডেন্টদের বলতো ‘গেরাইম্যা’ এবং বাংলা শব্দ থেকে এক ধাপ এগিয়ে সেটার ইংরেজি নামও ছিলোভিলেইজ্যা! এই শব্দটা বহুল প্রচলিত ছিলো। মানসিকভাবে আঘাত করার জন্য এই শব্দটা দিয়েই শুরু হতো। কটাক্ষ করার জন্য, এমন বহু শব্দ ব্যবহৃত হতো।

এই সংস্কৃতি দেশের বেশির ভাগ স্কুল-কলেজে আছে। আমার পর্যবেক্ষণ হলো, নগরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বুলি অনেক বেশি হয়। এসব বুলির শিকার হয়ে কতো শিক্ষার্থী যে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়, সেটার অন্ত নেই। হয়তো দু-একজন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে, তখন খবর হয়। আমরা হৈচৈ করি। কিন্তু আহতের সংখ্যা অসংখ্য! স্টুডেন্টদের শুধু নম্বর, জিপিএ এসবের পেছনে ছুটার জন্য দিন-রাত আমরা তাড়া দিই। বাধ্য করি। কিন্তু সে তুলনায় বিনয়, নৈতিকতা, ভদ্রতা, শালীনতাÑএগুলো শেখানোর জন্য চেষ্টা করা হয় না। না পারিবারিকভাবে, না প্রাতিষ্ঠানিকভাবে। সামাজিকভাবে অবক্ষয় শুরু হয় সেখান থেকেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়