দৌলতখান(ভোলা)প্রতিনিধি : [২] ইলিশের মৌসুমকে সামনে রেখে ভোলার দৌলতখানের মেঘনায় মাছ ধরার নৌকার কারিগররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইতিমধ্যে ছোট বড় প্রায় শতাধিক নৌকা তৈরি করা হয়েছে। এসব নৌকায় ইঞ্জিন বসানোসহ রংয়ের কাজ চলছে পুরোদমে। বছরের অন্য মাসগুলো যেমনই কাটুক, বর্ষার অপেক্ষায় তারা অধির আগ্রহে বসে থাকেন। কারণ বর্ষায় আড়তদাররা তাদের মৌসুমি ব্যবসার জন্য নৌকা তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঠ কিনে মজুদ করতে থাকে। আর তখনই বেড়ে যায় কারিগরদের কদর। তারাও প্রস্তুত থাকে নৌকা তৈরির যন্ত্রপাতি নিয়ে। যেমন- হাতুড়ি, বাটাল,করাত ইত্যাদি।
[৩] জানা যায়, দৌলতখান পৌরসভা সহ উপজেলা ভবানীপুর,চরপাতা,মেদুয়া,সৈয়দপুর, হাজীপুর ও মদনপুর ইউনিয়নে অসংখ্য মানুষ মেঘনায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। আর নদী বা সাগরে মাছ ধরার অন্যতম উপকরণ হচ্ছে নৌকা বা ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। প্রতিবছর ইলিশ মৌসুম সামনে রেখে এসব ইউনিয়নের নদী বা সাগর পাড়ে নৌকা তৈরি বা মেরামতের হিড়িক পড়ে যায়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি, জোরেশোরে চলছে নৌকা তৈরির কাজ। তাই বাজারে কাঠের দাম একটু বেশি হলেও কারীগররা নৌকা তৈরিতে মনোযোগ দিয়েছেন। সরেজমিন ঘুরে পৌরসভা সহ উপজেলার ভবানীপুর, চরপাতা, মেদুয়া, সৈয়দপুর, হাজীপুর ও মদনপুর এলাকার বিভিন্ন স্থানে নৌকা তৈরি ও মেরামতের দৃশ্য দেখা গেছে। কাঠমিস্ত্রীদের পাশাপাশি নৌকার মালিকরা নৌকা তৈরির উপকরণ সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
[৪] পৌরসভার বেল্লাল মাঝী বলেন, মৎস্য আহরণ করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করি। উপকূলের মানুষের জীবন-জীবিকার সাথে নৌকা জড়িত। এ জন্য ইলিশের মৌসুম আসার আগে-ভাগে নৌকা তৈরি ও পুরাতন নৌকা মেরামত করে থাকি। একটি নৌকা তৈরি করতে খরচ হয় দেড় লাখ থেকে দুই লাখ টাকা। আর বড় ট্রলার হলে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা খরচ পড়ে। নৌকার কারিগর (কাঠমিস্ত্রী) দিনা জানান, ছোট-বড় নৌকা তৈরিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে গর্জন,মেহেগুনী,আকাশি,কাঁঠাল,কড়ই রেন্টি গাছের কাঠ বেশি ব্যবহার হয়।
[৫] তিনি আরও জানান, উপজেলায় প্রায় দুই শতাধিক কাঠমিস্ত্রী রয়েছে। কম আর বেশি সকলে এখন নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। তাদের পাশাপাশি আরও অন্তত তিন শতাধিক হেলপার এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। প্রতিবছর এ সময়ে নৌকা তৈরির হিড়িক পড়ে যায়। একটি নৌকা তৈরি করতে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগে। নৌকার আকার ও প্রকার ভেদে মজুরি নেওয়া হয়। তবে একটি নৌকা তৈরি করতে কমপক্ষে ৪০-৬০ হাজার টাকা মজুরি আসে।
[৬] দৌলতখান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহাফুজুল হাসনাইন জানান, নৌকা তৈরীর শিল্প হচ্ছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতায়। তবে জেলেদের সেপটির জন্য আমাদের একটি প্রকল্প আছে। এ প্রকল্প বাংলাদেশে এখনও ওইভাবে কার্যক্রম শুরু হয়নি। এ প্রকল্প শুরু হলে জেলেদের নিয়ে তারা কাজ করবে। তিনি আরও দৌলতখানের জেলেরা মেঘনায় মাছ শিকার করে প্রকৃত সুবিধা পায়না। তারা মহাজনের দাদন ও বিভিন্ন লোন নিয়ে থাকে। সম্পাদনা : জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :