মাজহারুল ইসলাম : [২] বাংলাদেশ থেকে যারা সোয়ান ধুমকেতুর আলোকছটা দেখতে চান, তাদের আকাশের দিকে চোখ রাখতে হবে ভোর হওয়ার আগে আগে। সেহেরি খেয়ে মেঘমুক্ত থাকলে আকাশের উত্তর-পূর্ব পাশে যে নীলাভ বড় তারাটি চোখে পড়বে, সেটিই সোয়ান ধূমকেতু।
[৩] করোন ভাইরাস সংক্রমণ ঘিরে উদ্বেগ-আশঙ্কায় অন্য অনেক কিছুর মতোই চাপা পড়েছে মহাজাগতিক ঘটনার প্রতি মানুষের কৌতুহল। তাই বলে প্রকৃতি তো থেমে থাকে না। আমাদের ছায়াপথ মিল্কিওয়েতে ১১ হাজার ৫৯৭ সৌরবর্ষ পাড়ি দিয়ে গত মার্চের শেষ সপ্তাহে ঢুকে পড়ে অতিকায় একটি ধূমকেতু। এর লেজ রাজহাসের মতো লম্বা হওয়ায় নামকরণ হয়েছে সোয়ান ধুমকেতু। মহাকাশ বিজ্ঞানীদের সংকেতিক ভাষায় এর নাম সি-২০২০এফবি।
[৪] বিজ্ঞানীরা মনে করছেন মঙ্গলবার সোয়ান পৃথিবী থেকে প্রায় ৭ কোটি কিলোমিটার দূরে ছিল। বুধবার মধ্যরাতের পরই এই ধূমকেতু প্রবেশ করবে পৃথিবীর কক্ষপথে। রাতের আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে খালি চোখে ধুমকেতুটি দেখা যাবে আকাশের উত্তর-পূর্ব অংশে শেষরাতে সূর্য ওঠার আগে। ধূমকেতু সবচেয়ে উজ্জ্বল দেখা যাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে।
[৫] বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সোয়ান ধূমকেতু ২৪ ঘণ্টা আগে পৃথিবী থেকে প্রায় ৭ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। বর্তমানে পৃথিবী থেকে সোয়ানের দূরত্ব ৮৫,০৭১,৭৭৮ কিলোমিটার। এর আলো পৃথিবীতে আসতে এখন সময় লাগছে ৪ মিনিট ৪৩ দশমিক ৭৬৮৯ সেকেন্ড। এটি মধ্যরাতে পর পৃথিবীর আরো কাছে ৬৫ কোটি কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করবে।
[৬] গত মার্চের শেষ সপ্তাহে নাসার মহাকাশচারী মাইকেল মাতিয়াজুর টেলিস্কোপে প্রথম ধরা পড়ে সোয়ান ধূমকেতু। তারপর ধীরে ধীরে উজ্জল হচ্ছে এই ধূমকেতু। এর লেজের অংশটুকু একবারেই নীল। আর লেজের অংশটুকু বিস্তৃতিই হচ্ছে ১৬ মিলিয়ন কিলোমিটার ।
[৭] মিল্কওয়েতে প্রবেশ আর টেলিস্কোপে ধরা পড়ার পর অচেনা এই ধূমকেতুটি মহাকাশ বিজ্ঞানীদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল। আপতদৃষ্টিতে এটাকে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসতে দেখা যায়। অনেক গাণিতিক আর জ্যামিতিক হিসাব-নিকাশের পর হাসি ফুটে বিজ্ঞানীদের মুখে। তারা জানান, সোয়ান ধূমকেতুটি পৃথিবীতে আছড়ে বিন্দু পরিমাণ সম্ভাবনা নেই। কমপক্ষে ৫০ কোটি কিলোমিটার দূর থেকে এটি আমাদের গ্রহকে অতিক্রম করে সূর্যের দিকে এগিয়ে যাবে। তাই মহাকাশের এই অতিথি নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। পূর্বপশ্চিম, প্রবাসনিউজ২৪
আপনার মতামত লিখুন :