লিহান লিমা: [২]তুরস্কের তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধর্মের রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মানসিকতা জোরদার হচ্ছে। পূর্ববর্তী প্রজন্মের চেয়ে ধর্মকে জীবনাচরণ থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে রাখা ছাড়াও তারা প্রশ্ন তুলছে ইসলামের অনেক রক্ষণশীল বিষয় নিয়ে। দ্য গার্ডিয়ান
[৩]তুরস্কের মারসিনের বাসিন্দা ২২ বছরের এসরা সবচেয়ে বেশি বিরক্ত থাকে রমজানে। এই রমজানে দেশটিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং তরুণ ও বৃদ্ধদের বের হওয়া নিয়ে রাত্রীকালীন কারফিউ আরোপ করা হয়েছে। এসরা তার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পারছে না। তার ওপর পরিবারের আরোপ করা ধর্মীয় বিধি-নিষেধে হাঁপিয়ে উঠছে সে। এসরা বলে, ‘আমি যখন বাড়িতে থাকি না তখন তারা জানে না আমি কি পোশাক পরি কিন্তু এখন বাড়িতে জিন্স পরলে তারা বিরক্ত হয়। নানা মন্তব্য করে। তারা মনে করেছে আমি রোজা রাখছি। কিন্তু আমি নিজের রুমে পানি রেখে দিয়েছি। ’
[৪]তুরস্কের সারকায়া বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সরকার ধর্মানুরাগী প্রজন্মের প্রকল্প হাতে নিলেও শিক্ষার্থীরা বাধ্যতামূলক ধর্মশিক্ষার বিরোধীতা করছে। অর্ধেকের বেশি শিক্ষক সাক্ষাতকারে বলেছেন, তাদের শিক্ষার্থীরা নিজেদের নাস্তিক, নারীবাদী পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে এবং ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়।
[৫]২০১৯ সালের কনদা সংস্থার পুলে দেখা যায়, ১৫ থেকে ২৯ বয়সীরা তাদেরকে বয়স্কদের চাইতে কম রক্ষণশীল ও ধর্মানুরাগী বলে উল্লেখ করেছেন। তারা বলেছেন চুল ঢেকে রাখা, নিয়মিত নামাজ পড়া ও রমজানে রোজা রাখা প্রয়োজন মনে করেন না তারা।
[৬]দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মুস্তাফা কামাল আর্তাতুক পাশা অটোমান শাসনের কঠোর ধর্মীয় শাসন ভেঙ্গে একটি ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জনসম্মুখে ধর্মীয় কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করেছিলেন। তবে একশত বছর পর রিসেপ তায়েপ এরদোগান ক্ষমতায় এসে তুরস্ককে ধর্ম ও রক্ষণশীলতার যুগে ফিরিয়ে নিতে চাইছেন। তিনি একটি ‘ধর্মানুরাগী প্রজন্ম’ তৈরি করতে চাইছেন যারা ‘নতুন সভ্যতার স্থাপন’ করবে। বিরোধী দলের কিছু সদস্য এরদোগানের নাম দিয়েছেন ‘অপেক্ষমাণ খলিফা’। এরদোগান স্থানীয় ধর্মীয় নেতা, ইমাম ও ধর্মীয় কমিটির ক্ষমতা বাড়িয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্মপাঠ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে তরুণরা এটির তোয়াক্কা করছেন না।
আপনার মতামত লিখুন :