নইন আবু নাঈম, শরণখোলা প্রতিনিধিঃ [২] কথায় বলে চোরের মায়ের বড় গলা। ঠিক তেনমি এক ঘটনায় বিপাকে পড়েছে খোদ বনবিভাগ। সুন্দরবনের হরিণ শিকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে উল্টো ফেঁসে গেছে বনরক্ষীরা। চোরা শিকারীদের পাল্টা মামলার শিকার হয়ে এখন এক প্রকার পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাদের। চোরাদের এমন ঔদ্ধত্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে।
[৩] চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি বাগেরহাটের শরণখোলা থানায় চার হরিণ শিকারী ও অবৈধ কাঁকড়া আরণকারী পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার ধাবড়ী গ্রামের আ. হক শেখের ছেলে ইউসুফ শেখ (৩৫) এবং বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার বাঁশতলা গ্রামের হাছেন মুসুল্লির তিন ছেলে আ. হামিদ মুসুল্লি (৩৫), হানিফ মুসুল্লি (৩৩) ও আসাদ মুসুল্লির (৩০) নামে মামলা দায়ের করে বনবিভাগ। এ ঘটনার সাড়ে তিন মাস পর এসে গত ১মে চোরেরা জেলে পরিচয়ে বনরক্ষীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলে শরণখোলা থানায় পাল্টা মামলাটি দায়ের করে।
[৪] পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) এনামুল হক জানান, গত ১৬ জানুয়ারী রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের তাম্বলবুনিয়া টহল ফাঁড়ির বনরক্ষীরা নিয়মিত টহলকালে বনের কলামুলা এলাকায় দুইটি ডিঙ্গি নৌকা দেখতে পেয়ে চ্যালেঞ্জ করে। বনরক্ষীরা ওই চার ব্যক্তিকে আটকে নৌকা দুইটিতে তল্লাশি করে হরিণ শিকারের ফাঁদ, আহরণ নিষিদ্ধ কাঁকড়া ও বেশ কিছু কাঁকড়া ধরা বাঁশের চাই (চারো) জব্দ করে। এসময় ওই চোরা শিকারীরা অবস্থা বেগতিক দেখে বনরক্ষীদের উপর হামলা চালিয়ে বনে পালিয়ে যায়। তাদের হামলায় বনরক্ষী আবুল বাশার ও মোতালেব হোসেন গুরুতর আহত হন।
[৫] এ ঘটনায় ১৭ জানুয়ারী তাম্বলবুনিয়া টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বাদী হয়ে শরণখোলা থানায় চারজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-০৫, ধারা-৩৩২,৩৫৩,৩০৭,৩৭৯,৪২৭,৫০৬ পেনাল কোর্ট।
[৬] অপরদিকে, আসামিদের পক্ষ নিয়ে মোংলা উপজেলার মিঠাখালী গ্রামের সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে বনরক্ষীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে শরণখোলা থানায় একটি পাল্টা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তাম্বলবুনিয়া টহল ফাঁড়ির ওসি মিজানুর রহমান, বিএম আবুল বাশার ও মোতালেব হোসেনকে আসামী করা হয়।
[৭] উভয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) শরণখোলা থানার এসআই স্বপন কুমার জানান, বন বিভাগের দায়ের করা মমলাটি তদন্তে প্রমানিত হওয়ায় আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়েছে। অপর মামলাটির তদন্ত চলছে।
[৮] শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ বলেন, মেডিকেল সার্টিফিকেট নিয়ে এসে মারপিটের ঘটনা বর্ণনা করায় মামলা নেওয়া হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া না গেলে বনবিভাগের পক্ষে ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়া হবে। সম্পাদনা : জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :