মানব কন্ঠ : [২] ভারতের মহারাষ্ট্রের পালঘরের গড়চিঞ্চোলী গ্রামে ছেলেধরা সন্দেহে দুই সাধুসহ ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত শতাধিক মানুষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ১০১ জনকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে ফোন করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
[৩] পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার গভীর রাতে গড়চিঞ্চোলী গ্রাম দিয়ে একটি গাড়ি যাওয়ার সময় সেটিকে নিয়ে গুজব রটে। মুহুর্তে ছড়িয়ে পড়ে গাড়িতে রয়েছে ছেলেধরার দল। এরা ছেলেধরা এবং শিশুদের শরীরে কিডনিসহ অন্যান্য অঙ্গপ্রতঙ্গ পাচার করে। এরপরেই গাড়িতে থাকা ৩ জনের উপর শুরু হয় গণপিটুনি। ২ সাধু ও গাড়ির চালককে বেধড়ক মারধর করে গ্রামবাসীরা। এদের মধ্যে একজন ছিলেন সত্তোরোর্ধ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে তাদেরকেও আক্রমণ করে ক্ষিপ্ত জনতা। পাথর-লাঠি-বাঁশ সব নিয়ে শুরু হয়ে আক্রমণ। ঘটনায় আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীও।
[৪] ওই তিন ব্যক্তি সুরাটে এক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। স্থানীয় কাসা পুলিশ থানায় ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং এর পেছনে প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা হচ্ছে। এ ঘটনায় মৃত তিন ব্যক্তির নাম সুশীলগিরি মহারাজ, নীলেশ তেলগড়ে এবং চিকনে মহারাজ। উন্মত্ত জনতার একাধিক ভাঙচুরের ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ঘোষণা করেছেন, এই ঘটনা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে রাজ্য সরকার। নৃশংস এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কোনো দোষী ব্যক্তি ছাড়া পাবে না।
[৫] এদিকে দুই সাধুকে পিটিয়ে মারার ঘটনার জেরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে ফোন করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কীভাবে এরকম একটা ঘটনা হল পুলিশের সামনে, কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর জবাবদিহি চান অমিত শাহ। রাজ্যের তরফ থেকে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেটি জানান উদ্ধব ঠাকরে।
[৬] ওই ঘটনায় দোষীদের ছেড়ে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ বলেছিলেন এই ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রং দেওয়া উচিত নয়। যারা মারা গিয়েছেন ও যারা আক্রমণ করেছে, তারা একই ধর্মালম্বী বলে তিনি জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :