ডেস্ক রিপোর্ট : [২] স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান কর্তা ব্যক্তি হলেও কোভিড-১৯ তথা করোনায় আক্রান্ত হয়ে সরকারি কোনো হাসপাতালের ধার ঘেষেননি প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল কালাম আজাদ। এমনকি চেপে গেছেন তার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরও। পরে অবশ্য নিজেই স্বীকার করেছেন তিনি আক্রান্ত হয়ে প্রথমে বাসায় আইসোলেশনে পরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
[৩]তবে কোন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি না জানালেও আবুল কালাম আজাদ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসা নিয়েছেন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্ভরশীল সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
[৪] ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল রাজধানীতে থাকার পরও সেখানে চিকিৎসা না নিয়ে স্বাস্থ্য খাতের একজন নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের ব্যক্তির সিএমএইচে চিকিৎসা নেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে।
[৫]সরকারি হাসপাতালের ওপর ডিজি হেলথেরই যদি আস্থা না থাকে তাহলে সাধারণের অবস্থা কী হতে পারে সেই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। যদিও স্বাস্থ্যের ডিজি সরকারি হাসপাতালে না গেলেও অনেক জ্যেষ্ট চিকিৎসকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এসব হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হচ্ছেন।
[৬]যদিও এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা ডিজি আবুল কালাম আজাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর শুরুতে বাসায় আইসোলেশনে থাকলেও ক্রমে অসুস্থবোধ করায় হাসপাতালে যেতে হয়েছে তাকে। সেক্ষেত্রে নিজের এবং পরিবারের পছন্দেই সিএমএইচে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। তবে হাসপাতালের নাম উল্লেখ না করে আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া করোনা আক্রান্ত রোগীর যে অভিজ্ঞতা হয়, সেগুলোও সঞ্চয় করেছেন।
[৭]করোনার প্রকোপ শুরুর পর থেকেই বেশ তৎপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। করোনায় আক্রান্ত, মৃত্যুর সব খবরের পাশাপাশি এই অবস্থায় মানুষের করণীয় নিয়ে প্রতিনিয়ত তথ্য দিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রায়ই গণমাধ্যমের সামনেও আসতেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজদ।
[৮]কিন্তু হঠাৎ করেই গত ২১ মে থেকে অধিদপ্তরে না আসায় গুঞ্জন শুরু হয় তিনি করোনায় আক্রান্ত কি-না। তবে মহাপরিচালক নিজে এবং অধিদপ্তর থেকে বলা হয়, অসুস্থতার কারণে তিনি বাড়িতে বিশ্রামে আছেন। শুরু থেকেই তার করোনায় আক্রান্তের বিষয়টি গোপন রাখা হয়। যদিও তিনি আক্রান্ত হয়েছেন এমন খবর গণমাধ্যমে ছাপা হয়। তা নিয়ে প্রতিবাদও আসেনি তখন।
[১০] জানা যায়, বাসায় আইসোলেশনে থাকলেও একসময় স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। পরে সুস্থ হয়ে গত ১ জুন মহাখালীতে নিজ কার্যালয়ে যান অধ্যাপক আজাদ। সেসময় ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বে থাকা নাসিমা বেগমসহ কর্মকর্তারা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
[১১]এসময় তিনি সুস্থ হওয়ায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সেইসঙ্গে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সবাইকে নিয়ে আরো জোরালো গতিতে কাজ এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। তবে এত সময়েও অধিদপ্তরের কেউ তার হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করেননি।
[১২]এদিকে গত বৃহস্পতিবার আবুল কালাম আজাদ ‘করোনা ট্রেসার বিডি’ নামের অ্যাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিয়ে বলেন, ‘আমি আপনাদের দোয়ায় সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছি। সাধারণত যারা সংক্রমিত হয়, তাদের সবাইকে আমি রোগী বলি না, তারা কোভিড সংক্রমিত ব্যক্তি।’
[১৩]‘কিন্তু আমি একজন রোগী ছিলাম এবং আমাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। একজন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর যে অভিজ্ঞতা হয়, সেগুলোও আমি সঞ্চয় করেছি। মানুষকে ব্যক্তিগতভাবে সতর্ক হতে হবে। তবে এটা সত্য, আমরা গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি না কার কোভিড হবে, আর কার হবে না।’
ঢাকাটাইমস
আপনার মতামত লিখুন :