সমীরণ রায় : [২] বাম জোটের নেতারা এক যুক্ত বিবৃতিতে আরও বলেন, সকালে সীমিত আকারে কারখানা খোলা রাখার কথা বলার পর বিকেলে ‘সারাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা সরকারের বিভিন্ন দফতরের সমন্বয়হীনতা।
[৩] তারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষিত বৈশ্বিক মহামারি করোনা মোকাবেলায় যেখানে দরকার দেশের সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক শক্তি, বিশেষজ্ঞ, ব্যক্তি-গোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করে সমন্বিত জাতীয় উদ্যোগ নেয়া, সেখানে সরকার একদিকে দলীয় সংকীর্ণতা ও একগুঁয়ে মনোভাবের দ্বারা পরিচালিত হয়ে পরিস্থিতি সামলাতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। অন্যদিকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরের সমন্বয়হীনতা ও অস্থিরতার চিত্রও প্রকাশিত হচ্ছে।
[৪] গণভবন থেকে ঢাকা বিভাগীয় বিভিন্ন জেলার প্রশাসনের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, সীমিত আকারে কারখানা চালু রাখা যাবে। আর বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতর সংক্রমণ রোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ অনুযায়ী ঘোষণা করলো ‘সারাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ’। যদি স্বাস্থ্য অধিদফতরের ঘোষণা অনুযায়ী ‘সারাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ’ হয়, তাহলে কারখানা কিভাবে চালু রাখবে?
[৫] আর সরকারের এহেন সমন্বয়হীনতা ও অস্থিরতার সুযোগে স্বার্থান্বেষী মুনাফা লোভী ‘পোশাক কারখানার মালিকদের’ সংগঠন বিজিএমইএ এর সভাপতি রুবানা হক ২৬ এপ্রিলথেকে পোশাক কারখানা চালু রাখতে শ্রমিকদের ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, রংপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকা, সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ শিল্পাঞ্চলে পরিবহনের জন্য বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান বরাবর বাস চেয়ে চিঠি দিয়েছেন এবং তার অনুলিপি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর পাঠিয়েছেন।
[৬] নেতারা আরও বলেন, পোশাক শ্রমিকদের নিয়ে সরকার ও মালিকদের দায়িত্বহীন আচরণের জন্য গত ২৬ মার্চ তারা একবার নানা সমস্যা-সংকট মোকাবেলা করে বাড়ি গিয়েছিলেন, আবার ৫ এপ্রিল কারখানা খুলবে বলে তাদের পরিবহন বন্ধের মধ্যেও ঢাকা, সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ শিল্পাঞ্চলে ফিরতে বাধ্য করা হয়। যাতে করে ওই শ্রমিকদের মাঝে ও সারাদেশে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়েছে। উপরন্তু পোশাক কারখানা মালিকেরা এখন পর্যন্ত সকল শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ না করায় শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
[৭] বাম নেতারা অবিলম্বে পোশাক শ্রমিকদের মার্চ মাসের বকেয়া বেতন দ্রুত পরিশোধ এবং আগামী ৩ মাসের বেতন প্রতি মাসে শ্রমিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেয়া দাবি জানান।
[৮] শুক্রবার গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তারা এসব কথা বলেন।
[৯] বিবৃতিতে একমত পোষণ করেন বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :