শেখ রোকন : এন্ড্রু কিশোর মূলত প্লেব্যাক সিঙ্গার। কিন্তু চলচ্চিত্রের বাইরে অডিও অ্যালবামের জন্যও গেয়েছেন। যেমন তার বিখ্যাত গান ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’ প্রথমে অ্যালবামেই প্রকাশ হয়েছিল। খ্রিস্টীয় উপাসনা সংগীতও গেয়েছেন তিনি। যেমন ‘কান্দি একা একা নদীর কূলে’। এই তিন ধারায় তার জনপ্রিয় যেসব গানে নদী এসেছে, তেমন দশটি গান নদীবন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করছি। ব্রাকেটে থাকলো গানের প্রথম লাইন ও চলচ্চিত্র বা অ্যালবামের নাম।
[১] আমি নদী হয়েও পেলাম না সাগরের দেখা/শুকনো বালুচরের মতো সারাটি জীবন রয়ে গেলাম বড় একা/আসলে মানুষ বড় একা (দুঃখ ছাড়া কিছু নয়)। [২] ঐ নদী চায় বারে বারে সাগর ডাকুক/তরু চায় লতা তারে জড়িয়ে রাখুক (সবাই তো ভালোবাসা চায়/ সারেন্ডার)। [৩] সাগরেরই টানে যেমন নদী ছুটে যায়/তেমনি করে আমার এ মন তোমায় পেতে চায় (আমার বুকের মধ্যেখানে/নয়নের আলো)। [৪] চাঁদের সাথে আমি দেব না তোমার তুলনা/নদীর সাথে আমি দেব না তোমার তুলনা/তুমি চাঁদ হতে যদি দূরেই চলে যেতে/তুমি নদী হতে যদি দূরেই চলে যেতে (আশীর্বাদ)।
[৫] ভালোবাসার নদী তুমি/আমি তোমার দুই কুল (তুমি মোর জীবনের ভাবনা/আনন্দ অশ্রু)। [৬] জানে জানে বনের পাখি জানে গাঙের পানি/ যতনেতে আছে মনে তোমার কথা খানি (কী দিয়া মন কাড়িলা/ অশান্তি)। [৭] ঐ ঘাসের কাফনেতে দেখ আকাশ আছে শুয়ে/ঐ বরফ গলা নদী নামে পাহাড় যে বেয়ে (জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প/ ফিরে ফিরে আসি)। [৮] আমি ভ্রমর মধুমাসে তুই যে বনফুল/আমি জোয়ার প্রেমের গাঙে তুই যে তারি কূল (তুই যে আমার মিলনমালা রে বন্ধ/নিষ্পাপ)। [৯] নদীতে জল ছাড়া ঢেউ ওঠে না/ভোমরা না এলে ফুল ফোটে না (মগের মুল্লুক)। [১০] কান্দি একা একা নদীর কূলে দেখি ঘাটে তরী নাই (খ্রিস্টিয় পূজা সঙ্গীত)।
এন্ড্রু কিশোর শতাধিক চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন। এর মধ্যে নদী সংশ্লিষ্ট কয়েকটি চলচ্চিত্রের নাাম : লালচর (২০১৫), বিদ্রোহী পদ্মা (২০০৫), বেদের মেয়ে জোস্না (১৯৮৯)। ‘দুঃখ বিনা হয় না সাধনা’ সঙ্গীতের জন্য শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন যে চলচ্চিত্রে, তার নাম ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’ (১৯৯১)। তিনি জন্মেছিলেন গঙ্গা বা পদ্মার তীরে, দেশ-বিদেশ ঘুরে শেষ শয্যাও সেখানে নিলেন। বিদায়, পদ্মাপাড়ের এন্ড্রু কিশোর।
আপনার মতামত লিখুন :