মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ [২] করোনায় ভয়ে আতঙ্কিত জনজীবন। এমনই সময় মন জুড়ায় মাঠ ভরা সূর্যমুখীর হাসিতে। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে বাম্পার ফলন হয়েছে সূর্যমুখীর। করোনা পরিস্থিতিতে উপজেলার কর্মহীন অসহায় লোকরা ঘরে বসে না থেকে খাদ্য খাট মোকাবিলায়া তাদের পতিত জমিতে করেছে সূর্যমূখীর আবাদ।
[৩] এই চাষের ফলে একদিকে যেমন আয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে পতিত অনাবাদি জমিকে কাজে লাগিয়ে লাভবান হচ্ছেন তারা।
[৪] সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সূর্যমুখী থেকে পাখির খাবারের পাশাপাশি কোলস্টরেলমুক্ত তেল উৎপাদন করে ক্ষতিকর পামওয়েল ও সয়াবিনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রেহাই পাবেন ভোক্তারা। এই ধারণা থেকে চর ও আবাদি জমিতে কৃষিবিভাগ প্রণোদনার মাধ্যমে ব্যাপক জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনতে পারলে পাল্টে যেতে পারে এই এলাকার চেহারা ।
[৫] সূর্যমুখী চাষ শুরুতে কেউ বুঝে উঠতে না পারলেও যখন হলুদ বর্ণের ফুল ফুটাতে শুরু করে, তখন থেকে অনেকে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে, আবার কেউবা সূর্যমুখীর সফল চাষ দেখতে ছুটে আসেন।মাঠে মাঠে সূর্যমুখীর হাসি দেখে মন জুড়ে যায়।
[৬] উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, এবছর উপজেলার মির্জাগঞ্জ চরে,পূর্ব সুবিদখালী দপতের চরে, পশ্চিম সুবিদখালী, কাকড়াবুনিয়া,মজিদবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় মোট ১০ হেক্টর জমিতে কৃষকেরা এস-২৭৫, হাইসান-৩৩ ও বাড়িসূর্যমুখী হাইব্রিড জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন।
[৭] পূর্ব সুবিদখালী গ্রামের কৃষক মো.জলিল হাওলাদার বলেন,এবছই প্রথম ৩৩ শতক জমিতে সূর্যমূখী চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে সূর্যমুখীর এস-২৭৫ (হাইব্রিড) জাতের বীজ ও রাসায়নিক সার বিনামূল্যে সংগ্রহ করেছি। কৃষি বিভাগের পরামর্শে ও সহযোগিতায় সূর্যমুখী চাষ করেছি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সারি করে বীজ রোপন করেছি। তিন মাসের মধ্যে ফুল আসা শুরু হয়েছে। খুব ভালো ফলন হইছে। আশা করি লাভবান হবো।কৃষি অফিস বলছে ন্যায্যমূল্য দিয়ে তারা আমাদের কাছ বীজ সংগ্রহ করবে।৭-৮ দিনের মধ্যেই বীজ সংগ্রহ করা যাবে।
[ ৮] পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামের কৃষক মোঃ রুস্তুম আলী বলেন, সূর্যমুখী চাষে খরচ অল্প এবং পরিশ্রমও কম। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তায় ১ একর জমিতে সূর্যমূখীর আবাদ করছি। কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে সূর্যমুখীর, হাইসান-৩৩ জাতের হাইব্রিড বীজ ও সার সংগ্রহ করছি। ফলন ও খুব ভালো হইছে। প্রতিবছরই সূর্যমুখীর চাষ করবো।
[৯] মির্জাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আরাফাত হোসেন বলেন, এবছর সরকারীভাবে ন্যায্যমূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে সূর্যমুখীর বীজ সংগ্রহ করা হবে।যাতে কৃষকরা লাভবান হয়ে ভবিষ্যতে সূর্যমূখী চাষে উৎসাহী হন। সূর্যমুখীর স্বাভাবিক ফলন বিঘা প্রতি ছয় থেকে দশ মণ, তবে মির্জাগঞ্জ চরাঞ্চলে সূর্যমুখীর ফলন দশ মণের বেশি আশা করছি।
[১০] তিনি আরও বলেন, সূর্যমূখীকে সয়াবিনের বিকল্প তেল হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এতে কোলস্টেরল কম। আশা করা যায়- সূর্যমুখীর চাষ করে এ অঞ্চলের কৃষি উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :