আবুল বাশার নূরু:[২] মঙ্গলবার সকালে ছায়ানটের বর্ষবরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
[৩] সনজীদা খাতুন বলেন, বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন নিয়তই মানুষে-মানুষে, মানুষে-প্রকৃতিতে অভিনব এক সংযোগ সৃষ্টি করে। নতুন দিনের আশা নিয়ে নববর্ষ ফিরে ফিরে আসে বাঙালির জীবনে। কিন্তু আজ নতুন বছরের বার্তা যেন নতুন আশাকে ধূলিসাৎ করে দিতে চায়। জাতির জীবনে আজ ঘোর দুর্দিন। সমগ্র বিশ্বসমাজ আজ বিধ্বংসী মহামারিতে আক্রান্ত।
[৪] তিনি বলেন, উৎসবের দিন নয় আজ। বিপন্ন মানুষকে উদ্ধার করবার দিন। নিজে নিরাপদ থাকার পাশাপাশি সকলকে নিরাপদ রাখার সময়। এই সর্বব্যাপী বিপদে আক্রান্ত বিরূপ বিশ্বে মানুষ একা হয়ে পড়েছে। আবার সকল বিশ্ববাসী আজ একই সংগ্রামের সহযাত্রী হয়ে মিলেমিশে একাকার।
[৫]তিনি বলেন, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে সভ্যতার যে-সংকট দেখে রবীন্দ্রনাথ শিহরিত হয়েছিলেন, আজকের সংকট তার চেয়েও বহুবিস্তৃত। পৃথিবীর গভীর-গভীরতর অসুখে আমরা এ-ও জানি বিপুল ধ্বংসলীলা আসন্ন হলেও, সেকথাই একমাত্র সত্য নয়। মানবকল্যাণের জন্য আমরা ঐকান্তিক চেষ্টা এবং ঐকান্তিক মিলনের শপথে ঐক্যবদ্ধ হব আজ। মহাবিশ্বের প্রতিটি মানুষ পরস্পর অদৃশ্য ঐক্যসূত্রে বাঁধা। সভ্যতা, মানবতা ও প্রকৃতির নিবিড় মেলবন্ধনে আমরা আস্থা রাখি। কামনা করি বিচ্ছিন্নতা ও বন্দিত্ব পেরিয়ে নতুন উপলব্ধিতে নতুন বিশ্ব গড়বার প্রেরণা সঞ্চারিত হবে সবার মধ্যে, মহা-সংকট বয়ে আনবে মহা-পরিবর্তন, কেননা, মানুষই পারে ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে আলোর পথের অভিযাত্রী হতে।
সবশেষে সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর ঘরে ঘরে যত মানুষ আছে, সবার জন্যে শুভকামনা জানাই আমরা। জয় আমাদের হবেই। সবার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে রবীন্দ্রনাথের সেই কথা ফিরে উচ্চারণ করব আজ– ‘জয় হোক মানুষের, ওই চিরজীবিতের’।
[৬] করোনা ভাইরাসের প্রকোপের কারণে ৫৩ বছরের ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের বছর বাদে সব বছরই রমনা বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতী আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ তবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কায় জনসমাগমের সব আয়োজন নিষিদ্ধ করে সরকার। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'ডিজিটাল' পদ্ধতিতে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান আয়োজনের পরামর্শ দেন।
[৭]প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী, বাংলাদেশ টেলিভিশনের সহযোগিতায় ছায়ানট বিগত বছরের গানগুলো পুনঃপ্রচার করে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। যা বিটিভি, বিটিভির সৌজন্যে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও প্রচারিত হয়।
আপনার মতামত লিখুন :