মাাহমুদুল আলম : [২]চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন কোয়ার্টারে বা প্রথম ৯ মাসে দেশ থেকে রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৮শ' ৯৭ কোটি মার্কিন ডলার যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে ১৪ শতাংশ কম। এদিকে চলতি ২০১৯ - ২০ অর্থবছরের শেষ কোয়ার্টারের শুরুতেই অর্থাৎ এপ্রিলে দেশের রপ্তানি খাতে ধস নামে। বিশ্বব্যাপী করোনা সংকটের করণে এই ধস। করোনা পরবর্তী সময়েও রপ্তানির ক্ষেত্রে এ ধাক্কা দীর্ঘ মেয়াদে থাকতে পারে বলে মনে করছেন রপ্তানিকারকরা।
[৩] চার হাজার ৫৫০ কোটি মার্কিন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্য নিয়ে শুরু হয় চলতি অর্থবছর। গত বছর জুলাইয়ের পর ৮ মাস ধারাবাহিক ভাবে অর্জিত হয়নি লক্ষ্য। নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারার মধ্যেই গত মার্চে আঘাত হানে করোনা, যার প্রভাবে পোশাকখাতের রপ্তানিতে নামে ধস।
[৪] ডিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, 'এপ্রিলের এ পর্যন্ত নেগেটিভ গ্রোথ হয়েছে ৮৭%। মাত্র ১৩% রপ্তানি হয়েছে। আগামী মাসগুলোতেও এরকম থাকবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। নতুন করে কোন কার্যাদেশ আমাদের হাতে আসছে না। আমরা আরও আশঙ্কা করছি এই কার্যাদেশগুলো আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর কাছে হয়তোবা চলে যাচ্ছে।'
[৫] চীন এবং ইউরোপের অনেক দেশে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এখনই রপ্তানি শুরু হবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। এতে দীর্ঘ মেয়াদে পোশাক রপ্তানিতে আঘাত আসবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি মোকাবেলায় পোশাকখাত ছাড়াও অন্যান্য রপ্তানিখাতে নজর দেয়ার তাগিদ তাদের।
[৬] বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা বলেন, 'প্রথাগতভাবে যেভাবে এক্সপোর্টগুলো করে আসছিলাম ও চিন্তা করছিলাম। আসলে সে জায়গা থেকে আমাদের সরে আসার সময় হয়েছে। এ মূহুর্তে আমাদের এক্সপোর্ট বাস্কেটটা বাড়ানো দরকার। নতুন নতুন পণ্যের বাজারটা খোলা দরকার। বায়ারদের কাছে গিয়ে গিয়ে বাংলাদেশের পণ্য, বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের সক্ষমতা সম্পর্কে জানাতে হবে।'
[৭] অর্থনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেন, ক্ষতি কাটাতে হলে করোনা পরবর্তী সময়ে নতুন করে ভাবতে হবে। রপ্তানির ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নতুন পণ্য নিয়ে সন্ধান করতে হবে বিকল্প বাজার। বিআইডিএস এর সিনিয়র রিসার্স ফেলো নাজনীন আহমেদ জানান, 'বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের যে অর্ডারগুলো ছিলো সেগুলো যেন দেরিতে হলেও তারা সরবরাহ করতে পারেন। আগামী করোনাপরবর্তী সময়ে নতুন নতুন পণ্যের বাজার এক্সপ্লোর করার জন্য এখনই আমাদের প্রস্তুতি থাকতে হবে।'