মুসবা তিন্নি : [২] গত বছরের তুলনায় এ বছর রাজশাহীতে লিচুর বাম্পার ফসল ফলন হয়েছে। লিচু চাষীরা বলছেন, সঠিক সময় বৃষ্টিপাত আর শিলা বৃষ্টি না হওয়ার কারনে লিচুর কোন ক্ষতি হয়নি। বরং লিচুর জন্য উপকার হয়েছে। তবে করোভাইরাসের কারনে দেশব্যপি চলছে সরকারী ছুটি। আর জেলায় জেলায় লকডাউন। হাট-বাজার, দোকান পাট বন্ধ। এটাই দুশ্চিতার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে লিচু চাষিদের।
[৩] এদিকে গত তিন বছরে ১৮ হেক্টর জমিতে বেড়েছে লিচুর চাষ। যা প্রতিবছর লিচু চাষ বাড়ছে গড়ে ৬ হেক্টরের বেশি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ অঞ্চলে একাধিক বাণিজ্যিক লিচু বাগান গড়ে উঠেছে। লিচু চাষ করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক।
[৪] তিনি জানান, এবছর রাজশাহী জেলায় ৪৯৮ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষবাদ হয়েছে। গত বছর ৪৯০ হেক্টর জমিতে ও ২০১৮ সালের লিচুর চাষ হয়েছে ৪৮০ হেক্টর জমিতে। যা তিন বছরে বেড়েছে ১৮ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রতি হেক্টর জমিতে সাড়ে ৫ টন লিচু হতে পারে। রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র জানায়, রাজশাহী অঞ্চলে মূলত উনśতমানের জাত হিসেবে পরিচিত বোম্বাই, মাদ্রাজি, কাদমি, মোজাফ্ফরপুরী, বেদানা, কালীবাড়ি, মঙ্গলবাড়ি, চায়না-৩, বারি-১, বারি-২ ও বারি-৩ ও দেশি আঠি জাতের লিচু উৎপাদিত হয়। এসব লিচুর মোট উৎপাদনও বেশি, আবার আকারেও বড়। রঙও মনলোভা। এবার আম-লিচুর ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে। গাছে মুকুল আসার পরে তেমন কোয়াশা ছিলো না।
[৫] জানা গেছে, রাজশাহী নগরীর পবার বিভিন্ন এলাকায়, রায়পাড়া, বুলনপুর, ছোটবনগ্রাম, কাজলা, রুয়েট, রাবি, কাটাখালি, কুখন্ডি, হরিয়ান ও বুধপাড়ায় এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে লিচুর চাষ হচ্ছে। এছাড়া জেলার বাগমারা, দুর্গাপুর, তাহেরপুর, বানেশ্বর, পুঠিয়া, বাঘা ও গোদাগাড়ী উপজেলাতেও চাষ হচ্ছে লিচুর। চাষিরা বলছেন, এবার ঝড়-বৃষ্টি হয়নি। তাই লিচুর ফলন ভালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
[৬] রুয়েটের মিঠু নামের এক চাষি জানিয়েছেন, গত বছর ঝড়ের কারণে গাছের অধিকাংশ লিচু ঝরে গিয়েছিল। এতে অনেকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এবার ঝড় হয়নি। তবে বৃষ্টির প্রয়োজন ছিলো। সঠিক সময়ে বৃষ্টিও হয়েছে। ফলে আম ও লিচুর জন্য উপকার হয়েছে।
[৭] কাজলা এলাকার লিচু চাষি মিন্টু জানায়, শিক্ষা নগরী রাজশাহী। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীদের পদচারতায় মুখরিত হয়ে থাকে এ নগরী। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারনে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ জেলায় অবস্থান করছে। ফলে রাজশাহী নগরী এখন ফাঁকা। সব মিলে লিচুর সঠিক মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, গত বছর ১০ দেশি লিচু ২৫০ টাকা থেকে ৩০০টাকা মূল্যে বিক্রি করেছেন। তবে এবারের দাম বলা মুসকিল বলেও জানান তিনি।
[৮] রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক আরো বলেন, এ বছর লিচু গাছে হালকা আছে। তবে ফলন ভালো হবে। কারণ গাছে হালকা লিচু থাকলে ওজন ও আকারে বড় হয়। তাতে চাষিদের পুষিয়ে যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :