ডেস্ক রিপোর্ট : [২] স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিভিন্ন দল থেকে মনোনয়ন চেয়েছিল এবার রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থী। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিল ২০ জন। বিএনপি থেকে ছিল ছয়জন। জাতীয় পার্টি, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ইসলামিক ফ্রন্ট, ন্যশানাল পিপলস পার্টি ও স্বতন্ত্রসহ মেয়র পদে আগ্রহী প্রার্থী ছিল মোট ৩৭ জন। কিন্তু করোনার এই দুঃসময়ে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে মাঠে আছেন মাত্র সাতজন। আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, খোরশেদ আলম সুজন, বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, মেয়র পদে নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম, সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম ও সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম আর বিএনপির ছয় মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে আছেন কেবল ধানের শীষের প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন।
[৩] মেয়র পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী ৮০ শতাংশ নেতাকে এই দুঃসময়ে পাশে না পাওয়ায় অবাক হচ্ছে সাধারণ মানুষ। হতাশ হচ্ছেন বিশিষ্টজনও। জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক সিকান্দার খান বলেন, 'এবার বিভিন্ন দল থেকে যারা মনোনয়ন চেয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই আর্থিকভাবে সচ্ছল ছিলেন। দানের সঙ্গে আয়ের সম্পর্ক আছে এ কথা ঠিক। কিন্তু দানের সঙ্গে আন্তরিকতারও একটা ব্যাপার আছে। সীমিত সামর্থ্য নিয়েও কেউ যদি আন্তরিকতা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান, তবে সেটি অনেক দিন মনে রাখে মানুষ। আসলে মনোনয়নের জন্য কোটি টাকা খরচ করতেও অনেকে রাজি। কিন্তু দানের কথা এলে তারা আবার হা-হুতাশ করেন।'
[৪] মনোনয়নবঞ্চিত হলেও নুরুল ইসলাম বিএসসি ও তার পরিবার নির্বাচনী এলাকায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন। সাবেক মেয়র এম মনজুর আলমও অর্ধলক্ষাধিক মানুষকে ত্রাণ দিয়েছেন। সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম ও তার পরিবারও ৩০ সহস্রাধিক মানুষকে নানাভাবে সহায়তা করেছেন। নগরের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন ব্যাপক মানুষকে ত্রাণ দিতে না পারলেও 'জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই' শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের মাধ্যমে অসহায় মানুষকে নানাভাবে সহায়তা করছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া রেজাউল করিম চৌধুরী নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে ২০ সহস্রাধিক মানুষকে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ত্রাণ দিয়েছেন। তবে এককভাবে সবচেয়ে বেশি ত্রাণ ও সহায়তা দিয়েছেন বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। গত দুই মাসে দেড় লাখ মানুষকে নানাভাবে দেড় কোটি টাকারও বেশি সহায়তা করেছেন তিনি।
[৫] মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছয়জন নেতা থাকলেও অসহায় মানুষের পাশে ব্যাপক হারে আছেন কেবল ডা. শাহাদাত হোসেন। ভোটের মাঠে থাকলেও একইভাবে নীরব এখন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবুল মনজুর, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ওয়াহেদ মুরাদ এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জান্নাতুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী ও তানজির আবেদীন, জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠ, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের এমএ মতিন। এদের অনেকের দাবি, আয় কম থাকায় তাদের দানের পরিমাণ কম। তবে সীমিত সামর্থ্য নিয়ে জনগণের পাশে আছেন তারাও।
[৬] জানতে চাইলে মনোনয়নবঞ্চিত বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, 'গত দুই মাসে আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে প্রায় দেড় লাখ মানুষকে দেড় কোটি টাকারও বেশি ত্রাণ সহায়তা করেছি নানাভাবে।'
[৭]মনোনয়ন পাওয়া নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, 'আল্লাহ আমাকে যে সামর্থ্য দিয়েছেন, তার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে নগরবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছি।'
[৮] বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, 'দুই ধাপে নগরের ৪১ ওয়ার্ডে ২০ হাজার মানুষকে ত্রাণের পাশাপাশি নগদ সহায়তা দিচ্ছি আমি। পেশায় আমি ডাক্তার। তাই অন্যভাবে সেবা দেওয়ার সুযোগ আছে আমার। প্রতিদিন হাজারো মানুষকে দিচ্ছি টেলিমেডিসিন সেবা।'সমকাল, যুগান্তর
আপনার মতামত লিখুন :