শিরোনাম
◈ বিমান বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের  উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ◈ নির্বাচনী মাঠ প্রস্তুত হচ্ছে, আস্থা রাখতে চায় দলগুলো ◈ বর্ডার-গাভাস্কার সিরিজ, ভারতের চাপে অস্ট্রেলিয়া ◈ কপ২৯: ২০০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দে ইইউর সমর্থন চাইল বাংলাদেশ ◈ মামলা করলে ৫ লাখ টাকা এবং প্রতি মাসে ২০ হাজার করে পাওয়া যাবে ◈ কলকাতার মেট্রোরেলে নারী যাত্রীকে বাংলা বাদ দিয়ে হিন্দিতে কথা বলা নিয়ে বাকবিতণ্ডা (ভিডিও) ◈ বাংলাদেশসহ ১২৪ দেশে পা রাখলেই গ্রেফতার হবেন নেতানিয়াহু, দেশগুলো হল.. ◈ ‘বুক কাঁপে না  মিথ্যাচার করতে?’ ট্রলের জবাবে  উপস্থাপিকা দীপ্তি ◈ এবার পশ্চিমাদের ওপর হামলার ইঙ্গিত পুতিনের ◈ পাঁচটি দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা

প্রকাশিত : ১৪ মে, ২০২০, ০৫:৩৩ সকাল
আপডেট : ১৪ মে, ২০২০, ০৫:৩৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] জার্মানির কসাইখানায় শ্রমিকদের ‘আধুনিক দাসত্ব’

রাজু আলাউদ্দিন : [২] বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পরপরই পশ্চিম জার্মানির একটি কসাইখানার প্রায় আড়াইশ’ শ্রমিক কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন। জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

[৩] ওই শ্রমিকরা জরাজীর্ণ ডর্মে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গাদাগাদি করে বাস করেন। ডর্মের অবস্থা দেখতে সেখানে যাওয়া ডয়চে ভেলের একজন প্রতিনিধি এক শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলেন। নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া অঙ্গরাজ্যের ছোট্ট গ্রাম রোজেনডায় ইটের তৈরি দোতলা একটি ডর্মে বসবাস করেন ৫০ বছরের ওই ব্যক্তি। তিনি রোমানিয়া থেকে জার্মানিতে এসেছেন। ইংরেজি বা জার্মান কোনো ভাষাতেই তিনি ঠিকঠাক কথা বলতে পারেন না। ওই ব্যক্তি ডয়চে ভেলেকে জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে তাদের ডর্মটি লকডাউন করা হয়েছে। তবে ভবনের কোথাও ভাইরাসের কারণে সেটি লকডাউন করার চিহ্ন দেখতে পাননি প্রতিবেদক। না কোনো সরকারি নোটিস, না হাতে লেখা কোনো চিঠি।

[৪] ওই ব্যক্তি কাগজের তৈরি একটি মাস্ক পরে ছিলেন। যেটির ফিতা তার ঘাড়ের উপর আলগা ভাবে ঝুলছিল। তিনি ওয়েস্টফ্লাইস নামে একটি কসাইখানায় কাজ করেন। যেখানে তার সঙ্গে রোমানিয়া, বুলগেরিয়া এবং পোল্যান্ডের আরো কয়েকশ শ্রমিক আছেন। সোমবার বিকেলে জানা যায়, কসাইখানাটির অন্তত ২৪৯ জন কর্মীর কোভিড-১৯ ‘পজিটিভ’। আক্রান্তদের অনেকেই বিদেশি শ্রমিক। করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য ওয়েস্টফ্লেইসের ৯৩০ জন কর্মীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। খবর প্রকাশের পর কর্তৃপক্ষ কসাইখানাটি আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে।

[৫] ডয়চে ভেলের প্রতিনিধি যখন ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন আরও কয়েকজন রোমানীয় শ্রমিক কাছের একটি সুপারমার্কেট থেকে বাড়ি ফেরেন। কোনো মালিকই বিদেশ থেকে আনা এসব শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তার দায়িত্ব নিচ্ছেন না বলে মনে করেন কোসফেল্ড গ্রিন পার্টির মুখপাত্র অ্যান-মনিকা। তিনি বলেন, স্থানীয় পৌরসভা, অঞ্চল এবং রাজ্য কর্তৃপক্ষ এ সংকট সমাধানের চেষ্টা না করে বরং সমস্যাটাকে একজন আরেকজনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। কেউই দায়িত্ব নিতে চাচ্ছে না। তার একটা কারণ হতে পারে, ওয়েস্টফ্লেইস সাবকনট্রাক্টরের মাধ্যমে পূর্ব ও দক্ষিণপূর্ব ইউরোপের দেশগুলো থেকে কর্মীদের নিয়োগ দেয়। সেক্ষেত্রে শ্রমিকদের কেউ আক্রান্ত হলেই কেবল জার্মানির সরকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা তাদের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারেন। কর্মীদের ডর্মে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া নিয়ে ওই সাবকনট্রাক্টররা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলেও আমার মনে হয় না।

[৬] বিদেশ থেকে আসা এ শ্রমিকদের সঙ্গে এমন অমানবিক ব্যবহার এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের কষ্ট দেয়। কসাইখানার শ্রমিকদের ডর্মের কাছেই বসবাস করা এক নারী বলেন, তারা গরিব মানুষ। তাদের অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় সংক্রমিত হওয়ার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় অনেকে এখন সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে ওই ডর্মের কাছের সুপারমার্কেটে যাওয়া বাদ দিয়েছেন, যেখানে সাধারণত শ্রমিকরা যায়।

[৭] ডর্ম থেকে ১৫ মিনিট গাড়ি চালিয়ে গেলেই ওয়েস্টফ্লেইস কসাইখানার প্রধান প্রবেশ দ্বার৷ সেখানে পেটার কোসেন নামে এক ব্যক্তি ও তার বন্ধুরা রোমানীয় ওই শ্রমিকদের পক্ষে প্লাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। প্লাকার্ডে লেখা ‘আধুনিক দাসত্বের অবসান চাই’। তিনি বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে বিপর্যয় চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। অনেক শ্রমিক স্যাঁতস্যাতে ডর্ম বা জরাজীর্ণ বাড়িতে বসবাস করেন। সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসবাস অসম্ভব। তারা যে বাসে করে কসাইখানায় যাতায়াত করেন সেটাতেও গাদাগাদি করে বসতে হয়।

[৮] এ ঘটনায় স্থানীয় পৌরসভার কাজের ধরন ও সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। যেখানে সোমবার থেকে নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া অঙ্গরাজ্যে লকডাউনের বেশ কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে, সেখানে, এ ঘটনার কারণে কোসফেল্ড পৌরসভাকে আগামী অন্তত ১৮ মে পর্যন্ত লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধ মানতে হবে। সময় টিভি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়