ইসমাঈল হুসাইন ইমু : [২] করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে রাজধানীর কয়েক হাজার দিনমজুর এবং নিম্ন আয়ের মানুষ বাড়িভাড়া দিতে পারছেন না বলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। ইতোমধ্যে অনেক বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়াদের চাপ দিচ্ছেন ভাড়া দেয়ার জন্য। কিন্তু কোনো কাজ নেই আয়ও নেই এমন মানুষেরা পরিবার নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। এই সংকটকালে তারা বাসা ভাড়া মওকুফের দাবি জানিয়েছেন।
[৩] রাজধানীর শেওড়াপাড়া এলাকায় একটি টিনশেড বাড়িতে মাসিক চার হাজার টাকায় ভাড়া থাকেন আলামিন। তিনি বলেন, আমি মিরপুর শাহআলী মার্কেটের সামনে বিভিন্ন কসমেটিক আইটেম বিক্রি করে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টাকা উপার্জন করতেন। তবে এখন প্রায় ১০ দিন তার কোনো আয় নেই। পরিবারকে সাপোর্ট করা আমার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে কিন্তু বাড়িওয়ালা ভাড়া দেয়ার জন্য চাপ বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কীভাবে ভাড়া দেবেন আর পরিবারের জন্য খাবার কিনবেন তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তিনি।
[৪] ফার্মগেট ফুটপাতে দোকানের পসা সাজাতেন সাজু। আগে থেকেই ফাটপাতের দোকান পাট বন্ধ থাকলেও ছোট পরিসরে চলতো তার দোকান এখন করোনার প্রাদুর্ভাব এড়াতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ি রাজধানীর সকল ফুটপাতের দোকান পাট বন্ধ। এতে চরম বিপদে পড়েছেন ফার্মগেটে এমন কয়েকশ’ দোকানি।
[৫] তেজগাঁও বেগুনবাড়ি, সাতরাস্তা, কুনিপাড়াসহ এই এলাকার বেশকিছু নিন্ম আয়ের লোকের সঙ্গে কথা বলে একই অবস্থার কথা জানা গেছে। তারা বলছেন, স্থানীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে কিছু সহায়তা তারা পেয়েছেন তবে তা অপ্রতুল। বাসায় পরিবারের সদস্যরা রয়েছে। শুধু খাবারই নয় ওষুধপত্র কিনতে হয় তাদের। কোনো কাজ না থাকায় অসহায় অবস্থায় রয়েছেন তারা।
[৬] মধুবাগে মা ও পরিবারের আরও চার সদস্য নিয়ে বস্তিতে বসবাসরত রিকশা-ভ্যান চালক সালাম উপার্জনের অভাবে গুরুতর অগ্নিপরীক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমি আগে যা কিছু অর্থ সঞ্চয় করেছিলাম তা শেষ হয়ে গেছে। বাড়িওয়ালা আমাকে এ সপ্তাহে যেকোনো উপায়ে সাড়ে চার হাজার টাকা ভাড়া দিতে অথবা বাড়ি ছাড়তে বলেছে। কীভাবে এটি পরিশোধ করব তা জানি না।
[৭] করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়ায় অনেক রিকশাচালক, পরিবহন শ্রমিক, দিনমজুর, ফুটপাতের হকার, হোটেল ও রেস্তোরাঁর কর্মী, দোকান ও বাজারের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক এবং অন্যান্য নিম্ন আয়ের লোকেরাও একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন।
আপনার মতামত লিখুন :