রাজু আলাউদ্দিন : [২] করোনা মহামারি মানবজাতির জন্য অভিশাপ হলেও প্রকৃতির জন্য যেন আশীর্বাদ হয়েই এসেছে। লকডাউনের প্রভাবে চট্টগ্রামে সব ধরনের শিল্পকারখানা বন্ধ থাকায় কর্ণফুলী দূষণ অনেকটাই কমে এসেছে। যান চলাচল বন্ধ, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িসহ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকায় বায়ুদূষণও অনেকটা সহনীয় পর্যায়ে।
[৩] দখল আর দূষণে বিপর্যস্ত কর্ণফুলী নদীতে প্রতিদিন চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচ হাজার টন বর্জ্য ফেলা হয়। নদীকে কেন্দ্র করে যে শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে, সেগুলোর বিষাক্ত বর্জ্য এসে পড়ে নদীতে। সেই সাথে জাহাজের ফার্নেস ও পোড়া কালো তেলে প্রতিদিনই দূষণ বাড়ে এ নদীর। তবে করোনা মহামারির কারণে দেড় মাস ধরে সব কল-কারখানা বন্ধ থাকায় কর্ণফুলী দূষণ অনেকটাই কমে এসেছে। সেই সাথে দূষিত কালচে পানি এখন অনেকটাই স্বচ্ছ। আর নদীতে দীর্ঘ সময় পর আবারো দেখা যাচ্ছে ডলফিন।
[৪] নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন সাধারণ সম্পাদক আলিউর রহমান বলেন, কল-কারখানা বন্ধ থাকায় কর্ণফুলী দূষণ অনেকটাই কমে এসেছে। পানি অনেক স্বচ্ছ হয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে অনেক মাছও দেখা যাচ্ছে।
[৫] অন্যদিকে করোনার কারণে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে প্রকৃতিতে। সেই সাথে পরিবহন চলাচল, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িসহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকায় বাতাসে বিষাক্ত ধূলিকণার পরিমাণ কমেছে।
[৬] রসায়নবিদ ড. ইদ্রিস আলী বলেন, ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে প্রকৃতিতে। ভাসমান কণাগুলো এসপিএম ১০ এবং এসপিএম ২.৫। এসপিএম ২.৫ অত্যন্ত ক্ষতিকর একটা কণা। যেটা মানুষের শ্বাসকষ্টের জন্য খুব ভয়াবহ। সেটিও এখন কমে গেছে।
[৭] এ মহামারি থেকে শিক্ষা নিয়ে করোনা পরবর্তী পৃথিবীকে নতুনভাবে সাজানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করলেন পরিবেশবিদ ড. মনজুরুল কিবরিয়া। তিনি বলেন, মহামারি থেকে শিক্ষা নিয়ে যদি পৃথিবীকে নতুনভাবে সাজানো না হয় তাহলে এক সময় মানবসভ্যতাও বিলীন হয়ে যেতে পারে। দূষণের কারণে গত ২০ থেকে ২৫ বছরে কর্ণফুলী নদী থেকে ৩৫ প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে মনে করেন নদী গবেষকরা।
[৮] করোনা মহামারির এ সময় দূষণ কমায় প্রকৃতি তার আপন রূপে সাজতে শুরু করেছে। করোনা মহামারি এক সময় থেমে গিয়ে সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তবে পরিবেশের দূষণ মাত্রাতিরিক্ত কমাতে হলে সবাইকে সচেতন না হওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সময় টিভি
আপনার মতামত লিখুন :