শিরোনাম
◈ হজ ও ওমরার দেশ সৌদি আরব দিন দিন পরিণত হচ্ছে পাপের স্বর্গরাজ্যে, পালিত হচ্ছে হ্যালোইনও ! (ভিডিও) ◈ শতাধিক সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলে নোয়াবের উদ্বেগ ◈ বাংলাদেশ ও জাপানের সঙ্গে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সইয়ের সিদ্ধান্ত ◈ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশকে ১১০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি ও বিশ্বব্যাংক ◈ ট্রেনে ঢিল ছোড়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করল তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা ◈ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হিজবুল্লাহ, বেঁকে বসলেন নেতানিয়াহু ◈ হাইকোর্টের সেই তিন বিচারপতির পদত্যাগ ◈ টিসিবি ট্রাকের মাধ্যমে ৪০ টাকা কেজি আলু বিক্রি করবে ◈ যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় ইউক্রেনের হামলা ◈ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক দুই মন্ত্রীসহ ১০৬ নামে নাশকতার মামলা

প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল, ২০২০, ০১:০৯ রাত
আপডেট : ২৭ এপ্রিল, ২০২০, ০১:০৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রবাসী শ্রমিকরা ফেরার পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে ভাবছে সরকার

বাংলা ট্রিবিউন : করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতি থমকে গেছে। উৎপাদন, ভোগ, চাহিদা, জোগান ব্যবস্থাসহ অর্থনীতির সব উপাদান বর্তমানে অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। ফলে দেশের কর্মক্ষম মানুষ যেমন কষ্টের শিকার হচ্ছেন, তেমনি একইভাবে প্রবাসীরা বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বাংলাদেশিরা বেশি ঝুকিঁর মধ্যে রয়েছে। তেল অর্থনীতি নির্ভর ওইসব দেশ থেকে ফিরে আসার আশঙ্কা রয়েছে কয়েক লাখ বাংলাদেশি। এজন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় যোগাযোগ হচ্ছে এবং প্রবাসীরা ফিরলে তাদের সমাজে আবারও আত্মস্থ করার উপায় ভাবছে সরকার।

রবিবার (২৬ এপ্রিল) মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে এ বিষয়ে ভিডিও কনফারেন্স করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। সোমবার (২৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন ওই রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে ওসব দেশের অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব, শ্রম বাজার পরিস্থিতি, ভবিষ্যতের অবস্থা প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা করবেন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, 'মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো তেল নির্ভর এবং বর্তমানে এই প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম শূন্য এবং ভবিষ্যতের বাজারে (ফিউচার মার্কেট) এটি ঋণাত্মক, এই পরিস্থিতিতে ওসব দেশের অর্থনীতি আগের অবস্থায় নেই।'

অন্যদিকে পর্যটন নির্ভর মালদ্বীপে ১ লাখ ২০ হাজারের মতো বাংলাদেশি কর্মরত আছে এবং সেখানে গত চার মাস ধরে মৎস্য আহরণ ছাড়া অন্য ধরনের অর্থনৈতিক কার্যক্রম নেই এবং চাপ আছে তাদের ফেরত আনার।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, 'পাচঁ লাখের কিছু বেশি জনসংখ্যার মালদ্বীপে পর্যটন ও মৎস্য শিল্প ছাড়া অন্য তেমন কোনও শিল্প নেই। কৃষিপণ্যের প্রায় প্রতিটি তাদের আমদানি করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে লক্ষাধিক বিদেশিকে কোনও কাজ ছাড়া তাদের পক্ষে খাওয়ানো মুশকিল বলে তারা আমাদের জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে আমরা তাদের খাদ্য সহায়তা দিয়েছি এবং সব বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।'

আনডকুমেন্টেড শ্রমিক

মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত বাংলাদেশিদের একটি অংশ 'ফ্রি ভিসা' নিয়ে যায় অর্থাৎ ভিসাতে যে কোম্পানির নাম উল্লেখ থাকে ওই কোম্পানিতে তারা কাজ না করে নিজেদের মতো অন্য কাজ খুঁজে নেয় এবং এই ব্যবস্থাটি অবৈধ। সৌদি আরবে কর্মরত ২০ লক্ষাধিক বাংলাদেশির মধ্যে এর সংখ্যা প্রায় তিন লাখ এবং তাদের প্রায় প্রত্যেকেরই এখন কোনও কাজ নেই।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কূটনীতিক জানান, উপসাগরীয় ছয়টি দেশের অভিবাসন নীতি মোটামুটি একই ধরনের। এখন অর্থনীতি খারাপ হওয়ার কারণে তারা লোক নেওয়া বন্ধ করেছে এবং ওসব দেশে অপ্রয়োজনীয় অভিবাসীদের বিষয়ে তারা একটি অবস্থান নিচ্ছে।

ওমান, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত ও কাতারে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কাজ করছে এবং ওসব দেশে অর্থনীতি খারাপ হওয়ার কারণে একটি বড় অংশ ফেরত আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

সরকারের অবস্থান

বিশ্বের অর্থনীতির খারাপ অবস্থা সম্পর্কে ধারনা আছে সরকারের এবং এর ফলে প্রবাসীদের ওপর প্রভাব নিয়ে ইতোমধ্যে পররাষ্ট্র, প্রবাসী কল্যাণসহ জড়িত অন্যরা চিন্তা শুরু করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, 'এ বিষয়ে একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং আমাদের এ বিষয়ে একটি অবস্থান নিতে হবে।'

পররাষ্ট্র, প্রবাসী কল্যাণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ও জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা নিয়ে ওই কমিটি ফেরত আসা প্রবাসীদের কীভাবে সমাজে আতস্থ করে নেওয়া যায় সেটি নিয়ে কর্মপরিকল্পনা করছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

ইতোমধ্যে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, যারা ফেরত আসবে তাদের সাত লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা করবে তারা এবং এর ফলে দেশের ভেতরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ওসব মানুষ খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে পারবে বলে জানান তিনি।

ডিটেনশন সেন্টার

সাধারণ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন কারণে ডিটেনশন সেন্টারে আটক কয়েক হাজার বাংলাদেশি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে প্রতি মাসে ফেরত আসতো। কিন্তু বর্তমানে বাণিজ্যিক ফ্লাইট স্থগিত থাকার কারণে ওসব দেশে ডিটেনশন সেন্টার পূর্ণ হয়ে গেছে এবং বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর জন্য দেশগুলি দর কষাকষি করছে।

এ বিষয়ে আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, 'বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু থাকলে আটক বাংলাদেশিদের স্বাভাবিকভাবেই ফেরত আনা যেত কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতির কারণে তাদের বিশেষ ফ্লাইটে আনা হচ্ছে।
বাহরাইন, কুয়েত, সৌদি আরবসহ অন্যান্য জায়গা থেকে বাংলাদেশিদের তাদের খরচেই বিশেষ ফ্লাইটে ফেরত পাঠাচ্ছে বলেও তিনি জানান।

ধারনা করা হচ্ছে কুয়েত থেকে প্রায় ৪৫০০, সৌদি আরব থেকে প্রায় ১০০০, জর্ডান থেকে প্রায় ৪০০০, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রায় ৬০০০ এবং ওমান থেকে প্রায় ১৫০০ বাংলাদেশিকে ফেরত আনতে হবে বলেও তিনি জানান।

তিনি বলেন, 'এছাড়া বাহরাইন থেকে আগামী তিন মাসের মধ্যে ১২০০০ শ্রমিক ফেরত আনতে হতে পারে ধারনা করা হচ্ছে।'

জর্ডানে বেশিরভাগ শ্রমিক তৈরি পোশাক শিল্পে কাজ করছে এবং গত ডিসেম্বরে প্রায় ৪০০০ শ্রমিকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং তারা ফেরত আসবে বলেও তিনি জানান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়