আজাহার আলী সরকার: আমার সাংবাদিকতা শুরুর প্রথম অভিভাবক ছিলেন ফারুক কাজী ভাই। সিনিয়র এই সাংবাদিক ছিলেন আইন-সাংবাদিকতার ‘চলন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া’। তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সেক্রেটারী ও দিল্লি দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার এবং হাই কমিশনারে (ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব) পালনের সময়ে বিভিন্ন সংবাদের তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে পরস্পরের প্রতি ছিলাম আস্থাশীল। এটা ছিল আমার জীবনের বড় একটি মাইলফলক।
শুধু তাই নয়, এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থাকার সুবাদে দেশ-বিদেশের কূটনৈতিক শিষ্টাচারসহ নানাবিধ তথ্য জানাতেন আমাকে। ঠিক একইভাবে বাসস এবং ইউএনবিতে কর্মরত অবস্থায় পরস্পরকে সহযোগিতা করেছি। তিনি সৎ এবং খুব ভালো মানুষ ছিলেন। আরশী নামে একমাত্র কন্যা সন্তানের জনক তিনি। তার মেয়েটিও খুব মেধাবী এবং বাবার মতোই ভালো মানুষ। ফারুক ভাই বেশ কিছুদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। শারীরিক অসুস্থতা ছাড়াও বকেয়া বেতনসহ মোটা অংকের টাকা বাসস থেকে না পাওয়ার কারণে মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত অবস্থায় দিনাতিপাত করছিলেন ফারুক কাজী। তার পাওনা টাকা আদায়ের লক্ষ্যে তথ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে আমাকেও সাথে নিয়ে বেশ কয়েকবার গেছেন তিনি।
ফারুক ভাইয়ের মৃত্যুতে আমি খুবই মর্মাহত ও শোকাহত। ডেপুটি প্রেস-সেক্রেটারী এবং দিল্লিতে প্রেস মিনিস্টারের দায়িত্ব পালনের সময়ে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে (যে সব তথ্য ও অভিজ্ঞতা আমার সাথে শেয়ার করতেন) তাকে নিয়ে বলার বা লেখার আমার অনেক কিছু আছে, তবে শোক ও মনকষ্টের কারণে এই মুহূর্তে কিছু লিখতে পারছি না। ফারুক কাজী ভাই বৃহস্পতিবার রাতে ঘুমন্ত অবস্থা মারা যান, ( ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)।
কর্মজীবনে ফারুক কাজী রাজশাহীর দৈনিক বার্তা, দৈনিক আজাদ, দৈনিক বাংলার বাণী, দৈনিক দেশবাংলা, অবজারভার, বাসস, ইউএনবিতে কাজ করেছেন। সিনিয়র এই সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার উপ-প্রেস সেক্রেটারি ও দিল্লি দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টারও ছিলেন। তিনি তার অগণিত ভালো কাজের দ্বারা সকলের মাঝে বেঁচে থাকবেন। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের এমন অসহ্য শোক কাটিয়ে উঠতে শক্তি দান করুন। আমিন।
লেখক : দৈনিক আমাদের সময়ের সাবেক ডেপুটি এডিটর
আপনার মতামত লিখুন :