নিউজ ডেস্ক : করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে নজিরবিহীন লকডাউনে অবরুদ্ধ গোটা বিশ্ব। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে দেশের বিভিন্ন খাতে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যে দেখা গেছে, গত এপ্রিলে রপ্তানি কমেছে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮৩ শতাংশ। ওই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৩০৩ কোটি মার্কিন ডলার। এ বছরের এপ্রিলে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৫২ কোটি ডলার। এমন অবস্থায়ও আশা জাগিয়েছে দেশের সোনালি আঁশ। পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। দৈনিক আমাদের সময়
প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক, চামড়াসহ সব খাতের অবস্থাই করুণ, সেখানে চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিলে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৭৯ কোটি ১৩ লাখ ডলার আয় করেছে। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ। গত অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে ৬৯ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।
সোনালি আঁশের সোনালি দিন ধরে রাখতে উদ্যোক্তারা প্রণোদনা দাবি করেছে। তাঁরা জানিয়েছেন, পাটশিল্প বাঁচাতে ২ শতাংশ সুদে দশ হাজার কোটি টাকা দরকার। ইতোমধ্যে ওই পরিমাণ অর্থ সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ)। বিজেএমএর চেয়ারম্যান মোহাম্মেদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী বাণিজ্য সচিবের কাছে এ বিষয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। খবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রের।
চিঠিতে বলা হয়, করোনায় পাটশিল্পে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। পাট ও পাটপণ্য রপ্তানি আদেশ ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাতিল ও পরিবর্তন হচ্ছে। নতুন করে রপ্তানির আদেশও নেই। পাশাপাশি পাটকল শ্রমিকদের কর্মসংস্থান ঠিক রাখতে মিল চালু রাখতে হচ্ছে। কিন্তু উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করতে না পারায় চলতি মূলধন শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। ফলে ব্যাংক ও
আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারলে কুঋণ তৈরি হয়ে দেশের আর্থিক খাতে বিরাট সংকট দেখা দেবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা চলতি বছর শেষে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয় ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। কিন্তু করোনার প্রভাবে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এ অবস্থায় আমাদের লক্ষ্য পাট শিল্প চালু রাখা। ফলে প্রয়োজন হবে দশ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়াও পাটকলগুলোর সব ধরনের ব্যাংক ঋণ ও আগামী দুই কোয়ার্টারের জন্য সুদ মওকুফ ও এক বছরের জন্য মরাটোরিয়াম সুবিধা দরকার। পাশাপাশি আগামী ছয় মাসের জন্য ভ্যাট, ট্যাক্স, এআইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের কিস্তি বিলম্বিত করার সুযোগ দেওয়া; গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিল এক বছরের জন্য মুলতবি; শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা দরকার।
বিজেএমইএ মহাসচিব বারিক খান গতকাল আমাদের সময়কে বলেন, পাটশিল্পের এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে ২ শতাংশ সুদে দশ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করতে হবে। সরকার ৩০ হাজার কোটি টাকার যে তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে সেখান থেকে পাটশিল্প উপকৃত হবে না। তিনি বলেন, রপ্তানি ভর্তুকির অর্থছাড়ের সময় পাট খাতের জন্য আলাদা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পাটশিল্পের জন্য আলাদা দশ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করতে হবে। তবেই পাটের উৎপাদন, রপ্তানি অব্যাহত থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :