ড. এমদাদুল হক : প্রিয় আত্মন, তুমি বিনে আকুল পরাণ। যেতে চায় না বাইরে। থাকতে চায় না ঘরে। অনুক্ষণ বিক্ষত হৃদয়। শ্রান্ত চোখ। জেগে জেগে স্বপ্ন দেখি। তুমি এসেছো। হঠাৎ আঁতকে উঠি- কোথায় তুমি? আবার শুরু করি ভেঙে যাওয়া স্বপ্ন। স্বপ্নের ভাঙা-গড়ায় বয়ে যায় জীবন। জীবনের জল বাষ্প হয়ে উড়ে যায় আকাশে। মেঘ হয়ে ভাসে দেশ থেকে দেশান্তরে, যুগ থেকে যুগান্তরে। জগৎ পরিভ্রমণ করে ফিরে আসে মাটির ঘটে। তবুও থামে না জীবনচক্রের বিবর্ণ ঘূর্ণন। ভালোবাসার ময়না পাখিÑ রাখি খাঁচায় ভরে। যে ‘সুন্দর’ খাঁচায় বন্দি, তা কেমন সুন্দর? যে ‘সত্য’ খাঁচায় বন্দি, তা কেমন সত্য? মনে আছে তোমার? স্কুল পালিয়ে ‘সুজন-সখী’ দেখতে গিয়েছিলাম আমরা দুজন। কী আনন্দই না হয়েছিলো সেদিন। খাঁচা ভাঙার আনন্দ। ভালোমন্দের দ্বন্দ্ব, যেই না জাগলো মনে, গেয়ে উঠলে তুমিÑ ‘সব সখিরে পার করিতে নেবো আনা আনা, তোমার বেলায় নোেব সখি তোমার কানের সোনা, আমি প্রেমের ঘাটের মাঝি তোমার কাছে পয়সা নেবো না’। পশ্চিমের আকাশে জমছে স্নিগ্ধ মেঘ। বৃষ্টি হয়ে ঝরবে আমার দুচোখে। বাতাসে বইছে আমার দীর্ঘশ্বাস। দীর্ঘশ্বাস অনন্ত, অসীম। যীশুর তিরস্কার শুনিÑ ‘যখন পশ্চিমে মেঘ উঠিতে দেখো, বলিয়া থাকÑ বৃষ্টি আসিতেছে, আর সেইরূপই ঘটে। যখন দখিনা বাতাস বহিতে দেখো, বলিয়া থাকোÑ বড় রৌদ্র হইবে, আর সেইরূপই ঘটে। তোমরা আকাশের ভাব বুঝিতে পারো, নিজের ভাব বুঝিতে পারো না, এ কেমন’? কৃষ্ণচূড়া গাছে জ্বলছে আগুনের ফুল। ইব্রাহিমের বিশ্বাস। সবার মুখে ঝুলে থাকা চূর্ণকুন্তল। সারাহ বললেন, ‘আমাকেও পুড়াও ঐ আগুনে’। প্রেম তাকে সাহসী করলো। আহা! সর্ষে দানার মতো একটু বিশ্বাসও যদি থাকতো। ঘর ভরে গেছে মাকড়সার জালে। আরও জাল বুনে যাচ্ছে নতুন মাকড়সারা, অবিরত। কোথায় বিশ্বাস? আর কোথায় জীবনযাপন? নূহের নৌকায় তোলো জোড়ায় জোড়ায়। আসুক প্লাবন। শুদ্ধ হোক ধরা। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :