বিপ্লব বিশ্বাস, ইন্দুরকানী থেকে : [২] সন্তানের পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী থানা এলাকায় বাজারের প্রাণকেন্দ্রে তিন তলা ভবন। অথচ মা থাকে ভাঙ্গা ঘরে। একটা বিছানাও নেই। ঠিকমত তিন বেলা খাবারও জোটে না বৃদ্ধ এ মায়ের কপালে।
[৩] স্থানীয়রা জানান, বৃদ্ধা মহিলার দুই সন্তান। নজরুল ও সাদিয়া। কিছুদিন আগে বৃদ্ধা মহিলা দুই সন্তানের মধ্যে প্রায় এককোটি টাকার সম্পত্তি বণ্টন করে দেন। বণ্টনের পর থেকে ছেলে নজরুল তার বোনকে জমি বেশি দেয়ার কথা জানিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দিতে থাকে। কিছুদিন যেতেই মায়ের কাছ থেকে পাওয়া জমিতে নজরুল তিনতলা একটি আলিসান ভবন তৈরি করে। পরিবার নিয়ে তিনি সেখানে বসবাস শুরু করেন। জমিজমা বণ্টনে কম দেয়ার অজুহাত দেখিয়ে নজরুল তার মাকে ওই ভবনে বসবাসের স্থান না দিয়ে পুরানো একটি জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করতে বলে।
[৫] এরপর থেকে বৃদ্ধা মা ওই জরাজীর্ণ ঘরেই থাকতে শুরু করে। তিনি যে খাটটিতে ঘুমান তার নিচে ঘুমিয়ে থাকে কয়েকটি কুকুর। ঘরের চারদিকে ময়লা আবর্জনায় ছয়লাব। বৃদ্ধ এ মায়ের নাম সাফিয়া বেগম। বয়স আশি ছুই ছুই।
[৬] দীর্ঘদিন ধরে অনাদরে অবহেলায় রোগাক্রান্ত বয়োবৃদ্ধ সাফিয়া এখন মৃত্যুর প্রহর গুনছেন।
[৫] স্থানীয়দের অভিযোগ, নজরুল তার মায়ের অনেক সম্পদ ভোগ করলেও তার মাকে রাখেন অযত্ম অবহেলায়।
[৬] নজরুলের ইন্দুরকানী থানার প্রবেশ মুখেই রয়েছে ওই তিন তলা আলিশান বাড়ি। বাড়িটির নিচতলায় রয়েছে তার নিজস্ব রেস্তোরা। দ্বিতীয় তলা ভাড়া দিচ্ছেন। আর তিন তলায় তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।
[৭] এ নিয়ে কয়েকবার শালিশ বৈঠক হওয়ার পরেও সমাধান করতে পারেনি কেউ। মায়ের ভার নিতে চায় না কেউ।
[৮] জানা যায়, মা সাফিয়া বেগমের ইন্দুরকানী উপজেলা সদরে প্রায় কোটি টাকার সম্পদ ছিল। কিছুদিন আগে তার দুই সন্তানের মধ্যে সে সম্পদ ভাগ করে দেন তিনি।
[৯] এর পরে মাকে দেখ ভালের জন্যও নিজেদের মধ্যে মাকে দেখাশুনার দায়িত্ব ভাগা ভাগি করে নেন তারা। কিন্তু সম্পদ বণ্টনে সন্তানদের মধ্যে কেউ একটু বেশি ও কেউ কম পাওয়ায় সন্তানদের মধ্যে দন্দ দেখা দেয়।
[১০] এক পর্যায়ে দন্দ্বের জেরে কেউ আর দায়িত্ব নেয়নি বৃদ্ধ মাকে। এরপর সন্তানেরা মায়ের সম্পত্তি ভোগ করে আয়েসি জীবন কাটালেও, মায়ের স্থান হয় খরকুটে আটকানো কুড়ে ঘরে। দিনকাটে অনহারে। আর রাত কাটে মায়ের কুকুরের সাথে।
আপনার মতামত লিখুন :