মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : [২] বিভিন্ন প্রজাতির ৫০ হাজার বৃক্ষ রোপনের উদ্যোগ নিয়ে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার বৃক্ষ রোপন করেছেন জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন।সংগঠনের সভাপতি সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথ বলেন,আমাদের সংগঠনের উদ্যোগে মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া,প্রতিটি পুলিশ স্টেশন এবং হবিগঞ্জ জেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানসহ দুই জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শ্রীমঙ্গল সিলেট আঞ্চলিক সড়কের দুপাশে এই বৃক্ষ রোপন করা হয়।তবে বৃক্ষের মধ্যে ফলজ বনজ ও ওষুধি বৃক্ষকেই বেশি রোপন করে চলেছেন সংগঠনটি।
[৩] জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথ বলেন,৫০ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ রোপনের লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি।ইতোমধ্যে ১০ হাজার বৃক্ষ আমরা রোপন করেছি ।
তিনি বলেন,২০২১ সালের মধ্যে আমরা টার্গেটে পৌঁছতে পারবো ।বিগত কয়েক বছরে মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৃক্ষ রোপনের পাশাপাশি হাওর অঞ্চলে ৭৭ টি সফল অভিযানের মাধ্যমে প্রায় পাঁচশ'র অধিক বিপন্ন পাখি ও বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে অবমুক্ত করেছি।
[৪] সাংবাদিক হৃদয় জানান ২০২১ সালের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে তার নেতৃত্বে মোট ৫০ হাজার বৃক্ষ রোপন করবে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বৃক্ষ রোপনের কোনো বিকল্প নেই জানিয়ে সাংবাদিক হৃদয় বলেন আমাদের দেশে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের উদাসীনতায় বন জঙ্গল উজাড় করে ফেলা হচ্ছে। যার ক্ষতিকর প্রভাব ইতোমধ্যে প্রতীয়মান। সাংবাদিক হৃদয় বলেন পৃথিবীতে সুস্থ সবলভাবে বেঁচে থাকতে হলে বিশুদ্ধ অক্সিজেন প্রয়োজন আর এই অক্সিজেনের সম্পূর্ণটাই আসে বৃক্ষ থেকে। অথচ সেই জীবন রক্ষাকারী বৃক্ষকেই উজাড় করে ফেলছি আমরা।
''আর নয় বৃক্ষ নিধন-আমরা করবো সবুজায়ন'' এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ধারাবাহিকভাবে বৃক্ষ রোপন থেকে শুরু করে চোরা শিকারিদের কাছ থেকে বিপন্ন পাখি ও বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে পরিচর্যা শেষে মুক্ত করে দিচ্ছেন।সাংবাদিক হৃদয় বলেন শুরুতে আমাদের কিছুটা আর্থিক সংকট ছিল। কিন্তু সে সময়ে ছেলের স্কলারশিপ থেকে প্রাপ্ত টাকা এবং স্ত্রীর সহায়তা নিয়ে গাছের চারা কিনে রোপন শুরু করি।
[৫] হৃদয় জানান,আমার ছেলেও প্রাণ প্রকৃতি ভালোবাসে। সেও আমাদের সমস্ত কার্যক্রমে অংশ নেয়।দেশের ঐতিহ্যবাহী রেইনফরেস্ট লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে রোপন করা বৃক্ষের বিভিন্নপ্রজাতির মধ্যে বেশিরভাগই ফলজ গাছ যাতে করে বন্যপ্রাণীদের খাবারের যোগান হিসেবে কাজ করে। তিনি উল্লেখ করেন খাদ্য সংকটে প্রায়শই বিভিন্ন বন্যপ্রাণী লোকালয়ে চলে যায়। তিনি বলেন অজ্ঞতার কারণে কেউ কেউ বিপন্ন এসব বন্য প্রাণী পিটিয়ে মেরে ফেলেন।
তিনি বলেন লাউয়াছড়ায় যদি পর্যাপ্ত ফলজ গাছ থাকতো তাহলে বন্যপ্রাণীরা খাদ্য সংকটে লোকালয়ে গিয়ে মারা পড়তোনা। এ বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় এনে লাউয়াছড়া ভেতরে ফলজ গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। বৃক্ষ রোপনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও এ প্রতিবেদকের কাছে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন সাংবাদিক হৃদয়।বন্যপ্রাণী প্রকৃতি ও সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন জানান,জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি হৃদয় দেবনাথ একজন আপাদমস্তক একজন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ ।বৃক্ষ রোপন ও বন্যপ্রাণী রক্ষনাবেক্ষন এমনকি চোরা শিকারিদের হাত থেকে বিপন্ন বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে আমাদের সাথে নিয়ে অবমুক্ত করেছেন।তাছাড়া জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডরসনের উদ্যোগে লাউয়াছড়া সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানসহ হবিগঞ্জ এবং মৌলভীবাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ধারাবাহিক বৃক্ষ রোপন করে যাচ্ছেন যার বেশিরভাগ বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে আমি নিজেও উপস্থিত ছিলাম ।তিনি বলেন সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথ এর মতো বৃক্ষ রোপন ও বন্যপ্রাণী উদ্ধারের মতো কার্যক্রমে তরুণ সমাজ এগিয়ে আসলে জীববৈচিত্র্য প্রাণ ফিরে পাবে ।
[৬] মৌলভীবাজার জেলাপ্রশাসক(ডিসি)মীর নাহিদ আহসান বলেন,জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথ বৃক্ষরোপন থেকে শুরু করে চোরা শিকারিদের কাছ থেকে বিপন্ন যেসব বন্যপ্রাণী ও পাখি উদ্ধার করে চলেছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় ।জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন এবং ব্যাক্তিগতভাবে সাংবাদিক হৃদয়ের সার্বিক সফলতা কামনা করেন তিনি ।
উল্লেখ্য বৃক্ষ সংরক্ষণ ও গবেষণায় গণমাধ্যমে ধারাবাহিক প্রতিবেদন তুলে ধরে সচেতনতা তৈরী করায় সিলেট বিভাগীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরুস্কার-২০১৮ অর্জন করেন সাংবাদিক হৃদয়। বর্তমানে তিনি দেশের স্বনামধন্য টেলিভিশন চ্যানেল জিটিভি ও জাতীয় দৈনিক সময়ের আলো/ইংরেজি ডেইলি বাংলাদেশ টুডে/এবং শীর্ষস্থানীয় অনলাইন পোর্টাল সারাবাংলা ডট নেট এ মৌলভীবাজার ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। একদিন সবুজে সবুজে ছেয়ে যাবে সমস্ত দেশ এমনটাই স্বপ্ন দেখেন সাংবাদিক হৃদয় ।
আপনার মতামত লিখুন :