সোহেল রহমান: [২] বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারির কারণে পোশাক খাতের উৎপাদন ও সরবরাহ চেইনে বড় ধরনের ধস নেমেছে। এর ফলে পোশাক শিল্পে ক্রয়াদেশ ও মূল্য নির্ধারণী চেইনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ সঙ্কট দীর্ঘায়িত হয়ে আগামী বছর পর্যন্তও স্থায়ী হতে পারে। বাংলাদেশের পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের এ ধরনের গভীর ও দীর্ঘমেয়াদী সঙ্কট মোকাবেলার অভিজ্ঞতা নেই। এমতাবস্থায় পোশাক খাতে করোনার দ্বিতীয় টেউ মোকাবেলায় মধ্যমেয়াদী পুনরুদ্ধার চ্যালেঞ্জ অব্যাহত রাখা প্রয়োজন বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ’ (সিপিডি)। একই সঙ্গে পোশাক খাতের সঙ্কট মোকাবেলায় সরকার, মালিক, শ্রমিক ও ক্রেতাদের সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে সংস্থাটি বলেছে, মধ্যমেয়াদী পুনরুদ্ধার চ্যালেঞ্জে বিশ্ববাজারে পোশাকের মূল্য নির্ধারণে আন্তর্জাতিক স্টেক হোল্ডারদের মধ্যে সহযোগিতার একটি কাঠামো গড়ে তোলা দরকার।
[৩] শনিবার ‘কোভিড-১৯ সঙ্কট থেকে তৈরি পোশাক খাত পুনরুদ্ধার : পণ্য মূল্য নির্ধারণী চেইনের মাধ্যমে কি সমাধান সম্ভব’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে এমন অভিমত ব্যক্ত করেছে সিপিডি। বেসরকারি সংস্থা ‘সাউদার্ন ভয়েস’ এবং শ্রীলঙ্কার ‘পলিসি স্টাডিজ ইনস্টিটিউট’ (আইপিএস) যৌথভাবে এ গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করে। সংলাপে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
[৪] আন্তর্জাতিক স্টেক হোল্ডারদের মধ্যে অন্তত: এক বছর মেয়াদে সহযোগিতার একটি কাঠামো গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে সিপিডি বলেছে, পোশাকের মূল্য চেইন স্তর ও জাতীয় পর্যায়ের পদক্ষেপের সমন্বয়ে একটি বিকল্প প্রস্তাবের সুযোগ থাকা দরকার। মধ্যমেয়াদী পুনরুদ্ধার চ্যালেঞ্জের কৌশল, অ্যাপ্রোচ ও উপকরণ হবে উদ্ভাবনীমূলক, কার্যকর ও সময়াবদ্ধ। বিদ্যমান পদক্ষেপে মধ্যমেয়াদী থেকে টেকসই পুনরুদ্ধারে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
[৫] সিপিডি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্রুত ও টেকসই পুনরুদ্ধারে ব্যর্থতার কারণে পোশাক খাতে কোভিডের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। গত বছর এপ্রিল-মে মাসে পোশাক খাতে ক্রয়াদেশ এর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছিল। গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকের আমদানি কমেছে ২৩ শতাংশ। তবে গত জুনের পর ক্রেতাদের ক্রয়াদেশ ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। কিন্তু কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগমণী বার্তায় ক্রেতাদের মধ্যে নতুন করে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
[৬] পোশাক খাতের টেকসই উন্নয়নে বড় উদ্যোক্তাদের অটোমেশনে যাওয়া ও ভবিষ্যতে পণ্যের বৈচিত্রের ওপর গুরুত্বারোপ করে সিপিডি বলেছে, বাংলাদেশি সরবরাহকারীরা অনলাইনে বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সীমিত এক্সপোজার রেখেছেন। অনলাইনে বিক্রয়ের পরিমাণ খুব কম হলেও পণ্যের দাম ঐতিহ্যবাহী স্টোরে বিক্রয়ের তুলনায় ভাল।
আপনার মতামত লিখুন :